• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে পথশিশুদের

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে পথশিশুদের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল ২০২১

কেউ হয়তো কাগজ কুড়োয়; কেউবা ট্রাফিক সিগন্যাল, রেলস্টেশন, ঘাটে বিক্রি করে বেলুন, কলম, পানি কিংবা অন্যান্য টুকিটাকি জিনিস। রাত কাটে পথে পথেই। করোনার কারণে এসব পথশিশুর জীবনেও নেমে এসেছে বিপর্যয়। এদের অনেকেরই অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে। দৈনন্দিন কিছু শুকনা খাবারের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে এনজিও বা সাহায্য সংস্থার ওপর। এ সময় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে পথশিশুদের আরো অনেক শিশু রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে। যাদের বাবা-মায়ের এখন কাজ নেই, তারা ঘর থেকে খাবারের জন্য বের হচ্ছে। আবার যে শিশুরা আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করত তাদেরও কাজ নেই। তারাও এখন পথশিশু।

গুলিস্তান ওসমানী উদ্যানে কথা হয় কয়েকজন পথশিশুর সঙ্গে। টুটুলকে জিজ্ঞেস করা হলো- দুপুরে খাইছ, উত্তর : না। খাবার না পেলে কী করো, উত্তর : ঘুমিয়ে থাকি। এভাবেই কাটছে পথশিশুদের দিন, ক্ষুধার কষ্ট গিলে খাচ্ছে তাদের। ঘুম ছাড়া উপায়ই-বা কি তাদের। কঠোর লকডাউনের জীবনে বেঁচে থাকাটাই যে এখন বড্ড দায়। হাত পেতে কিংবা চেয়ে চিন্তে যদি কিছু মেলে তাতেই তৃপ্তির ঢেকুর এদের।

করোনার নিদারুণ কশাঘাতে সাগরের দুঃখের ঢেউ-ও খুঁজে পাচ্ছে না কূল। ছিন্ন হয়েছে সম্পর্কের সুতো। আগের মতো মিলছে না কাজও, কেউ দিলে খায়, না দিলে উপোসই সই এসব পথশিশুর। রাজধানীর কমলাপুর, সদরঘাট, গাবতলী কিংবা গুলিস্তান এমনসব জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা পথশিশুদের রোজকারের গল্পগুলো লকডাউনের লকে বন্দি। এমন বয়সে হয়তো এমনটি হওয়ার কথা ছিল না, যদিও পথের গল্পে, পথটা গেছে বেঁকে। সবকিছুর পরেও দ্রুত এমন পরিস্থিতি কেটে যাবে বলে আশায় আছে এরা। 

ঢাকায় পথশিশুদের মাত্র দুটি সরকারি শেল্টার হোম আছে। তাতে সব মিলিয়ে তিনশ শিশু থাকতে পারে। আর বেসরকারি উদ্যোগে কিছু শেল্টার হোম আছে, যেখানে পথশিশুরা রাতে থাকতে পারে। কোনো খাবার দেওয়া হয় না। এর বাইরে আহসানিয়া মিশনের উদ্যোগে পঞ্চগড়ে ‘আহসানিয়া মিশন শিশুনগরী’ পথশিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয় কেন্দ্র। সেখানে ২৫০ জন শিশু থাকে। তাদের খাবার, শিক্ষা, চিকিৎসা সবকিছুই দেওয়া হয় বলে জানায় আহসানিয়া মিশন। এটি জার্মানির কিন্ডারনটহিল্ফে’র সহায়তায় পরিচালিত হয়।

কিন্তু সব মিলিয়ে কয়েকশ শিশুর জন্য কয়েকটি শেল্টার হোম থাকলেও বাংলাদেশে পথশিশু আছে ১৩ লাখ। ঢাকায়ই আছে সাড়ে চার লাখ। এই শিশুরা করোনার মধ্যেও পথেই থাকছে। দলবদ্ধভাবে থাকছে। খোলা রাস্তা, বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন বা খোলা জায়গায় ঘুমাচ্ছে। কেউ করোনায় আক্রান্ত হলেও বুঝতে পারছে না। চিকিৎসা তো অনেক পরের কথা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads