বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০১৮

কর্নেল জামিল তনয়া আফরোজা

বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে বাবা ছোটেন ৩২ নম্বরে

মাকে বলে যান আমার মেয়েদের দেখে রেখো

আফরোজা জামিল সংগৃহীত ছবি


বাবার কথা মনে হলে গর্ব হয়। মাথা নত হয়ে আসে শ্রদ্ধায়। সেই ১৫ আগস্ট ভোরে বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হয়েছেন জেনে বাড়ি থেকে বের হন। মাকে বলে গেলেন আমার মেয়েদের দেখে রেখো। সেই যে গেলেন বাবা, আর ফেরেননি।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের খবরের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় কর্নেল জামিলের (ব্রিগেডিয়ার হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এবং বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত) মেয়ে আফরোজা জামিল এসব কথা বলেন। কর্নেল জামিল শুধু বঙ্গবন্ধুর জন্যই প্রাণ হারাননি, অসামান্য অবদান রেখেছেন মুক্তিযুদ্ধেও। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতেন অন্তরের অন্তস্থল থেকে। স্বামীর অকাল এ মৃত্যুর পর স্ত্রী আনজুমান আরা জামিল চার মেয়েকে মানুষ করেছেন। মেয়েদের দ্বিতীয় আফরোজা জামিল। এখন ঢাকাতেই তার বসবাস। কাজ করেন চিত্রশিল্পী হিসেবে। এছাড়া অ্যাসিড সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে রোধ, শিশু অধিকার এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করেন।

চার বোনের বড় তাহমিনা এনায়েত। তৃতীয় ফাহমিদা আহমেদ। সবার ছোট কারিশমা জামিল। কারিশমা জামিল তার বাবার মৃত্যুর পর জন্ম নেয়।

আফরোজা জামিল এ প্রতিবেদককে বলেন, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে বাবা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মা কিছু একটা বলছিলেন। বাবা এ সময় কিছুটা বিরক্তবোধ করে মাকে উত্তর দেন, বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হয়েছেন আর আমি ঘরে বসে থাকব। এরপর মা আর কোনো কথা বলেননি। এরপর বাবা এক গ্লাস পানি খেয়ে গাড়িতে উঠে বসেন। মাকে উদ্দেশ করে শুধু বলেন, আমার মেয়েদের দেখে রেখো। সেই যে গেলেন বাবা, তারপর আর ফিরে পাইনি। আপনারা সবই জানেন।

এক প্রশ্নের জবাবে আফরোজা জামিল আরো বলেন, ২০১২ সালে মা মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাবার কথাই বলতেন। বঙ্গবন্ধুর কথা বলতেন। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে বাবার মতো মা-ও ভালোবাসতেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের খোঁজখবর রাখেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কুষ্টিয়া থেকে মাকে এমপি হিসেবে মনোনীত করেন। এছাড়া ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদা কার্যকর ও বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত করেন।

তিনি বলেন, আমি এমন বাবার সন্তান- এ পরিচয় নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই। বাবা জাতীয় বীর। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন, এর চেয়ে গর্ব করার আর কী হতে পারে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের বিচার করেছে। ফাঁসির দুই আসামির একজন কানাডায়, একজন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। এদের এনে দণ্ড কার্যকর করতে পারলে আরো ভালো লাগত।

যেভাবে নিহত হন জামিল

ব্রিগেডিয়ার জামিল উদ্দিন আহমেদ মূলত কর্নেল জামিল নামেই পরিচিত। মুক্তিযোদ্ধা বীরউত্তম জামিল উদ্দিন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেহরক্ষীর প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১