আপডেট : ১১ মার্চ ২০২০
কুড়িগ্রাম (রৌমারী) প্রতিনিধি: ভরাট হওয়া সোনাভরি থেকে বালু উত্তোলনের কারণে নদীতে ধ্বসে গেছে প্রায় দেড় কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ। ফলে আগামী বর্ষায় হুমকির মুখে পড়েছে রৌমারী উপজেলার কর্তিমারী বাজার, রৌমারী-ঢাকা ডিসি সড়ক, একটি দাতব্য চিকিৎসালয়, ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১৩টি মসজিদ, ৩টি মাদ্রাসা, ৩০টিরও বেশি মৎস্য খামার ও প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৭১০টি। জিওবি জাইকা’র অর্থায়নে ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় রৌমারী উপজেলার ধনারচর বেঁড়ী বাঁধ। এলজিইডির তত্বাবধানে ওই উপ-প্রকল্পটি ‘ধনারচর এফএমডি’ নামে পরিচিতি পায়। ধনারচর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ এর বাস্তবায়ন করে। বাঁধ নির্মাণের পর থেকে অকাল বন্যা থেকে পরিত্রাণ পায় ওই অঞ্চলের ছোট বড় অন্তত ২১টি গ্রাম। কিন্তু গত ৮/৯ বছর ধরে একটি চক্র ওই বাঁধ লাগোয়া (কর্তিমারী ঘাট) ভরাট হওয়া সোনাভরি থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন শুরু করে। স্থানীয়দের তীব্র বাধা থাকলেও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় পার পেতে থাকে চক্রটি। ফলে গত বন্যায় প্রায় ১০ কি.মি. বাঁধের ৩৮০ মিটার জায়গা পুরো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ওই জায়গাটি পুনঃ সংস্কারেও দেখা দিয়েছে সীমাহীন বিড়ম্বনা। নতুন করে জমি ক্রয় ও বাঁধ নির্মাণ অনেকটা দুরহ হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার শাজাহান আলী, সাইজুদ্দিন, ফুল মিয়া, পাপু মিয়া, রমজান আলীসহ অনেকে জানান, যাদুরচর এলাকার মোনতাজ হাজির ছেলে সেলিম, ধনারচরের আবু কালামের ছেলে শামীম, বড়চরের সাঈদ আলীসহ ওই এলাকায় ৩টি ড্রেজার মেশিন বসিয়েছে। যা থেকে দিনরাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে মন্ত্রী, এমপি, ইউপি চেয়ারম্যান, বড় ব্যবসায়ীসহ ধনাঢ্য ব্যক্তিদের খাল, বিল, জলাশয়, প্রতিষ্ঠান কিংবা বাড়ি ভিটে। অদম্য বালু ব্যবসায়ীরা যেন বেপরোয়া। কারো কথার তোয়াক্কাই করছে না তারা। এ বিষয়ে ধনারচর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, গত বন্যায় বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যায়। এতে ৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল, বাড়িঘরসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে যায়। পরবর্তী বন্যা আসার আগেই বেরি বাঁধটি মেরামত না করা হলে এ অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ধনারচর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি: এর সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, একটি মহল সোনাভরি নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ও ভয়াবহ বন্যার কারনে বেরি বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। উক্ত বেরি বাঁধটি দ্রুত মেরামতের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী করছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর সাথে সাথে আমি উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। বর্তমানে ড্রেজারে মাটি কাটা বন্ধ রয়েছে। তালিকা করতে বলেছি যারা এ অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১