আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২০
আজ ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য এক দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদিনে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। পরে এই বৈদ্যনাথতলাকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়। এ দিনটি এবার এসেছে নজিরবিহীন এক সঙ্কটের মধ্যে। বিশ্বজুড়ে করোনা বাঙালিকেও ঘরে থাকতে বাধ্য করছে। এর আগে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। সারা দেশে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। এ ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। একারণে এদিবসটিও ঘরে বসে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ এক বিবৃতিতে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে সৃষ্ট সংকটের কারণে ঘরে বসেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতা-কর্মী এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহসহ সর্বস্তরের জনগণ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর একই বছরের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। অস্থায়ী সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। এ দিন ঘোষিত ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়। ঘোষণাপত্রে সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চীফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। তাজউদ্দিনের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে। এরই পথ পরিক্রমায় ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরের দিন দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকা এবং সংবাদ মাধ্যমে ১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণের এই সংবাদ ফলাও করে ছাপা হয়। বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক সূচনা বা আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হিসেবে এই দিনটির অনেক তাৎপর্য রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, ১০ এপ্রিল সরকার গঠনের পরে ১১ এপ্রিল স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাজউদ্দিন আহমদ একটি বেতার ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এছাড়াও ১৭ এপ্রিল মন্ত্রী সভার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিবৃতিতে করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে সামনে থেকে যে সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা জীবনবাজী রেখে সেবা প্রদান করে চলেছেন ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে তাদের সকলকে সশ্রদ্ধ সালাম ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এছাড়াও তাজউদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী নিযুক্ত হন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১