বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ইউটিউব ভিডিও দেখে মালচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সফলের আশা মামা ভাইগ্নার


ব.ম শামীম, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
ইউটিউবে ভিডিও দেখে মালচিং প্রদ্ধতি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার প্রায় ৪ একর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে শসা, টমেটো, বেগুন, মরিচ ও স্কোয়াস এর মতো সব্জির। সব্জিগুলো সবেমাত্র ফলন আসতে শুরু করেছে। ভালো ফলন হওয়ায় এ প্রদ্ধতিতে চাষে সফল হওয়ার আসা করছেন চাষি মামা ও ভাইগ্না। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার নিতিরা গ্রামের কৃষক আলি হোসেন তার মামা মজিবুর রহমান এর সহযোগীতায় শুরু করেছেন এই মালচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ। এর আগেও মামার পরমর্শে ক্যাপসিক্যাপ চাষ করে ভালো উৎপাদন করতে পারলেও বাজারজাত করনের সমস্যার করনে ক্যাপসিক্যাপ ছেড়ে এ বছর করেছেন সহজে বাজারজাতকরণ সব্জির চাষ। এ সমস্ত সব্জিতে কিটনাশক স্প্রে না করে সম্বলিত বালাই দমন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিষমুক্ত সব্জি এখানে উৎপাদিত হচ্ছে। মূলত পরাগায়নের জন্য ওই সমস্ত জমিতে মৌমাছি যাতে মারা না যায় এজন্য ওই জমিগুলোতে কিটনাশক ব্যবহার না করেই উৎপাদন করা হচ্ছে সব্জির। মালচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় জমির মাটি। পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়ায় আর্দ্রতা ধরে রাখে মাটি। আর মাটিতে আদ্রতা থাকায় একদিকে যেমন প্রচুর পরিমানে ফসল ফলে অন্যদিকে উৎপাদিত ফসলগুলোও হয় পুষ্টিগুন সম্পন্ন। মালচিং পেপার দিয়ে মাটি ঢেকে দেওয়ায় জমিতে তেমন আগাছা জন্মাইতে পারেনা। বালাই নাশকের ব্যাবহার করায় কিটনাশক স্প্রে করতে হয়না বললেই চলে। তাই এ প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ অনেকটাই লাভজনক।
সরেজমিনে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ভাটনিশার এবং পাশের লৌহজং উপজেলার বানকাইচ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ও এলাকার ১০ বিঘা জমিতে পলিথিনে ঢাকা বিস্তির্ণ ফসলের মাঠে ছোট ছোট ছিদ্র দিয়ে উঁকি দিচ্ছে ঝাপালো পাতাসহ সবুজ গাছ। ক্ষেতকে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার এই প্রযুক্তিকে বলা হয় কৃত্রিম মালচিং। মূলত মাটির আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ও আগাছা থেকে ক্ষেতকে রক্ষায় মালচিং পদ্ধতি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ফলন ভালো হয়। সারের পরিমাণ কম লাগে। গাছও দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সর্বপরি এ পদ্ধতিতে চাষে রোগ জীবাণু কম হয়।

এ চাষে প্রেরনা যোগানো মামা মুন্সীগঞ্জের কেকে স্কুলের শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, আমি মালচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদের অনেক ভিডিও ইউটিউবে দেখেছি। দেখে চিন্তা করলাম আমাদের দেশে যদি এ প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করা যায় তাহলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সেই চিন্তা করে আমার আত্নীয় স্বজন যারা কৃষি কাজ করে তাদের আমি মালচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য অনুপ্রেরণা দেই। আমার ভায়রা দির্ঘদিন যাবৎ আমার অনুপ্রেরনায় মালচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সফল হয়েছে। আমি এরপর আমার ভাইগ্না আলি হোসেনকে মাইচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করি। দুই বছর আগে আমি আর আমার ভাইগ্না আলি হোসেন মিলে ক্যাপসিক্যাপ উৎপাদন করি। উৎপাদন ভালো হলেও বাজারজাতকরন ঠিকমতো করতে না পারায় ক্যাপসিক্যাপ চাষে সফল হয়নি। এ বছর টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ভাইটনিশার এবং পাশের লৌহজং উপজেলার বাইনকাইচ মৌজার প্রায় ৪ একর জমিতে শসা, টমেটো, বেগুন, মরিচ ও স্কোয়াস চাষাবাদ করেছি। এতে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এ চাষে যেমন উৎপাদন বেশি হয় তেমনি পরিচর্যা করতে হয় বেশি। আমাদের জমিতে সব সময় নারী পুরুষ মিলিয়ে ১০ জন লোক কাজ করে। পুরুষ শ্রমিকদের মাসে ১৫ হাজার এবং নারী শ্রমিকদের ১০হাজার করে টাকা দিতে হয়। আমরা জমিতে পরাগায়নের জন্য মৌমাছি যাতে মারা না যায় সেজন্য তেমন কোন কিটনাশন ব্যবহার করিনা। চাষাবাদ সম্পর্কে ইউটিউবের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও ঔষধ কোম্পানী হতে ধারনা নেই। তবে এ বছর জমিগুলোতে ফলন আসতে শুরু করেছে আসা করি ভালো লাভবান হবো।

এ ব্যাপারে চাষি আলি হোসেন বলেন, মামার দিক নির্দেশনা মতো মালচিং প্রদ্ধতিতে চাষবাদ করেছি। জমিগুলোতে সবে মাত্র ফলন আসতে শুরু করেছে। ফলন বেশ ভালো হয়েছে আসা করছি এ প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করে ভালো লাভবান হবো।
এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়নুল আলম তালুকদার বলেন, মাইচিং প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে মাটি দির্ঘদিন আদ্রতা ধরে রাখে। একবার জমিতে পানি দিলে দির্ঘদিন আর পানি দেওয়ার প্রয়োজন হয়না। মাইচিং পেপার দিয়ে জমি ঢাকা থাকা আগাছা জন্মাতে পারেনা। এতে জমির খাবার নিয়ে আগাছা ও ফসলের যে প্রতিযোগীতা সেটা হতে ফসল রক্ষা পায়। যার কারনে জমিতে ফসলের ফলন বৃদ্ধি পায় এবং ফসলও রিস্টপুস্ট হওয়ায় ফসলের পুষ্টিগুনও বৃদ্ধি পায়। টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু জমিতে এ প্রদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। আমরা কৃষকদের এ প্রদ্ধতিতে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করছি।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১