বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২২ জুন ২০১৯

ফিরলেন ভূমধ্যসাগরে ভাসা ১৭ বাংলাদেশি

টিকেট দিলেও আসতে রাজি হননি ৩ জন


তিন সপ্তাহ ধরে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া সীমান্তে সাগরে নৌকায় ভাসা ৬৪ বাংলাদেশির মধ্যে ১৭ জন দেশে ফিরেছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে কাতার এয়ারওয়েজের কিউআর-৬৩৪ ফ্লাইটে করে তারা ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। একই সঙ্গে দেশে ফেরায় সম্মত হওয়ায় টিকেট দিলেও আসতে রাজি হননি ৩ জন।

বিমানবন্দরের ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের কর্মকর্তা মো. মাহবুব এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অনটাইমে তারা ঢাকায় পৌঁছেছেন।

জানা গেছে, ঢাকায় পৌঁছার পরপরই গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা বিমানবন্দরের ভেতরেই তাদের কোনো একটি কক্ষে নিয়ে যান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাংলাদেশের কোন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় তারা তিউনিসিয়া গিয়েছিলেন, সে তথ্য নেওয়া হচ্ছে।

ব্র্যাকের হেড অব মাইগ্রেশনের প্রধান শরিফুল হাসান জানান, তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিসিয়ার সাগরে ভেসে থাকা ৬৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসতে রাজি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ জন আজ (গতকাল শুক্রবার) বিকেলে কাতার এয়ারওয়েজের বিমানযোগে তিউনিসিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছেন।

উল্লেখ্য, তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিসিয়ার সাগরে একটি নৌকায় ভাসছিলেন ৭৫ জন, যাদের মধ্যে ৬৪ জনই বাংলাদেশি। নৌকাটি তিউনিসিয়ার উপকূলের কাছে পৌঁছলেও কর্তৃপক্ষ তীরে নামার অনুমতি দেয়নি।

তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের শরণার্থী কেন্দ্রে আর জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে ওই নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগরে ভাসতে থাকে। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেখানে যান।

শরিফুল হাসান বলেন, ভূমধ্যসাগর দিয়ে এভাবে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার আরো নজরদারি দরকার। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আজকে যারা এসেছেন, তাদের ১৭ জনের মধ্যে ৮ জনই মাদারীপুরের। বাকি ৯ জনের মধ্যে ৪ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। বাকি ৫ জনের বাড়ি শরীয়তপুর, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলায়। এ ধরনের মানবপাচার যেকোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে।

এদিকে রেডক্রিসেন্ট সূত্র ধরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যাবেন, দূতাবাসের পক্ষ থেকে তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষকে এমন নিশ্চয়তা প্রদানের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের ১৮ জুন সন্ধ্যায় জারজিস বন্দরে নামার অনুমতি দেয়। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনোক্রমেই তাদের জারজিস বা মেডেনিনে থাকার অনুমতি প্রদান করেনি। এমতাবস্থায় উদ্ধার বাংলাদেশিদের কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থায় তিউনিসে এনে রেড ক্রিসেন্ট ও আইওএমের যৌথভাবে পরিচালিত শেল্টার হাউসে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেশে পাঠানো হচ্ছে।

এর মধ্যে প্রথম দফায় ২০ জনকে টিকেট দিলেও ৩ জন আসতে রাজি হননি। বাকি ১৭ জন শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় আসেন।

জানা গেছে, ৩ জন দেশে আসতে রাজি না হওয়ার বিষয়টি নতুন দুশ্চিন্তার কারণ। একইভাবে শেল্টার হাউসে অবস্থানরত আরো কিছু বাংলাদেশি এ মুহূর্তে দেশে আসতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। বিষয়টি অত্যন্ত চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা সবাইকে দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে রাজি করানোর পরই তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

দূতাবাসের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, কাপড়চোপড় এবং তিউনিসে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া তাদের সবার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেশে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধার সবাই দেশে ফিরে না এলে পরবর্তীতে এ রকম দুর্ঘটনায় তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১