Logo

সারাদেশ

হরিশপুরা কামাল হোসেন কলেজ

নতুন কলেজের প্রথম এইচএসসি পরীক্ষায় বাজিমাত

Icon

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৮

নতুন কলেজের প্রথম এইচএসসি পরীক্ষায় বাজিমাত

ছবি : বাংলাদেশের খবর

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শিক্ষাঙ্গনে অনন্য আলো ছড়িয়ে দিয়েছে হরিশপুরা কামাল হোসেন কলেজ। প্রথমবারের মতো কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কলেজটি উপজেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।

নতুন প্রতিষ্ঠিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই সাফল্য নিঃসন্দেহে গৌরবের, অনুপ্রেরণার ও আবেগঘন এক ইতিহাস। হরিশপুরা কামাল হোসেন কলেজ প্রমাণ করেছে—যদি স্বপ্ন থাকে, সেই স্বপ্নকে লালন করার সৎ মানুষ থাকে এবং শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার অদম্য ইচ্ছা থাকে, তবে নতুন পথও হয়ে ওঠে সম্ভাবনার প্রতীক।

২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় কলেজ থেকে ৩৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩২ জন। পাশের হার ৮৮.৮৯ শতাংশ। পুরো উপজেলায় মোট ১২টি এ+ গ্রেডের মধ্যে কলেজ থেকে পেয়েছে একজন শিক্ষার্থী। প্রথমবার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ সাফল্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং পুরো এলাকার মানুষের বুকে আনন্দের ঢেউ বইয়ে দিয়েছে।

কলেজটি ১০১ শতাংশ জমির ওপর বিস্তৃত মনোরম ক্যাম্পাসে অবস্থিত। চারপাশে সবুজ মাঠে ঘেরা পাঁচতলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবনটি ২০২৩ সালের ১০ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক ও অনাবাসিক সুবিধা প্রদান করে।

বরুড়া উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের হরিশপুরা গ্রামের কৃতি সন্তান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও আমেরিকা প্রবাসী কামাল হোসেন পাটোয়ারীর স্বপ্ন ছিল গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার আলো ছড়ানো। তার স্বপ্ন থেকে প্রতিষ্ঠিত হয় হরিশপুরা কামাল হোসেন কলেজ। কলেজের দেখভাল দায়িত্বে রয়েছেন তার বড় ভাই, শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব মমিন পাটোয়ারী।

কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসিন ফাতিমন বলেন, ‘আমাদের কলেজে কেবল বই পড়াই নয়, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বিতর্ক, কবিতা আবৃত্তি, স্পোর্টস সপ্তাহসহ নানা সৃজনশীল কার্যক্রমের সুযোগ আছে। আমরা নিজের প্রতিভা তুলে ধরতে পারি। শিক্ষকরা কেবল ক্লাসে নয়, জীবনের দিকনির্দেশনাতেও পাশে থাকেন।’

দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘এখানে আধুনিক বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, ভাষা ক্লাব, পাঠাগার, অতিরিক্ত ক্লাস এবং মনোযোগী শিক্ষকরা আমাদের যত্ন নিয়ে পড়ান। আমি নিশ্চিত এই কলেজ একদিন পুরো জেলার শিক্ষার মান বদলে দেবে।’

এক শিক্ষার্থী জানান, ‘একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষকদের পরিশ্রম শিক্ষার্থীদের সাফল্যের চাবিকাঠি। হরিশপুরা কামাল হোসেন কলেজ এটি প্রমাণ করেছে। শিক্ষার্থীদের দুর্বল বিষয়গুলোতে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়।’

গ্রামের সচেতন নাগরিক জহির হোসেন বলেন, ‘আমরা কখনো ভাবিনি আমাদের গ্রামে এমন মানসম্পন্ন কলেজ হবে। আজ প্রথমবারেই এমন ফল আমাদের গর্বিত করেছে। এটি শুধু শিক্ষার সাফল্য নয়, পুরো গ্রামের উন্নয়ন ও সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত।’ তিনি বিশেষ ধন্যবাদ জানান আলহাজ্ব কামাল হোসেন পাটোয়ারী ও আলহাজ্ব মমিন পাটোয়ারীকে।

কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ‘এই সাফল্য প্রতিষ্ঠাতা কামাল হোসেন পাটোয়ারী, সভাপতি মমিন পাটোয়ারী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মিলিত প্রয়াসের ফল। আমরা শিক্ষার্থীদের শুধু পরীক্ষার জন্য নয়, মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কলেজে বিনামূল্যে পাঠ, মাসিক বৃত্তি, বিনামূল্যে ড্রেস এবং দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা রয়েছে।’

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর