• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
আইসিইউতে বেড ফাঁকা নাই

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

মহানগর

আইসিইউতে বেড ফাঁকা নাই

  • রফিকুল ইসলাম রফিক, রংপুর
  • প্রকাশিত ০৩ জুলাই ২০২১

গত কয়েকদিন ধরে রংপুর বিভাগে প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত রংপুর বিভাগে ৫৩৭ জনের মৃত্যু আর আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ১৬০-তে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় প্রতিদিনই আইসিইউর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। রোগীর স্বজনরা আইসিইউ না পেয়ে ছোটাছুটি করেও আইসিইউ না পেয়ে মৃত্যুর বিষয়টি ছেড়ে দিচ্ছেন নিয়তির ওপর। গতকাল সকালে রংপুর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের সামনে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে সাইনবোর্ড। তাতে লেখা হয়েছে ‘ আইসিইউতে কোনো বেড ফাঁকা নাই’।

বর্তমানে ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেড থাকলেও ভেন্টিলেটর সুবিধাসহ ৮টি আইসিইউ বেড রয়েছে। সেখানে রোগী ভর্তি আছেন ৮৩ জন। এর মধ্যে কমপক্ষে আরো ২০ জনের আইসিইউ প্রয়োজন। অন্যদিকে,  রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র ২০টি।

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি অংশ করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ১৮টি আইসিইউ বেড দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে আরো ৩০ বেড বৃদ্ধি করার কথা থাকলেও তা হয়নি। সব মিলে দিনাজপুরে আইসিইউ বেড সুবিধা রয়েছে ১৮টি। সেখানে প্রতিদিন আইসিইউ বেডের জন্য হাহার করছেন রোগীর স্বজনরা। 

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিভাগে সবথেকে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে দিনাজপুরে। আর দ্বিতীয় অবস্থায় রংপুর, আর তৃতীয় অবস্থান ঠাকুরগাঁও জেলার। কিন্তু বিভাগের আট জেলা জুড়ে মাত্র আইসিইউর সংখ্যা রয়েছে মাত্র ৪৮টি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রংপুরের করোনার চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত ‘করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালটি’ গেল বছরের এপ্রিলে ৫০টি আইসিইউ বেড স্থাপনের বরাদ্দ দেন স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু করোনার এই সংকটকালে মাত্র দশটিই আইসিইউ বেড রয়েছে। আরো ১০টি বাড়ানোর কথা থাকলেও আর বাড়েনি। 

অন্যদিকে, দিনাজুপর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি অংশ করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল করা হয়েছে। একশ বেডের এই হাসপাতালটিতে ৮টি আইসিইউ বেড রয়েছে। পুরো হাসপাতালে রয়েছে ১৮টি।

রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা সদর হাসপাতালে এখন পর্যন্ত কোনো আইসিইউ বেড স্থাপনের কোন পরিকল্পনা করা হয়নি। এই জেলাগুলোর মুমূর্ষু রোগীদের ভরসা এখন রংপুর আর দিনাজপুর হাসপাতালে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই বিভাগে এখন সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সংক্রমণের হার ৪০ শতাংশের উপরে। গত ২৪ ঘন্টায় বিভাগে মারা গেছেন ৮ জন। এর মধ্যে পঞ্চগড়ে ১, লালমনিরহাটে ১ জন, ঠাকুরগাঁও ২ ও দিনাজপুরে ৪ জন। আর গতকাল পর্যন্ত বিভাগে মারা গেছেন ৫৩৭ জন। বিভাগে গত ২৪ ঘন্টায় ৭১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ১৬০ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২০ হাজার ২০৩ জন।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, রংপুর বিভাগের আটজেলায় বিশেষায়িত ১২টি হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৫০৬টি বেড রয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবু মোহাম্মদ জাকিরুল ইসলাম বলেন, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। অনেক আক্রান্ত রোগী হাসপাতালগুলোতে আসছেন। কিন্তু আইসিইউ বেডের সংকটের কারণে কোথাও কোথাও চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads