বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৪ মে ২০২১

বাজে ব্যাটিংয়ে বাজে হার


ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল আসলে প্রথম ইনিংসের পরই। দ্বিতীয় ইনিংসে যেখানে দরকার ছিল প্রবল প্রতিরোধ, সেখানে তামিমদের ব্যাটিং দেখে মনে হলো চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন। আরো মনে হলো, বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেক হয়েছে অল্প কয়েক দিন। কিন্তু বাস্তবে সেই সময়টা দুই দশকেরও বেশি। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ যেন এখনো দুধের শিশু। পাল্লেকেলেতে তরুণ এক স্পিনারকে ঠেকাতেই গলদঘর্ম টাইগার শিবির।  বাংলাদেশের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে উঠেছিল। গতকাল পঞ্চম দিনে সেই সময় লাগল এক ঘণ্টার চেয়ে একটু বেশি। ২৩ ওভারেই বাংলাদেশের সব লড়াই শেষ। ৫০ রানের মধ্যেই ৫ উইকেটে হারানো বাংলাদেশ ২২৭ রানে অল আউট। এই জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জয়ী শ্রীলঙ্কা। পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের শেষ দিনে তেমন লড়াই-ই করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া লঙ্কান স্পিনার প্রাভিন জয়াবিক্রমা দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট নেন।

অভিষেক টেস্টেই ১১ উইকেট, যা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা। কেবল শ্রীলঙ্কারই নয়, অভিষেকে বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে জয়াবিক্রমার ১১ উইকেটই ম্যাচ সেরা বোলিং। অভিষেক টেস্টে অন্তত ১০ উইকেট নেওয়া ১৬তম বোলার ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতা ২২ বছর বয়সি এই স্পিনার। মূলত প্রথম ইনিংসেই অর্ধেক ম্যাচ হেরে যায় বাংলাদেশ। ৭ উইকেটে ৪৯৩ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে লঙ্কানরা। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থামে ২৫১ রানে। প্রথম ইনিংসেই ২৪২ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৯৪ রান তুলে বাংলাদেশের সামনে ৪৩৭ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় শ্রীলঙ্কা।

বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই উল্টো পথে হাঁটতে থাকে বাংলাদেশ। এই ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান হাফ সেঞ্চুরিও পূর্ণ করতে পারেননি। তামিম ইকবাল ২৪ রান করে ফিরলে শুরু হয় ভাঙন। চতুর্থ দিন ৪৮ ওভারের মধ্যেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

পাল্লেকেলেতে গতকাল ৫ উইকেটে ১৭৭ রান নিয়ে দিন শুরু করে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য শেষ দিনে তাদের প্রয়োজন ছিল ২৬০ রান। আগের দিন প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারানোয় এই রান তাড়ার বাস্তবিক কোনো সম্ভাবনা ছিল না। দেখার ছিল কতটা লড়াইয়ের মানসিকতা দেখা পারেন তারা, সেটাও খুব একটা পারেনি। 

শেষ দিনে লড়াইয়ের জন্য যার দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ সেই লিটন দাসই ফেরেন সবার আগে। জয়াবিক্রমার আগের বলটি বিশাল টার্ন করে বেরিয়ে যায়। পরের বলটিও টার্ন করবে ভেবে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন লিটন। সোজা আসা বল ব্যাটের কানা এড়িয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে রিভিউ নেন লিটন, কিন্তু পাল্টায়নি সিদ্ধান্ত। বোলিংয়ে এসেই উইকেট নেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। জায়গায় দাঁড়িয়ে থার্ড ম্যানে স্টিয়ার করার চেষ্টায় তাইজুল ইসলাম ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। প্রথম ঘণ্টায় ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশ পানি পানের বিরতির পর ভেঙে পড়ে হুড়মুড় করে। রমেশ মেন্ডিসকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় উইকেট বিলিয়ে আসেন তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে এক প্রান্ত আগলে রাখা মেহেদী হাসান মিরাজকে ফিরিয়ে দেন জয়াবিক্রমা।

মিরাজের উইকেটের পেছনে দারুণ অবদান আছে পাথুম নিসানকার। বাঁহাতি স্পিনারের বলে সুইপ করেছিলেন ব্যাটসম্যান, তার মুভমেন্ট বুঝে আগেই শর্ট লেগের ফিল্ডার ডানে সরে যান এবং ঠিক সেখানেই ক্যাচটা পান।

দুই বল পর আবু জায়েদ চৌধুরীকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেন জয়াবিক্রমা। সঙ্গে গড়েন অভিষেকে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। সেই ১৯৫০ সালে ম্যানচেস্টারে ২০৪ রানে ১১ উইকেট নিয়ে এত দিন রেকর্ডটা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যালফ ভ্যালেন্টাইনের অধিকারে। প্রথম ইনিংসে ৯২ রানে ৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৬ রানে ৫ উইকেট নেওয়া জয়াবিক্রমা জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেকে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডও এখন জয়াবিক্রমার। আগের সেরা ছিল শ্রীলঙ্কারই আকিলা ধনঞ্জয়ার। ২০১৮ সালে ঢাকা টেস্টে ৪৪ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন এই অফ স্পিনার। একটি করে ফিফটি, সেঞ্চুরি ও ডাবল সেঞ্চুরিতে ৪২৮ রান করা লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১