• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
শোকের মাতম মিমের পরিবারে

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

শোকের মাতম মিমের পরিবারে

  • খুলনা ব্যুরো
  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০২১

মাদারীপুরে পদ্মায় দুই নৌযানের সংঘর্ষে মা-বাবা ও দুই বোনকে হারানো মিমের পরিবারে এখন শুধুই শোকের মাতম। গতকাল সকালে খুলনার তেরখাদা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারোখালী গ্রামে মিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাবা-মা ও ছোট দুই বোন হারিয়ে বাকরুদ্ধ মিম শুধু ফ্যালফ্যাল করে সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছে।

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীতে সোমবার সকালে একটি বাল্কহেডের সঙ্গে একটি স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়। এ সময় স্পিডবোটটি ডুবে যায়। পরে ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান খুলনার তেরখাদা উপজেলার সদর ইউনিয়ানের পারোখালী গ্রামের মনির হোসেন শিকদার, তার স্ত্রী হেনা বেগম এবং দুই মেয়ে সুমি খাতুন (৭) ও ছোট মেয়ে রুমি খাতুন (৪)। ওই পরিবারে এখন বেঁচে আছে শুধু মিম (৯)। দুর্ঘটনার পর তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। প্রথমে আহত অবস্থায় তাকে শিবচরের পাচ্চর রয়েল হাসপাতালে নেওয়া হয়। একটু সুস্থ হলে দোতরা স্কুলের মাঠে আনা হয় মিমকে। মা, বাবা, দুই বোন নেই জেনে তার কান্না থামছিল না। এ সময় মিম ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। নদীতে সে একটি ব্যাগ ধরে ভাসছিল বলে জানায়। সে বলে, ‘দাদিকে শেষবারের মতো দেখার জন্য আমরা সবাই দাদাবাড়ি আসছিলাম। কিন্তু এখন বাবা-মা ও বোনেরা কেউ বেঁচে নেই; আমি একা হয়ে গেলাম।’

সোমবার লাশের সারি থেকে মনির, হেনা, সুমি ও রুমির লাশ শনাক্ত করে মিম। পরে ওইদিনই তাদের লাশ শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সোমবারই নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়।

গতকাল সকাল ৯টায় পারোখালী মাঠে মনির, হেনা, সুমী ও রুমীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মনিরের মা লাইলী বেগমের কবরের পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। জানাজায় সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। এ সময় শোকাবহ পরিস্থির সৃষ্টি হয়। জানাজায় নামাজ শেষে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি যেন জানান দিচ্ছিল প্রকৃতিও শোকাহত!

মনির হোসেনের ছোট ভাই মো. কামরুজ্জামান জানান, চার ভাইবোনের মধ্যে মনির ছিল তৃতীয়। ঢাকার মিরপুর-১১ মসজিদ মার্কেটে কাটা কাপড়ের দোকান ছিল তার। তিনি থাকতেনও ওই এলাকায়। তিনি বলেন, মনির মাকে শেষবারের মতো দেখতে বাড়ি আসছিল। কিন্তু মাকে আর দেখা হলো না, নিজেই পরিবারকে নিয়ে মায়ের সঙ্গেই চলে গেল। মার কবর দেওয়া হয়েছে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায়। আর আজ কবর দিলাম ভাই-ভাবি, ভাইঝিদের।’

মনির শিকদারের বেয়াই কিসমত হাওলাদার বলেন, ‘পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে সুখের সংসার ছিল মনিররের। কী থেকে কী হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। এখন বাবা-মাহীন ছোট মিমের কী হবে?’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads