মোবাইল চুরির অভিযোগে কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটুনি
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:৩৫
বাংলাদেশের খবর
ঢাকার ধামরাইয়ে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে আল আমিন (১৭) নামে এক কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে দলবদ্ধ মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া আদর্শ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পিটুনির শিকার আল আমিন ওই এলাকার সাত্তার আলীর ছেলে। মারধরকারীরা হলেন- একই এলাকার কুদ্দুস, রব, হারুন, আসলাম, শাহ আলম, সাব্বিরসহ আরও অজ্ঞাত ১০-১৫ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার ভোরের দিকে ওই এলাকার কুদ্দুসের বসতবাড়ি থেকে একটি অ্যান্ড্রয়েড মুঠোফোন খোয়া যায়। ফোনটি খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে সন্দেহের বশে আল আমিনকে বাড়িতে গিয়ে মারধর করে নিজের বাড়িতে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে তারা।
একপর্যায়ে বিকেলের দিকে সে মুঠোফোন নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ও সেটি পার্শ্ববর্তী এলাকায় আরেকজনের কাছে বিক্রি করেছে বলে স্বীকার করে। পরে স্থানীয়রা সেই ক্রেতার কাছ থেকে মুঠোফোনটি উদ্ধার করে। সন্ধ্যার দিকে এলাকার গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ওই কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে একদল লোককে তাকে মারধর করতে দেখা যায়।
পিটুনির শিকার আল আমিন জানায়, দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে কুদ্দুস তার বাবা রউফ ও আরও একজন এসে তাকে মোবাইল নেওয়ার বিষয়টি জিজ্ঞেস করে। এক পর্যায়ে কাঠের টুকরা দিয়ে তাকে আঘাত করে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এরপর সেভাবেই তাকে টেনে কুদ্দুসের বাড়িতে নেওয়া হয়।
সেখানে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তাকে সেখানে উপস্থিত লোকজন মারধর করে। বিকেলের দিকে মোবাইলের সন্ধান দেওয়ার পর স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে তাকে তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত ও জখমের চিহ্ন দেখা যায়।
আল আমিন বলে, ‘আমি মোবাইল নিয়েছিলাম। তাই আমাকে নিয়ে মারছে। তারপর মা গিয়ে ছাড়িয়ে আনে।’
আল আমিনের মা রেখা বলেন, ‘আমাকে গতকাল বলছিল মোবাইল নেওয়ার কথা। ওরে জিজ্ঞেস করছি, কিন্তু কিছু বলেনি। আজকে আমি কাজে গেছি, আমার ফোন নেই। কাজ থেকে খবর পাই তাকে আটকে মারছে। তখন এসে এলাকার লোকজন ধরে তাকে ছাড়িয়ে আনি। আমার ছেলে অন্যায় করছে, তাকে পুলিশে দিত, কি অমানবিকভাবে মারছে। আমি বিচার চাই।’
ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) দেবাশীষ সাহা বলেন, ‘ভিডিওটি দেখেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাইফুল ইসলাম শাওন/এনএ

