বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ


কোর্টে রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনার জন্য সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া ৭০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এবং ১০৫ জন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ মোট ১৫০ জনের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে। গতকাল রোববার জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভুঁইয়া।

রিটে বিবাদী করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সংশ্লিষ্ট ১৫ জনকে। চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী।

এছাড়া সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ, পদোন্নতি, অপসারণ, প্রশিক্ষণ ইত্যাদিসহ সব বিষয় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস কমিশন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। এটি না হওয়া পর্যন্ত সম্প্রতি দুই দফায় নিয়োগ পাওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের দায়িত্ব পালনে বিরত থাকার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিটে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে সনদ পাওয়ার পর থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে ন্যূনতম ১০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্তদের। অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগে ন্যূনতম পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের। কিন্তু ৭০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এবং ১০৫ জন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এটি মানা হয়নি।

উল্লেখ্য, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ থেকে গত ৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের ১০৫ জন আইনজীবীকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার্স অর্ডার ১৯৭২-এর ৩ (১) অনুচ্ছেদ’ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের ১০৫ জন আইনজীবীকে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করা হলো। এর আগে নিয়োগ পাওয়া ৫২ জনকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বহাল রাখা হয়েছে। এ নিয়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫৭ জনে। বর্তমানে একজন অ্যাটর্নি জেনারেল, দুজন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল রয়েছেন।

গত ২১ জুলাই রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর কার্যালয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনার জন্য ৭০ আইনজীবীকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর মধ্যে ৩১ জনকে নতুন, ৩২ জনকে পুনরায় এবং ৭ জনকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল থেকে পদোন্নতি দিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন আইনজীবীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা সংবিধানের ১৯, ২২, ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩১ অনুচ্ছেদ পরিপন্থী। সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আইন কর্মকর্তাদের যদি রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের বাদ দিয়ে এবং পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বিবেচনা না করে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত ১০৫ সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যে ব্যারিস্টার আল-মামুনের হাইকোর্টে প্র্যাকটিসের সময়কাল চার বছর দুই মাস। যদিও আইনানুযায়ী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্টে ন্যূনতম পাঁচ বছর প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। এ নিয়োগ বাংলাদেশ ল অফিসার অর্ডার ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৩(৩) এবং বাংলাদেশ ল অফিসার (সংশোধিত) আইন ২০০১-এর সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন। এ কারণে রিট দায়ের করেছি।

আল-মামুন ছাড়াও নিয়োগপ্রাপ্ত ১০৫ জন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ক্রমিক নম্বর ৯৯ থেকে ১০৫ পর্যন্ত (১০৪ নম্বর বাদে) ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সন্দেহজনক। কারণ প্রজ্ঞাপনে এদের হাইকোর্টে তালিকাভুক্তির (এনরোলমেন্ট) তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। ফলে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের হাইকোর্টে প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতা ৫ বছর আছে কি না তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১