বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ–এর মৃত্যুকে ঘিরে নতুন করে তোলপাড় চলছে সারাদেশে। আত্মহত্যা না হত্যা— প্রায় তিন দশক ধরে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তার ভক্তরা। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে অপমৃত্যু মামলা রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়, আর সেই সূত্র ধরেই আবার আলোচনায় উঠে এসেছেন এক সময়ের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গ কর্মী রমেশ, যিনি সালমান শাহর মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন।
বর্তমানে ধর্মান্তরিত হয়ে সেকান্দার নাম গ্রহণ করেছেন রমেশ। সম্প্রতি এক গণমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে তিনি ফিরে দেখেছেন সেই ভয়াবহ দিনটির স্মৃতি।
রমেশ জানান, ‘শুনেছি প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে আবারও লেখালেখি হচ্ছে। আমরা তো অত কিছু বুঝি না, তবে শুনেছি এবার পরিবার হত্যা মামলার অনুমতি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সালমান শাহ তখন লাখো মানুষের প্রিয় নায়ক। আমিও তার ভক্ত ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম, সালমান শাহ মারা গেছেন, লাশ আসছে মর্গে। সেদিন সরকারি ছুটি ছিল, মনে হয় শুক্রবার। পুলিশ মরদেহ নিয়ে এলো ঢাকা মেডিক্যাল মর্গে— আর মর্গের সামনে তখন হাজার হাজার মানুষ। অনেকেই কাঁদছিল, কেউই বিশ্বাস করতে পারছিল না যে সালমান আর নেই।’
স্মৃতিচারণ করে রমেশ বলেন, ‘তখন মর্গ ছিল খুবই পুরোনো, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ছিল না। চিকিৎসকের নির্দেশে আমরা ময়নাতদন্ত শুরু করি। আমার প্রিয় নায়কের বুকেই আমাকে ছুরি চালাতে হয়েছিল— ফরেনসিক ডাক্তারের নির্দেশে যা যা করতে হয়, তাই করেছি।’
৩৫ বছরের চাকরি শেষে এখন অবসর জীবনে আছেন এই প্রাক্তন ডোম। তবু সালমান শাহর মরদেহে হাত দেওয়ার স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি তিনি। বলেন, ‘হাজার হাজার লাশ কেটেছি, কিন্তু সালমানের লাশে হাত দেওয়ার সেই মুহূর্তটা আজও চোখে ভাসে।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনে নিজের বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় সালমান শাহকে। সে সময় এটি আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়, তবে পরিবার শুরু থেকেই দাবি করে এটি পরিকল্পিত হত্যা।
দীর্ঘ ২৯ বছর পর, গত ২০ অক্টোবর আদালত এই মামলা হত্যামামলা হিসেবে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন, যা নতুন করে উসকে দিয়েছে সালমান শাহর মৃত্যুর রহস্য ঘিরে পুরোনো প্রশ্নগুলো।
ডিআর/এসএসকে


