থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্ত এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:২৮
থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়া সীমান্তে সোমবার থেকে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়েছে। খবর বিবিসি’র।
কাম্বোডিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের অন্তত সাতজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিনজন সেনা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন গ্রেনেড লঞ্চারের আঘাতে মারা গেছেন।
দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে। সীমান্তের দুই দিকেই হাজারো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চলে যাচ্ছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত থেকে সংঘর্ষ থাইল্যান্ডের সুরিন, বুরি রাম, সা কাইও এবং ত্রাত প্রদেশ এবং কম্বোডিয়ার বান্তে মিয়ানচে ও পুরসাত প্রদেশে বিস্তৃত হয়েছে।
থাই সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে, কাম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় রকেট লঞ্চার সিস্টেম ও বোমা ফেলতে সক্ষম ড্রোন ব্যবহার করে হামলা করছে। অন্যদিকে কাম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাইল্যান্ড নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে সীমান্তবর্তী পুরসাত প্রদেশের বেসামরিক এলাকায়।
জুলাই মাসে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর এটাই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সংঘর্ষ।
এ যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি হুমকি দিয়েছিলেন- যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনায় অগ্রগতি বন্ধ করে দেবেন। এরপর ট্রাম্প দুই দেশকে তাদের অঙ্গীকার “সম্পূর্ণভাবে সম্মান” করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিহাসাক ফুয়াংকেতকেও বিবিসিকে বলেন, যুদ্ধবিরতি ‘কাজ করছে না’ এবং তিনি কাম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের প্রয়োজন ‘কাগুজে শান্তি নয়, প্রকৃত শান্তি’।
সিহাসাক বলেন, কাম্বোডিয়া তাদের আচরণ না বদলালে কূটনীতির সুযোগ খুবই সীমিত, ‘এখন বল কাম্বোডিয়ার কোর্টে— তাদের দায়িত্ব নিতে হবে, জবাবদিহি করতে হবে, তারপর আমরা এগোতে পারব’।
দুই দেশের মধ্যে এ বিরোধ এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে, যখন ফরাসিরা কম্বোডিয়া দখল করার পর দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
২০০৮ সালে কম্বোডিয়া যখন বিতর্কিত এলাকায় একাদশ শতাব্দীর একটি মন্দিরকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে নিবন্ধিত করার চেষ্টা করে, তখন থাইল্যান্ড থেকে তীব্র প্রতিবাদের মুখোমুখি হয়।
পরবর্তী কয়েক বছর ধরে, এ উত্তেজনা সীমান্তে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে রূপ নেয়, যার ফলে উভয় পক্ষের সৈন্য নিহত ও আহত হয়।
এ সপ্তাহের সংঘর্ষের আগে জুলাই মাসে সীমান্ত সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সৈন্যের মৃত্যুর পর তীব্র লড়াইয়ে ৪০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল।
এমবি

