আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০১৮
সাধারণত দেখা যায় বেশি দামে পশু বিক্রির জন্য নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে পানি জমে যাওয়া, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, মূত্রনালি ও যকৃতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এসব পশু কেনা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ইনজেকশন ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে মোটাতাজা করা পশুর মাংস স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব পশু দেখে, বুঝে, চিনে কেনাটা অবশ্যই বেশ কঠিন কাজ। তারপরও কিছু উপায়ে যাচাই করে কেনার চেষ্টা করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে। যেমন- আঙুলের চাপ : স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো গরু অতিরিক্ত হরমোনের কারণে পুরো শরীরে পানি জমে মোটা দেখায়। গরুর গায়ে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে সেই স্থানের মাংস স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে মোটা গবাদিপশুর ক্ষেত্রে দ্রুতই মাংস স্বাভাবিক হয়। খাবারে আগ্রহ : সামনে খাবার ধরলে জিভ বের করে খাবার টেনে নেওয়ার চেষ্টা করলে বোঝা যাবে গরুটি সুস্থ। অসুস্থ পশু সহসা খাবার খেতে চায় না। নাক ও কুঁজ : সুস্থ গরুর নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা থাকে। সুস্থ গরুর পিঠের কুঁজ মোটা ও টান টান হয়। পা ও মুখ : গরুর পা ও মুখ ফোলা, শরীর থলথল করবে, অধিকাংশ সময় গরু ঝিমাবে। শ্বাস-প্রশ্বাস : কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু একটু হাঁটলেই হাঁপায়, অল্পতেই ক্লান্ত দেখায়, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়। আর স্বাভাবিক পদ্ধতিতে পালিত গরুর রানের মাংস শক্ত হয়। লালা বা ফেনা : কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা গরুর মুখে বেশি লালা বা ফেনা থাকে। স্বভাব : স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো বা ইনজেকশন দেওয়া গরু খুব শান্ত হয়। পশুর ঊরুতে অনেক মাংস মনে হবে। ছুরি-চাকু, দা-বঁটি কোরবানির প্রস্তুতি হিসেবে পশু কেনার পাশাপাশি দা, ছুরি, চাপাতি, বঁটি প্রভৃতি সরঞ্জাম কেনারও হিড়িক পড়ে যায়। কোরবানির পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কাটার জন্য প্রয়োজন এসব সরঞ্জামের চাহিদাকে কেন্দ্র করে এ সময়টায় জমজমাট হয়ে ওঠে কামারশালা। বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন দামের চাপাতি, ছুরি, দা, চাকু, ভোজালি, কুড়াল ও মাংস কাটার জন্য গাছের বড় টুকরা বিক্রির জন্য মৌসুমি এই ব্যবসা জমে ওঠে। তবে কামারশালা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে ক্রেতাদের সুবিধার্থে এসব সরঞ্জামসহ মাংস রাখার জন্য হোগলা, চাটাই এবং গবাদিপশুর খাবার হিসেবে ছন, তাজা ঘাসও বিক্রি হয়। আর এর মাধ্যমে একশ্রেণির বিক্রেতার মৌসুমি বাণিজ্যও ভালো হয়। আকার এবং মানভেদে ছোট ছুরি ৩৫-১০০ টাকা, মাঝারি ছুরি ৫০-১৫০ টাকা, বড় ছুরি ১০০ থেকে ১ হাজার টাকা, জবাই করার ছুরি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। চাপাতি ৪০০-৮০০ টাকা, ভোজালি ৩০০-৭০০ টাকা এবং হাড় কাটার জন্য কুড়াল ২০০ থেকে ১ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। দরকারি রকমারি মশলা কোরবানির মাংসসহ অন্যান্য রকমারি রান্নার জন্য অত্যাবশ্যক মশলাপাতি। বিশেষত মাংস রান্নায় দেশে বহুজাতের মশলা ব্যবহার প্রচলন আদিকালের। বাহারি মশলা ছাড়া কোরবানির মাংসের মজাদার রান্নার কথা ভাবাই যায় না। তাই এ সময়ে মশলার দামে আগুন লাগে। অধিক চাহিদাকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিবছরই মশলার বাজারকে গরম করে তোলে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। কোরবানির জন্য আবশ্যিক মশলাগুলোর মধ্যে রয়েছে জিরা, ধনিয়া, শাহ জিরা, কালিজিরা, মেথি, কালো সরিষা, মৌরি, হলুদ, দারুচিনি, আদা, গোলমরিচ, এলাচ, জায়ফল, জাফরান, লবঙ্গ প্রভৃতি। সাবধান গরুর হাটে জাল নোট দেশের বিভিন্ন স্থানে পশুর হাটে প্রতিবছরই পশু কেনার সময় ক্রেতা-বিক্রেতারা বিপাকে পড়েন জাল নোট নিয়ে। কারণ কোরবানির ঈদের বিশাল পশুর বাজারকে