বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০১৯

নিঃশ্বাসে শনাক্ত হবে ক্যানসার!


চিকিৎসকরা নতুন এক পদ্ধতির মাধ্যমে কেবল নিঃশ্বাস পরীক্ষা করেই ক্যানসার শনাক্ত করতে পারবেন। প্রাথমিক অবস্থায় পরীক্ষামূলকভাবে এর কার্যকারিতা এখন পরীক্ষা করে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই পরীক্ষার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের ক্যানসার গবেষকরা দেখতে চান, কেবলমাত্র নিঃশ্বাসের অণুসমূহ পরীক্ষা করে কয়েক ধরনের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করা যায় কি না। এই পদ্ধতি যদি সফল হয়, তাহলে চিকিৎসকরা শুরুতেই নির্ধারণ করতে পারবেন ওই রোগীর আরো বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার আছে কি না।

গবেষকরা এ জন্য তারা পনেরশ মানুষের নিঃশ্বাসের নমুনা সংগ্রহ করবেন, এর মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও রয়েছেন। নিঃশ্বাস ছাড়াও এ জন্য একজন ব্যক্তির রক্ত ও মূত্র পরীক্ষার মাধ্যমেও ক্যানসার প্রাথমিক ধাপেই শনাক্ত করা যাবে। এর ফলে ক্যানসারে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার অনেকটা কমে যাবে।

তবে, এই পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য দুবছর অপেক্ষা করতে হবে। এদিকে, চিকিৎসকরা বলছেন, এই পরীক্ষা জেনারেল ফিজিসিয়ানের মতো সাধারণ জায়গায় হওয়ার সম্ভাবনা কম।

কীভাবে কাজ করবে এই পরীক্ষা

মানুষের শরীরের কোনো কোষে কোনো রকম প্রাণ-রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটলে সেটি নিঃশ্বাসে ভোলাটাইল অর্গানিক কমপাউন্ডস নামে এক ধরনের অণু নিঃসৃত হয়।

কিন্তু যদি তাতে ক্যানসার বা অন্য কোনো রোগের আভাস থাকে, তাহলে কোষের স্বাভাবিক ধরনে পরিবর্তন আসে এবং ভিন্ন ধরনের অণু তৈরি করে এবং গন্ধের মাধ্যমে ভিন্ন বার্তা পাঠায় মস্তিষ্কে। নিঃশ্বাসের বায়োপসি করার মধ্য দিয়ে নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে মুখের গন্ধের এই প্রক্রিয়াটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন গবেষক দল।

এই পরীক্ষা সফল হওয়ার সম্ভাবনা কতটা?

নতুন এই পদ্ধতি মাত্র পরীক্ষা করে দেখা শুরু হয়েছে। ফলে এর সফলতা নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে হলে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। তবে, যে পদ্ধতির মাধ্যমে এই পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেটা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জগতে নতুন নয়। কয়েক বছর যাবৎ পৃথিবীর অনেক গবেষকই বিশেষ করে ফুসফুসের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করছেন। ইতোমধ্যেই নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে ক্যানসারের আগের ধাপ শনাক্তে কিছুটা অগ্রগতিও দেখা যাচ্ছে।

কাদের ওপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে?

ইতোমধ্যেই যেসব মানুষের পাকস্থলিতে ক্যানসার হওয়ার পর প্রোস্টেট, কিডনি, ব্লাডার, লিভার এবং প্যানক্রিয়াসে তা ছড়িয়ে পড়েছে, এমন মানুষের একটি অংশ এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। তবে, এদের বাইরেও সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষরা অংশ নিচ্ছেন এই গবেষণায়।

এ ছাড়া ক্যামব্রিজের অ্যাডেনব্রুক হাসপাতালের ডাক্তাররা রোগীদের একটি মুখোশের মধ্যে ১০ মিনিট ধরে নিঃশ্বাসের নমুনা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন, যাতে সেটা গবেষণার কাজে লাগানো যায়।

গবেষকরা বলছেন, ক্যানসার যত দ্রুত শনাক্ত করা যায় তত মঙ্গল, তাতে চিকিৎসা শুরু করা যায় তাড়াতাড়ি।

ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় কি কমবে?

এক অর্থে ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় কমবে। কারণ কারো শরীরে যদি ক্যানসারের আভাস পাওয়া যায়, আর সেটি আগে থেকে শনাক্ত করা যায়, তাহলে খুব দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করা যাবে।

এ ছাড়া একটি মাত্র পরীক্ষা কিংবা খুব সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে, সেটি পরবর্তী ধাপগুলোয় সাশ্রয় সম্ভব হয়। এর আগে গত বছর জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল, একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার শনাক্ত করে চিকিৎসা দেওয়ার পদ্ধতি উদ্ভাবন করে।

ওই পরীক্ষায় ৫০০ ডলারের মতো খরচ হবে। কিন্তু তার তুলনায় এই পরীক্ষায় খরচ কম হবে কি না তা এখনো জানা যায়নি।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১