বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০১৯

রোহিঙ্গানিধনে ব্যবহারের আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের

মিয়ানমারে রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত


রোহিঙ্গা ইস্যুতে দিন দিন আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে মিয়ানমারের ওপর। রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর গণহত্যার অভিযোগে হওয়া মামলায় কিছুদিনের মধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতে দাঁড়াতে হবে দেশটিকে। এর মধ্যেই উঠেছে আরো একটি বড় অভিযোগ। আন্তর্জাতিক চুক্তি অমান্য করে মিয়ানমার এখনো বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক অস্ত্র মজুত রেখেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধ সংস্থার (ওপিসিডব্লিউ) বার্ষিক বৈঠকে এ অভিযোগ করেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি থমাস ডিনানো।

রাসায়নিক অস্ত্রবিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষর করলেও মিয়ানমার এখনো সেগুলো ধ্বংস করেনি। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জাতিগত নিধন অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে বলেও ওপিসিডব্লিউর সভায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সহকারী সেক্রেটারি থমাস ডিনানো বলেন, ওই কনভেশনে স্বাক্ষর করলেও সমসাময়িককালে যেসব রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করছিল মিয়ানমার, তা আর ধ্বংস করেনি। তাই ঐতিহাসিকভাবেই সে সময়ের কিছু মজুত এখনো দেশটিতে রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এর আগেও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে।

ডিনানো আরো বলেন, হাতে আসা উপযুক্ত তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এটা নিশ্চিতভাবে বলছে-মিয়ানমার স্পষ্টতই রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন লঙ্ঘন করছে। কেননা এর আগে তারা তাদের অতীত রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচি সম্পর্কে কিছু জানায়নি এবং এখনো তারা তাদের রাসায়নিক অস্ত্র ক্ষেত্রটিও ধ্বংস করেনি। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেকবার রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন, মজুত ও ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ এ অভিযোগ এমন সময়ে এলো যখন মিয়ানমার রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছে।

২০১৭ সালের আগস্টের শেষদিকে দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক ধর্ষণ ও গণহত্যার মাধ্যমে নিধন অভিযান শুরু করলে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সেসব অপরাধের দায়ের দেশটির সরকার, সেনাবাহিনী ও তাদের নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুটি মামলা হয়েছে।

২০০৫ সালে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ আনে লন্ডনভিত্তিক অধিকার আন্দোলন ক্রিশ্চিয়ান সলিডারিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড। ২০১৩ সালের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশটির পুলিশ উত্তরাঞ্চলীয় একটি তামা খনিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর ফসফরাস ছুড়ে গুরুতর দগ্ধ করেছে।

২০১৪ সালে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির বিষয়ে প্রতিবেদন করায় মিয়ানমার পাঁচ সাংবাদিককে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। এ ছাড়া গত বছর দেশটির আধা-সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু কাচিন বিদ্রোহীদের ওপরও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। তবে দেশটি বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতে চায় ওয়াশিংটন। এ ছাড়া মজুত রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে সাহায্য করতেও যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে জানান ডিনানো।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১