ঘিরে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী জাল নোটের ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। পশুর হাটের ভিড়, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ব্যস্ততাকে কাজে লাগিয়ে তারা এই সুযোগে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এজন্য ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনতা অবশ্যই কাম্য। সরকারের উদ্যোগে প্রত্যেক হাটে জাল নোট চিহ্নিত করার মেশিন থাকারই কথা। তারপরও প্রতারকচক্রের খপ্পরে পড়ে অনেকেই প্রতারিত হতে শোনা যায়। এই প্রতারণার হাত থেকে রেহাই পেতে জেনে রাখুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় জাল নোট চেনার সাধারণ কিছু পদ্ধতি। - নোটটি সোজা করে ধরে লক্ষ করুন নোটের বাম পাশে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একটি সরলরেখা আছে। লক্ষ করলে দেখবেন এটি আসলে কোনো রেখা নয়, স্পষ্টভাবে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কথাটা লেখা আছে। - আসল নোটে রঙ পরিবর্তনশীল কালি ব্যবহার করা হয়। ২০০০ সাল থেকে মুদ্রিত ৫০০ টাকার নোটের সামনের পিঠের উপরের বাঁ দিকের কোনার উপরের অংশ নাড়াচাড়া করলে সবুজ থেকে সোনালি আবার সবুজ রঙ পরিবর্তন হতে থাকে। জাল নোটে এই রঙ পরিবর্তন হবে না। - জাল নোটগুলো হবে নতুন। জাল নোটগুলো সাধারণত কাগজের তৈরি, তাই পুরনো হয়ে গেলে এগুলোর অবস্থা নাজেহাল হয়ে যায়, যা সহজেই বোঝা যাবে। - জাল টাকা শনাক্তের অন্যতম উপায় হচ্ছে আলট্রা ভায়োলেট লাইট। এই লাইটের মাধ্যমে শনাক্ত করা খুবই সহজ। আসল নোটে এই লাইটের আলো ধরলে নোটের ওপর রেডিয়ামের প্রলেপ জ্বলজ্বল করে উঠবে। জাল নোটে তা হবে না। - লেনদেনের সময় মনোযোগ সহকারে দেখলেই বোঝা যায় জাল নোট আসল নোটের মতো ঝকঝকে থাকে না, দেখতে ঝাপসা দেখায়। - আসল টাকার নোট হরিণের চামড়া দিয়ে তৈরি বলে পানিতে ভেজালেও খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যাবে না। আর জাল নোট পানিতে ভেজানোর সঙ্গে সঙ্গেই তা ভেঙে যাবে। জাল নোট কাগজের মতো ভাঁজ হয়। হাতের মধ্যে নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করে কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিলে ভাঁজ পড়ে যায়। আসল নোট ভাঁজ হবে না। সূত্র : বাংলাদেশ ব্যাংক
হাট কাঁপাবে রাজাবাবু, সিনবাদ ও সম্রাটরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে ঘুরছে দেশের সবচেয়ে বেশি ওজনের তকমা পাওয়া রাজাবাবু, সিনবাদ, কালোচাঁদ, ডন ও সম্রাট নামের কোরবানির পশুর নিউজ। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে এই মুহূর্তে ভাইরাল হওয়া খবর হচ্ছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় উৎপাদিত বিভিন্ন ষাঁড়ের নাম। জানা গেছে, ২০১৫ সালে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটী গ্রামের তারা মিয়া তার ৯ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট প্রস্থের একটি ষাঁড় ২২ লাখ টাকা দাম হাঁকিয়ে আলোচনায় আসেন। ২০১৬ সালে দিঘুলিয়া ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামের পরিষ্কার বিবির লক্ষ্মীসোনা নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়ে আলোচনায় আসেন। পরের বছর ৩৯ মণ ওজনের রাজাবাবু নিয়ে সারা দেশে আলোচনায় আসেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি। লালন-পালন করেন আরো এক বছর। ২০১৮ সালে সেই রাজাবাবুর ওজন এখন ৫২ মণ। চলতি ঈদুল আজহার হাটে বিক্রি করতে প্রস্তুত যেসব ষাঁড় রয়েছে, সম্রাট তাদের মধ্যে অন্যতম। এর মালিক সাটুরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকার ধামরাই উপজেলার নান্দেশ্বরী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুস। সম্রাটের ওজন সাড়ে ৪২ মণ। এ ছাড়া আলোচনায় আছে সাটুরিয়ার সাফুল্লি গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ৪০ মণ ওজনের সিনবাদ। আরো আছে, বালিয়াটী ইউনিয়নের গর্জনা গ্রামের বড় বাড়ির ৩৪ মণ ওজনের কালোচাঁদ। আছে ২৪ মণ ওজনের ডন। খামারের মালিকদের মতে, ৫২, ৪২ ও ৪০ মণ ওজনের ষাঁড় হাটে নিয়ে বিক্রি করা কষ্টসাধ্য। বাড়ি থেকে বিক্রি করতে পারলেই তারা অধিক খুশি।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১