বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২১

সহিংসতার দায় ফেসবুক এড়াতে পারে না: তথ্যমন্ত্রী


সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দায়ী করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, কুমিল্লার ওই ঘটনা যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড না হতো তাহলে সারা দেশে এই সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এমন সব ঘটনার দায় ফেসবুক এড়াতে পারে না।

আজ রোববার সচিবালয়ে সম্পাদক ফোরামের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার যে ঘটনা সেটি যদি সোস্যাল মিডিয়ায় আপলোড না হতো তাহলে এটা বিস্তৃত হয়ে সারা দেশে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনাও কিন্তু স্যোসাল মিডিয়ার কারণে, স্যোসাল মিডিয়ার একটি পোস্টের কারণে।

‘আমি ২০১৯ সালে ইউকে সফরে গিয়েছিলাম। ইউরোপেও একটি সার্ভেতে উঠে এসেছে সেখানে ৮০ ভাগ মানুষ মনে করে স্যোসাল মিডিয়া অনেক ক্ষেত্রেই গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, সমাজের স্থিতিশীলতা, শান্তির জন্য হুমকি। আমি মনে করি, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এটির দায় স্যোসাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। এটি নিয়ে ভাবার বিষয় আছে। বিশ্বব্যাপী এটি একটি উদ্বেগ তৈরি করেছে, শুধু আমাদের দেশে নয়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বেশ আগে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। একটি সিম পেতে হলে কিন্তু একটি আইডি কার্ড লাগে। এটি ছাড়া কিন্তু কেউ সিম পায় না। একজন ব্যক্তি কতগুলো সিম পাবে তা নির্ধারণ করা আছে। আমরা ফেসবুককে বলেছিলাম, এদেশে যেন আইডি কার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়, সে ব্যবস্থা করতে, কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি।

‘আজকে যারা ফেসবুক অতীতে কাজ করেছেন তারাও বলছে, এটির কারণে সমাজে অস্থিরতা হয়। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চেয়ে নিজেদের লাভকেই তারা গুরুত্ব দেয়। আমাদের দেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে ফেসবুকে মিথ্যা পোস্ট দেয়ার জন্য বা উসকানিমূলক পোস্ট দেয়ার জন্য এটার দায় ফেসবুক বা সংশ্লিষ্ট সোস্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। এ নিয়ে আমাদের ভাবার প্রয়োজন আছে।’

সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে নোটিশ করা হবে বলেও জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি ফেসবুক পোস্টের জন্যই এককভাবে হয়েছে তা নয়। তবে এটি ফেসবুকে আপলোড না হলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এটির সঙ্গে যারা যুক্ত সবাই কিন্তু দায়ী।

‘যে কোরআন রাখল সে দায়ী, যারা পোস্ট দিল তারাও কিন্তু দায়ী। সেই সঙ্গে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও দায়ী। কারণ তাদের মাধ্যম ব্যবহার করে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করতে এ কাজগুলো করা হয়েছে। অবশ্যই আমরা ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে নোটিশ করব। এখানে তারা দায় এড়াতে পারে না। অতীতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেখানেও স্যোসাল মিডিয়া দায় এড়াতে পারে না।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অবশ্যই কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। কিন্তু সব কিছু এমনভাবে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন যাতে সেটি খারাপ কাজে ব্যবহার করা না হয় এবং এতে যেন স্বচ্ছতা থাকে। দেখা যাচ্ছে, ফেসবুকে পরিচয় গোপন করে ফেক আইডি ব্যবহার করে পোস্ট দেয়া হয় এবং তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।’

দুর্গাপূজায় সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। এ ঘটনা তুলে ধরে ফেসবুকে লাইভ করে সহিংসতা ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ফয়েজ আহমেদ নামে একজনকে ঘটনার পরের দিনই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কুমিল্লার ওই ঘটনার জেরে চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, সিলেট ও রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। আহত হন অনেকে।

এর মধ্যে গত রোববার রাতে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে রংপুরের পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের উত্তর পাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ২৩টি বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬০টি পরিবার।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এ ঘটনার হোতা সৈকত মন্ডল আগে থেকেই ফেসবুকে সহিংসতামূলক নানা পোস্ট দিয়ে আসছিল। ছাত্রলীগ নেতা সৈকতকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১