বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০১৮

দেখা হবে কাতারে

পাঁচ বছর আগেই প্রস্তুত কাতার ছবি : ইন্টারনেট


ভাঙল মিলনমেলা। বিশ্বকাপের বিদায়ে রাশিয়ার মস্কোর আকাশে বাতাসে বইছে বিষাদের সুর। সব সমাপ্তির মধ্যে লুকিয়ে থাকে নতুনের আগমনের আনন্দ। সেই আনন্দের আবহ শুরু হয়েছে কাতারের উষ্ণময় মরুর বুকে। চার বছর পর ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে প্রস্তুত মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। কাতারের উষ্ণ আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে গ্রীষ্মকালের পরিবর্তে শীতকালে হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। ফিফা সময়সূচি অনুযায়ী ২০২২ সালের বিশ্বকাপ হবে ২৮ দিনের। ২১ নভেম্বর শুরু হয়ে টুর্নামেন্ট শেষ হবে ১৮ ডিসেম্বর। আর কাতারে হতে যাচ্ছে সবশেষ ৩২ দলের বিশ্বকাপ। কারণ, ফিফা আগেই জানিয়েছে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ থেকে দলসংখ্যা হবে ৪৮।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে জুরিখে ২০২২ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে কাতারের নাম ঘোষণা করে ফিফা। ফলে প্রথম আরব দেশ হিসেবে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরের আয়োজক হওয়ার গৌরব অর্জন করে দেশটি। এরপর থেকে শুরু হয় বিতর্ক এবং সমালোচনা। ফিফার সাবেক প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটার অনড় ছিলেন কাতারের স্বাগতিক হওয়ার সিদ্ধান্তে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও আছেন একইভাবে অনড় অবস্থানে।

সমালোচকদের সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল জুন-জুলাইয়ে কাতারের উত্তপ্ত আবহাওয়া। কিন্তু সেটা সমাধান করেন কাতার ফুটবল কর্তারা। এজন্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দলটি। বিশ্বকাপের জন্য মোট ১২টি স্টেডিয়াম তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিটি স্টেডিয়ামে থাকবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। যার তাপমাত্রা থাকবে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। এজন্য জার্মানির স্থাপত্য কোম্পানি এএসএন্ডপি এই স্টেডিয়ামগুলোর ডিজাইন করেছে। আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা হবে কাতারের প্রখর সূর্যের তাপকেই। সৌরবিদ্যুৎ কাজে লাগাবে কাতার। শুধু স্টেডিয়াম নয়, অনুশীলন মাঠেও থাকবে একই ব্যবস্থা।

সৌরশক্তির সাহায্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও আরেকটি পরিকল্পনার কথা বলেছে জার্মান কোম্পানিটি। স্টেডিয়ামের জন্য এমন ছাদ বানানো হবে, যেটা যখন-তখন সরিয়ে ফেলা যাবে। ফলে ভেতরের তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকবে। আর ফিফা অনুমতি দিলে খেলার সময়ও ছাদ দিয়ে ঢাকা থাকতে পারে স্টেডিয়াম।

স্টেডিয়ামের ওপর কৃত্রিম মেঘ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে কাতার। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। বিষয়টা হচ্ছে বিশাল আকৃতির একটি বস্তু এমনভাবে স্টেডিয়ামের ওপর স্থাপন করা হবে যেটা সূর্যের আলো মাঠ পর্যন্ত পৌঁছতে দেবে না। এই বস্তুটিকে বলা হচ্ছে ‘আর্টিফিসিয়াল ক্লাউডস’, মানে কৃত্রিমভাবে তৈরি মেঘ। যার আকার হবে অনেকটা জেট বিমানের মতো। তার ওপর থাকবে কার্বন ফাইবার আর সৌর প্যানেল। রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে চলবে এটি। এতে থাকবে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা, যেটা সূর্যের গতিবিধি লক্ষ রাখবে। ফলে সূর্য যখন যেদিক থেকে তাপ ফেলবে বস্তুটি ঠিক সেখানে গিয়েই দাঁড়িয়ে যাবে। যাতে তাপ মাঠ পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে। এভাবে মাঠের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা প্রায় চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমানো যাবে বলে আশা করছে কাতার।

এভাবে একের পর এক অত্যাধুনিক পরিকল্পনা নিয়ে কাতার এগিয়ে চলছে বিশ্বকে একটা সেরা বিশ্বকাপ উপহার দিতে। সফলভাবে সেটা করে তারা চাইছে সেই সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে। তবে এর জন্য অপেক্ষা আরো চার বছরের! আর আজ থেকে শুরু হলো এর ক্ষণগণনা।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১