ডিমলায় তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ, বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:২৪
ছবি : বাংলাদেশের খবর
দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়া সীমান্তবর্তী হলেও হিমালয়ের অপেক্ষাকৃত নিকটে থাকায় নীলফামারীর ডিমলায় শীতের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। এক মাস ধরেই এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। শিশু থেকে বয়স্করা সবাই শীতে বেকায়দায় পড়েছেন।
হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় সন্ধ্যা নামতেই পুরো এলাকা ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায়। এতে বিপাকে পড়েছেন পথচারী ও শ্রমজীবী মানুষ। দিনের বেলায়ও দূরপাল্লার ভারী যানবাহন ও মোটরসাইকেল চালকদের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায়।
ডিমলা আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা এমডি আব্দুস সবুর মিয়া জানান, বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৪ শতাংশ ও দৃশ্যমানতা মাত্র এক কিলোমিটার। আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত একই রকম আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ (৫৮) বলেন, ‘আমরা হিমালয়ের কাছাকাছি থাকায় এখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়ে। পৌষ মাসে ঠাণ্ডা আরও বাড়ে। গরিব মানুষ এই সময় খুব কষ্টে থাকে। সরকারি সাহায্য খুব কমই পাই।’
সদর ইউনিয়নের সহিদুল ইসলাম (৬২) বলেন, ‘এবারের শীতে বাঁচার উপায় নেই। জিনিসপত্রের দাম এত বেশি যে গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই। কেউ যদি একটি কম্বল দিত, তাহলে শীত কাটানো যেত।’
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের ভিড় লেগেই আছে। শিশু হাবিবার (১৮ মাস) মা শিমু আক্তার জানান, ‘হঠাৎ করে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন, গরম কাপড় পরাতে ও ঠাণ্ডা থেকে দূরে রাখতে।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু আল হাজ্জাজ বলেন, ‘শীতজনিত রোগে নবজাতক, শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ইনডোর ও আউটডোর উভয় বিভাগেই রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। প্রতিদিন ৬০০–৭০০ রোগী বহিঃবিভাগে সেবা নিচ্ছেন।’
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আব্দুল আউয়াল জানান, ‘শিশু ওয়ার্ডের প্রায় সব রোগীই ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছেন। গরম পানি, গরম খাবার ও গরম কাপড় ব্যবহারের পাশাপাশি প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছি।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইনডোরের চারটি ওয়ার্ডে বর্তমানে ২৮৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়া বহিঃবিভাগে প্রতিদিন সাতশতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
তৈয়ব আলী সরকার/এআরএস

