বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্রে 'আইস' আতঙ্কে অনেক বাংলাদেশি

রাত কাটছে পার্কে, গাড়ি ও স্বজনদের বাড়িতে


রবিবার বেলা সোয়া ১২টা। আমার মোবাইল ফোনে একটি টেলিফোন আসে   যুক্তরাষ্ট্রের টি-মোবাইল নম্বর থেকে। ফোনটি রিসিভ করার পর ওই প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি জানতে চান, একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলা যাবে কি না? সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তিনি জানতে চাইলেন, ইমিগ্রেশনের সর্বশেষ কি অবস্থা? পত্রিকা পড়ার পরামর্শ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কান্না জড়িতকন্ঠে তিনি বলেন, ‘ভাই পত্রিকার খবর নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি না। বেশ ক‘দিন ধরে বাসা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। গত রাতে বন্ধুর গাড়ীতে ঘুমিয়েছি। দুই রাতে আগেই আমার এস্টোরিয়ার বাসায় আইস অভিযান চালিয়েছে।’

কেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে নিউইয়র্কে অবস্থান করছি। একসময় ‘সিএসএস লুলা’য় মামলা করেছিলাম। সময় গড়িয়ে আমার ওপর বহিস্কার আদেশ এখন। একমাত্র মেয়ে স্কুল গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছে। এ অবস্থায় আমি গ্রেফতার হলেই সোজা দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই প্রবাসী বলেন, আমি বাংলাদেশে থাকাকালীন সময় ছাত্র রাজনীতি করতাম। আমাকে সবাই চেনেন। কোন মুখ নিয়ে এখন আমি দেশে ফিরব জানি না। 


তিনি আরো বলেন, আমি নই শুধু, নিউইয়র্কে অনেকেই আছেন, মাঝরাত পর্যন্ত ম্যানহাটানের সেন্টাল পার্কে থাকেন। ভোর হলেই বাসায় ফিরেন। গাড়ীতে ঘুমান।


তাহলে গ্রেফতার এড়ানো সম্ভব কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমরা যতদূর জানি, অভিযান চলে মধ্যরাত থেকে ভোর রাত পর্যন্ত। এ সময়টুকু পালিয়ে থাকতে পারলেই বেঁচে যাই।'


ওই ব্যক্তির মতো আরো একজন আছেন যিনি বেশ ক‘দিন আত্মগোপনে থাকার পর দেশে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে কোনো ধরনের তথ্য দিতে অপারগতা জানান।

পরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিউইয়র্কে এতদিন কাগজপত্রহীন ছিলাম। কেউ একবারের জন্যও জানতে চায়নি। আমি ম্যানহাটানের স্টোরগুলোতে কাজ করতাম। গেল মাসে সেভেন ইলেভেনশহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানোর পর এখন কেউ কাজ দিতে চাইছে না। আতঙ্কে রাত কাটে, দিনে চাকুরি খোঁজার যন্ত্রণা। সবমিলে খুই সমস্যায় আছেন বলে যোগ করেন ওই প্রবাসী। এত সমস্যার মধ্যেও কেন দেশে চলে আসছে না- এমন প্রশ্নে ওই প্রবাসী বলেন, প্রায় ১৫ বছর এখানে আছি। রোজগার করে পরিবারকে স্বচ্ছল করেছি। এখন দেশে এসে কিছু করার মতো অর্থও নেই।


তিনি বলেন, আমি এখন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছি। তবে কতদিন এভাবে কাটানো যাবে- পাল্টা প্রশ্ন করেন ওই প্রবাসী।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইস অভিযান জোরদার হওয়ায় অনেকে বিপাকে আছেন। কেউ কেউ দৌঁড়াচ্ছেন আইনজীবিদের কাছে। কিন্তু সমস্যাগুলো সমাধানের মতো পথও খুঁজে পাচ্ছেন না।


যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি এটর্নি মঈন চৌধুরী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসনের দেশ। এখানে প্রবাসীদের অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু পালিয়ে বেড়ানো সমাধান না। আইনজীবিদের পরামর্শ নিলে সমাধান তো হতে পারে।'


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১