বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৫ জুন ২০২২

৬ মাসেও হয়নি বাঁধ সংস্কার, বাড়ছে আতঙ্ক


পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতা ও কর্মকর্তাদের অবহেলায় ছয় মাসেও সংস্কার করা হয়নি কুষ্টিয়ার কুমারখালী শহর রক্ষাবাঁধ। এতে আতঙ্কিত শহরের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। হুমকির মুখে পড়েছে তিনটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ৬ মাসেও সংস্কার হয়নি শহর রক্ষা বাঁধ। এখন গড়াই নদে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে মানুষের বাড়ছে আতঙ্ক। ভরা বর্ষার আগেই দ্রুত পাথর দিয়ে সংস্কার করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, 'ভাঙনরোধে কিছু বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ ভাঙনরোধ করা হয়নি এখনও। এবারও বাকী অংশে জিও ব্যাগ ফেলা হবে। স্থায়ী ভাঙনরোধের জন্য প্রকল্প পাশ হয়েছে। আগামী (২০২৩ সাল) শুষ্ক মৌসুমে পাথর দিয়ে বাঁধ দেওয়া হবে।'

মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, গড়াই নদের কবল থেকে কুমারখালী শহর রক্ষার জন্য পাথরের বাঁধ রয়েছে। সেই বাঁধের ইকোপার্ক এলাকায় বেশখানেকটা ভাঙা রয়েছে। ভাঙার নিচের (পানি) কিছু বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা রয়েছে।

জানা গেছে, গড়াই নদের তীরঘেসে ১৮৬৯ সালে কুমারখালী পৌরসভা গঠিত। পৌরসভায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বসবাস। ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পসহ পৌর এলাকায় দিনেদিনে গড়ে উঠেছে শতশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।আর নদ থেকে পৌরবাসীকে রক্ষা করতে নির্মাণ করা হয়েছিল পাথরের বাঁধ। কিন্তু সেই বাঁধের ইকোপার্ক এলাকায় প্রায় ছয় মাস আগে ভাঙন লেগেছে। ভাঙনের কিছুদিন পর কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। কিন্তু এতে পুরো ভাঙন সংস্কার হয়নি। এখন নদে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সংস্কারের উদ্যোগ নেই। ভরা মৌসুমের আগেই বাঁধ সংস্কার না হলে বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে কুমারখালী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম রফিক বলেন, ' ৬ মাস আগে বাঁধ ভেঙেছে। বারবার উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। কিন্তু বাঁধ সংস্কার হয়নি। এতে আতঙ্কিত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। হুমকির মুখে তিনটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। '

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন,'বাঁধ না থাকলে শহর থাকবে না। একথা সবাই জানে। তবুও কর্তাবাবুদের কেন হুস হচ্ছেনা, তা বুঝতে পারছি না। আমরা দ্রুত বাঁধের সংস্কার চাই।'

নদী পাড়ের বাসিন্দা গোলাম সরোয়ার বলেন, 'পানি বাড়ছে। ভাঙনও বাড়বে। বসতভিটা ও পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি। '

শেরকান্দি পৌরপাড়ার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান। তিনি পেশায় একজন চটপটি ব্যবসায়ী। প্রতিদিনই বিকেলে ইকোপার্কে ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ' ভাঙন নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। রাতে আতঙ্কে ঘুম আসেনা। এত গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ। কেন সংস্কার করা হলোনা এতদিনেও, তা বুঝতে পারছিনা।'

শহরের স্বনামধন্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান লালু বলেন, শহর রক্ষার প্রাণ হলো ইকোপার্ক এলাকার বাঁধ। সেই বাঁধ ভেঙে আছে, অথচ কারো কোনো মাথা নেই। বাঁধ নিয়ে ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানায়।'

কুমারখালী পৌরসভার মেয়র সামছুজ্জামান অরুন বলেন, 'বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। দ্রুত সংস্কার না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আবারো কথা বলা হবে।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ' বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। গুরুত্বসহকারে তাঁদের জানানো হয়েছে। ডিসি স্যার ও পাউবো কর্মকর্তাদের ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করানো হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা দেখছেন।'

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন,'কুমারখালী শহর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প পাশ হয়েছে। আগামী শুষ্ক মৌসুমে পাথর দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এবছর জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙনের বাকি অংশ ভরাট করা হবে।'


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১