আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলায় ঘটনায় ওই অফিসের চতুর্থ শ্রেণির চাকরিচ্যুত কর্মচারী (মালি) রবিউলকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন রবিউল এর পরিবার। মঙ্গলবার দিনাজপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সম্মেলনে এ দাবি করেন রবিউলের পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রবিউল এর বড় ভাই রহিদুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমার ছোটো ভাই রবিউল ইসলাম ঘোড়াঘাট উপজেলায় মালি পদে কর্মরত থাকাকালে গত ১১ জানুয়ারি তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তারপর থেকে আমার ছোট ভাই রবিউল ইসলাম বাড়িতেই অবস্থান করছিল। আমার ছোট ভাই নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে সে এবং আমিসহ অন্যান্যরা ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া মারফত জানতে পারি যে, ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে নিজ বাসভবনে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। তিনি বলেন, এই ঘটনার সাথে আমার ছোটো ভাই রবিউলের কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে এই ঘটনার সাথে জড়িত বিভিন্ন জনের নাম জানতে পারি। যা গোটা দেশবাসী অবগত আছেন। এরই এক পর্যায়ে হঠাৎ করে ডিবি পুলিশ আমার ছোট ভাই রবিউল ইসলামকে আমাদের বাড়ি হতে গত ৯ সেপ্টম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার তিনদিন পর মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি যে, ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে মারার মামলায় ডিবি পুলিশ আমার ভাইকে আটক করেছে। পরে রিমান্ডে নিয়ে চাপ সৃষ্টি করে সে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তারা বাবাকে একাই মেরেছে মর্মে তার দ্বারা আদালতে জবানবন্দী প্রদানে বাধ্য করেছে। প্রকৃতপক্ষে আমার ছোটো ভাই রবিউল ইসলাম এই ঘটনার বিষয়ে কোন কিছুই জানে না এবং সে এই ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত ছিল না। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে রবিউল এর বড় ভাই রহিদুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে ডিবি পুলিশ এসে আমার ভাইকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। এরপর আমার ভাইকে ৬দিন রিমান্ডে নেওয়ার পর কোন তথ্য পায়নি। প্রথম ৬দিনে আমার ভাইয়ের কাছে কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী পায়নি। পরে আবার তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে আমার ভাইকে অন্যায় অত্যাচার করে। আমার ভাইকে চাপ প্রয়োগ করে জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে। আমাদের কোনো টাকা পয়সা নেই, আমরা কারো কাছে যাব এই উপায়ও আমাদের নেই। ওইদিন রাতে আমার ভাইসহ এক সাথে ভাত খেয়েছি। পরেরদিন সকাল ৬টার দিকে আমার ভাইসহ জমিতে ঘাস তুলতে গিয়েছি। ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলায় ঘটনায় আরো যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা কোথায়? আমার ভাইকে চাপ প্রয়োগ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন রবিউল এর বড় ভাই রহিদুল ইসলাম। রবিউল ইসলামের আরেক বড় ভাই আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাইসহ ওইদিন রাতে এক সাথে টিভি দেখেছি। আমার ভাই বাইরে থাকে না। তার শ^শুর বাড়িতেও সে থাকে না। আমার ভাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক জবানবন্দী নিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি। উল্লেখ, এর আগে গত ২ সেপ্টম্বর দিবাগত রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় র্যাব যুবলীগনের নেতা আসাদুল, সান্টু, নবীরুলকে আটক করে চুরির উদ্দেশ্যে ইউএনওর বাসায় হামলা চালায় বলে দাবি করেছিলেন র্যাব। পরে পুলিশ ওই অফিসের চাকরিচুত্য মালি রবিউলকে আটক করে হামলার দায় স্বীকারের কথা জানান।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রবিউল ইসলামের মা রহিমা খাতুন, চাচা এমাজ উদ্দিন, চাচী সুরাতন নেছা, চাচা ওয়াজ উদ্দিন, বড় ভাই আজিজুর, রহিদুল ও চাচাত ভাই রশিদুল ইসলামসহ প্রমুখ।
সন্ত্রাসীদের বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্যে আমার ছোট ভাই রবিউলকে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা এই হামলার ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক মামলার সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধীর বিচার কামনা করছি।’
রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সাথে এখন পর্যন্ত দেখা করতে পারিনি। মোবাইল ফোনেও কথা বলতে দেয়নি। কি অবস্থায় আছে, কেমন আছে সেটাও আমরা জানি না। আমার ভাই রবিউলের ঘর থেকে তার ব্যবহৃত কোরআন শরীফ বাদে সব কাগজপত্র ফেলাই দিয়েছে। আমার ভাইয়ের সব কাপড় নিয়ে গেছে। একটা রড, একটা বাঁশের লাঠি, প্যান্ট, শার্ট নিয়ে গেছে। যখন পুলিশ ঘরে ঢুকেছিল তখন আমাদের কাউকেই ঘরে ঢুকতে দেয়নি।’
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১