বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২১ জুন ২০১৮

উৎস বন্ধের তাগিদ

শুধু অভিযানে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়

মাদকের উৎস বন্ধে সরকারকে আরো কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। ছবি সংরক্ষিত


রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যেও বেশি দামে মিলছে ইয়াবা। বন্দুকযুদ্ধ, ব্যাপক গ্রেফতারেও মাদক থেকে পরিত্রাণ মিলছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু অভিযানে মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। মাদকের উৎস বন্ধে সরকারকে আরো কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ তাদের।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অভিযান শুরুর আগে যে ইয়াবা বড়ি পাওয়া যেত ২শ’ টাকায় সেটা এখন মিলছে ৪ থেকে ৫শ’ টাকায়।

তথ্যমতে, রাজধানীর নবাবপুর, কাপ্তানবাজার, ধোলাইরখাল, আগামসি লেন, বকশিবাজার, ইসলামবাগ, আমলীগোলা, হাজারীবাগ, গোয়ালঘাট লেন, বাসাবাড়ী লেন, ফকিরের পুল, ব্যারাইদ, গুলশান, নিউপল্টন ইরাকি মাঠ, কমলাপুর, শাজাহানপুর, ভাসানটেক, মাটিকাটা বস্তি, মিরপুর গুদারাঘাট, আমিনবাজার, উত্তরা, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, রাজফুলবাড়িয়া, কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, কদমতলী, ডেমরাসহ কমপক্ষে ২ শতাধিক স্পটে অবাধ বিচরণ ছিল ইয়াবা কারবারিদের। এখন পাওয়া যাচ্ছে অর্ধশত স্পটে। অভিযানের মুখে বেচাকেনায় কারবারিরা বেশ সতর্ক। সহজে না পাওয়ায় আসক্তরাও ঝুঁকছেন মদ-বিয়ারসহ অন্য নেশার দিকে। কিছুসংখ্যক আসক্ত ব্যক্তি সহজলভ্য না হওয়ায় নেশা আপাতত বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু অতি আসক্তরা নেশার এ সামগ্রী সংগ্রহে ছুটছেন এ স্পট থেকে স্পটে। বেশি দামে এই মাদক জোগাড় করছেন। সুযোগের উত্তম ব্যবহার করছেন কারবারিরাও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইয়াবা সেবন অভ্যস্ত পুরানঢাকার মৌলভীবাজারের এক ব্যবসায়ী এ প্রতিবেদককে বলেন, ভাই ব্যবসা-বাণিজ্য করে খাই। একটু ফিলিংসের জন্য ইয়াবা সেবন করতাম। এখন দেখি খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। দরকার নেই ভাই। তাই এখন বারে গিয়ে মদপান করি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঝামেলা নেই।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, মনে হয় না শহরের কোথাও ইয়াবা পাওয়া যায়। নগরীর ৫০ থানা এলাকায় কঠোর নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ কাজ করছে। তিনি বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে রাজধানী ঢাকায় কয়েকজন চিহ্নিত মাদক কারবারে নিহত হয়েছে। কমিশনারের ভাষায়, মাদক কারবারিরা আত্মগোপনে চলে গেছে।

অন্যদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী গতকাল বাংলাদেশের খবরকে বলেন, লাভ কি এসব অভিযানের? এতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে। কিন্তু চিরতরে বন্ধ হবে না। কারণ চাহিদা আছে, লাভ আছে ব্যবসায়ীর। অভিযান আজীবন পরিচালনা করা যাবে না। সুতরাং অভিযান বন্ধ হলে ফের কিছুদিনের মধ্যে আবার মাদকে সয়লাব হবে দেশ। তিনি বলেন, হ্যাঁ চলমান অভিযানের পাশাপাশি মাদকের উৎস বন্ধে যদি পদক্ষেপ নেওয়া যেত তাহলে সেটা হতো কার্যকর। প্রয়োজনে সীমান্ত সিল করে ইয়াবা আসা বন্ধ করতে হবে। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব কোস্টগার্ড যদি চায় তারা এই মরণ নেশা বাংলাদেশে ঢুকতে দেবে না। তাহলে অনেকটা সম্ভব। কিন্তু তাতো হচ্ছে না। দায়িত্বপ্রাপ্তদের কেউ কেউ এ পাচারের সঙ্গে যুক্ত। আগে এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি সম্ভব হয় কেবল তাহলেই তরুণ ও যুবসমাজকে ইয়াবার বিষাক্ত ছোবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১