মুন্সীগঞ্জে সরিষা আবাদে রেকর্ড, হলুদে ছেয়ে গেছে মাঠ
মুন্সীগঞ্জ প্রিতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:২২
ছবি : বাংলাদেশের খবর
মুন্সীগঞ্জ জেলায় চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় মোট চার হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের চার হাজার ৭৯৩ হেক্টরের তুলনায় বেশি। এতে স্পষ্ট যে, আলুর পাশাপাশি সরিষা চাষেও কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলাভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৮০ হেক্টর, টঙ্গীবাড়িতে ২৬৭ হেক্টর, শ্রীনগরে ৫৫০ হেক্টর, সিরাজদিখানে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪১৫ হেক্টর, লৌহজংয়ে ৫০০ হেক্টর এবং গজারিয়ায় ৬৮৮ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
চলতি মৌসুমে বারি সরিষা-১৪, ১৫-সহ উন্নত জাতের বিভিন্ন সরিষার চাষ হয়েছে। বর্তমানে জেলার দিগন্তজোড়া মাঠজুড়ে সরিষার হলুদ ফুলে ভরে উঠেছে। এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন স্থানীয় মানুষ। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে মাঠে ছবি তুলছেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
রবিবার সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের টরকী ও ফুলতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে সরিষা ফুল ফুটেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ ফুল, মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর চারপাশ।
স্থানীয় কৃষক আবদুল খালেক বেপারী বলেন, ‘আগে শুধু আলুর দিকেই ঝোঁক ছিল। এখন সরিষা চাষে খরচ কম, সময়ও কম লাগে। ফলন ভালো হলে লাভও পাওয়া যায়। তাই এবার সরিষার জমি বাড়িয়েছি।’
আরেক কৃষক রহিম মোল্লা জানান, ‘সরিষা চাষ করলে জমির উর্বরতাও বাড়ে। আলু বা বোরোর আগের ফসল হিসেবে এটা আমাদের জন্য লাভজনক। বাজারে দাম ভালো থাকলে কৃষকের মুখে হাসি থাকবে।’
মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. হাবিবুর রহমান জানান, ‘সরিষা একটি স্বল্পমেয়াদি ও লাভজনক তেলজাতীয় ফসল। সরকারিভাবে উন্নত বীজ ও পরামর্শ দেওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। এবার আবাদ বাড়ায় উৎপাদনও ভালো হবে বলে আশা করছি।’
কৃষি বিভাগ বলছে, সরিষা চাষ বাড়লে একদিকে যেমন কৃষকের আয় বাড়বে, অন্যদিকে ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণেও ভূমিকা রাখবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার মুন্সীগঞ্জে সরিষার ভালো ফলন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।
আবু সাঈদ/এআরএস

