আপডেট : ২৫ জুন ২০২২
চাঁদপুরের মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে ত্রিশের অধিক চরাঞ্চলসহ জেলার ৮ উপজেলায় খামারি এবং ব্যাক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই বছরজুড়ে গবাদি পশু পালন করেন। পালন করা এসব পশু থেকেই প্রতিবছর কোরবানির অধিকাংশ চাহিদা মিটে থাকে। এছাড়াও কোরবানির হাটে জেলার বাইরে থেকে পশু আমদানি হয়। তবে গত কয়েক বছর জেলার অভ্যন্তরে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন অনেকে। এসব খামারগুলোও এখন কোরবানির পশুর চাহিদায় পূরণে ভূমিকা রাখছে। কোরবানির জন্য ৭০ হাজার পশুর চাহিদা। মে মাস পর্যন্ত ৬৯ হাজার প্রস্তুত আছে। ইতোমধ্যে কোরবানির হাটগুলো প্রস্তুত হতে শুরু করেছে। এ বছর জেলায় প্রায় দুই শতাধিক কোরবানির পশুর হাট বসবে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চাঁদপুরের মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় অধিকাংশ মানুষ কৃষি, পশু পালন ও মৎস্য আহরণ করে জীবীকা নির্বাহ করেন। মূলত চরাঞ্চল থেকেই অধিকাংশ কোরবানির পশু হাটে আসে। ব্যক্তি উদ্যোগে এবং খামারিদের পশু বিক্রির জন্য কোরবানির হাটকেই উপলক্ষ্য হিসেবে রাখেন। যার ফলে এখন খামারিরা তাদের বিক্রিযোগ্য পশুগুলো লালন পালন ও যত্ন নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার অনেকেই কোরবানির হাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে এক থেকে দু’মাস আগে জেলার বাইরে থেকে এবং বিভিন্ন হাট থেকে পশু কিনে অস্থায়ী খামার করেছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ৮ উপজেলায় তালিকাভুক্ত খামারী আছে ২হাজার ৬৩৪ জন। কোরবানির চাহিদার জন্য এসব খামারীদের পালনকৃত ষাড়, বলদ, গাভী, মহিষ ও ছাগল রয়েছে ৬৯ হাজার। গত বছর কোরবানি হওয়া পশুর সংখ্যা অনুযায়ী এ বছর চাহিদা ৭০ হাজার। চাঁদপুর জেলার সবচাইতে বড় পশুরহাট হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা বাজার। গত একসপ্তাহ ওই বাজারটিকে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ক্রেতাদের হাঁটার রাস্তা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে। বাজারের ইজারাদার অমল ধর জানান, বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের কর্মী রাখা হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর হাসিল কম ধরা হয়েছে এবং বিশেষ ক্ষেত্রে হাসিল ছাড় রাখারও নিয়ম রাখা হয়েছে। মেঘনা উপকূলীয় নিয়মিত গরুর হাট সদর উপজেলার সফরমালি বাজার। সেখানে প্রতি সপ্তাহে হাট বসে। কোরবানি উপলক্ষে গরুর আমদানি বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবছর গরুর দাম ১০-১৫% বেশী। যে কারণে ক্রেতার আসলে দেখে চলে যান, কিনতে চান না। চাঁদপুর শহরের সুইটি ডেইরি ফার্মের পরিচালক মো. ইব্রাহীম খলিল জানান, গত দুবছর করোনার কারণে আমাদের অনেক লোকসান হয়েছে। এখন বাজারে খাবারের দাম বেশী। যার কারণে খরচ হিসেবে করে দাম নির্নয় করলে বেশী হয়ে যায়। অনেকেই দেখতে আসেন কিন্তু কিনেন না। এখন আমাদেরকে কোরবানীর হাট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। একই ফার্মের শ্রমিক মজনু ও শাহাবুদ্দিন জানান, খামারে পালনকৃত গুরুগুলোকে গাসসহ দেশীয় বিভিন্নভাবে উৎপাদিত খাবার খাওয়ানো হয়। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মধ্যেই এসব গরুগুলো বেড়ে উঠে। ক্ষতিকারক কোন খাদ্যই খাবারে ব্যবহার হয় না। চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো. বখতিয়ার উদ্দিন জানান, জেলায় ২ হাজার ৬৩৪ জন খামারী রয়েছেন। তাদের সকলের ৫টির অধিক গবাদিপশু রয়েছে। যারা ১ থেকে ২টি গবাদিপশু পালন করেন এরকম প্রায় ৪২ হাজার গবাদিপশু রয়েছে। কোরবানীর জন্য এ বছর গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে ৭০ হাজার। মে মাস পর্যন্ত প্রস্তত আছে প্রায় ৬৯ হাজার। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি এ বছর আমাদের যে চাহিদা আছে তা মিটিয়ে অতিরিক্ত পশু থাকবে। এ বছর আমরা খুবই সুন্দরভাবে কোরবানি উদযাপন করব।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১