Logo

সারাদেশ

কিশোরগঞ্জে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড

Icon

হাওরাঞ্চল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:০৬

কিশোরগঞ্জে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড

তীব্র শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চল। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে এই জেলায়। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে হাওরবাসী, বিশেষ করে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। শীতের তীব্রতায় অনেকেই দৈনন্দিন কাজকর্মে যেতে পারছেন না।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২৮ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিনও শীতের প্রকোপ অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে তাপমাত্রা প্রায় ১০ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আক্তার ফারুক বলেন, ‘২৮ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের নিকলীতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। হাওরাঞ্চলে এখন শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। সামনের মাসজুড়েও এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে।’

হাওরে থমকে গেছে জীবনযাত্রা

চরম শীতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন হাওরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ। নিকলী, ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার হাওর এলাকায় কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণে সকালবেলা কাজে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

নিকলী উপজেলার এক হাওর শ্রমিক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘এত ঠান্ডায় শরীর কাঁপে, পানির মধ্যে নামা যায় না। সকালে কাজে বের হতে পারছি না। কাজ না করলে সংসার চলে না, আবার ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয় আছে।’

ইটনা উপজেলার এক জেলে আকাশ জানান, ‘ভোরে হাওরে নামতেই পারছি না। হাত-পা অবশ হয়ে যায়। জাল ফেলতে কষ্ট হয়, আয়ও কমে গেছে।”

মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার কৃষক ও দিনমজুররাও একই ধরনের কষ্টের কথা জানান। তাদের ভাষ্য, প্রচণ্ড শীতে মাঠের কাজ ব্যাহত হচ্ছে এবং অনেকেই জ্বর-সর্দি ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

শীতবস্ত্রের চাহিদা বাড়ছে

স্থানীয়দের অভিযোগ, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের তুলনায় শীতবস্ত্রের সরবরাহ এখনও পর্যাপ্ত নয়। হাওরাঞ্চলের দুর্গম গ্রামগুলোতে দ্রুত শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সামনে আরও বাড়তে পারে শীত

আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসজুড়ে শীতের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলে রাত ও ভোরের দিকে তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ অবস্থায় দ্রুত সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে হাওরাঞ্চলের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দাবি উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহানা মজুমদার মুক্তি বলেন, ‘টানা দুই দিন নিকলী উপজেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ শীতের কষ্টে সবচেয়ে বেশি ভুগছেন। এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। শীতের তীব্রতা যতদিন অব্যাহত থাকবে, ততদিন এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

মো. হাবিব মিয়া/এনএ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

আবহাওয়া

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর