প্রথমবারের মতো যারা ভোট দেবেন সেসব তরুণের উদ্দেশে ভিডিও বার্তায় নিজের বিবেচনায় পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিন মিনিটের তার এই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে তিনি নির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাননি। বলেছেন, ‘আপনার বিবেচনায় যাকে বলে, তাকেই ভোট দেবেন। কিন্তু অবশ্যই ভোট দেবেন।’

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিদেশে অবস্থারত একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচনে নেই। যে কারণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ভিডিওতে ফখরুল মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনারই বাংলাদেশ। দেখিয়ে দিন, ইউ ম্যাটার।’ তিনি বলেন, আপনারা যারা এবারই প্রথম ভোট দেবেন, তাদের উদ্দেশে আমি কিছু বলতে চাই। আমার বয়স যখন আপনাদের মতো, তখন আমরা যুদ্ধে গিয়েছিলাম, দেশটাকে মুক্ত করব বলে। তখন আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ ছিল, যারা বলত যে, পাঞ্জাবিদের সঙ্গে যুদ্ধে আমরা কোনো দিনও পারব না। মেরে কেটে ওরা শেষ করে দেবে। ওদের ট্রেইন্ড মিলিটারির বিপরীতে আমরা হলাম বাচ্চা ছেলে। তারা আসলে ভয় পেত। যুদ্ধে পার্টিসিপেন্ট না করার অনুতাপে কাতর ছিল তারা। আমরা সেদিন তাদের কথা শুনিনি। বড় বড় পাকা পাকা বিশ্লেষণে কান দেইনি। আমরা শুধু আমাদের মনের কথাটা শুনেছিলাম। শুধু একটা স্বপ্নকে তাড়া করেছিলাম। দেশটা মুক্ত হওয়ার। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে বাংলাদেশ।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার বয়স এখন সত্তর। আমি এই বয়সেও সেই একই স্বপ্ন তাড়া করছি। আমি তো আশায় ভরপুর। আপনারা কি স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছেন? আমাকে বহু মানুষ বলে, ভোটে তো স্যার আপনারাই জিতবেন, কিন্তু আওয়ামী লীগ আপনাদের রেজাল্ট খেয়ে ফেলবে। তার কারণ হলো, আওয়ামী লীগের সমীকরণে আপনারা নেই। তারা আপনাদের তাচ্ছিল্য করে। টু দেম, উই ডোন্ট ম্যাটার।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমন এক ন্যারেটিভ তারা (আওয়ামী লীগ) বাংলাদেশে দাঁড় করিয়েছে যে, আপনি যাকেই ভোট দেন, আপনার রাজনৈতিক জাজমেন্ট যাই হোক না কেন, সেই ভোটকে, আপনার বিশ্বাসকে তারা চুরি করে পাল্টে দেবে। আপনারা ওদের দেখিয়ে দেন যে, আপনারাই বাংলাদেশ। দেখিয়ে দিন, ইউ ম্যাটার। আপনারা এই দেশের মালিক এবং আপনার ভোটেই ঠিক হবে এদেশের ভবিষ্যৎ। আপনার বিবেচনায় যাকে বলে, তাকেই ভোট দিন।’

ভিডিও বার্তার শেষ দিকে ফখরুল বলেন, ‘যৌবনে এই দেশটার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। বার্ধক্যে এসে আপনাদের কাছে আমি শুধু একটা দিন চাইছি। ৩০ ডিসেম্বর। শুধু একটা দিন। বাংলাদেশের জন্য। ৩০ ডিসেম্বর, সকাল সকাল ভোট দিন। দেখিয়ে দিন আপনারা শুধু ভোট দিতেই জানেন না, ভোট ডাকাতি আটকাতেও পারেন।’