বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৩

নীলফামারীতে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে কেজিতে ১২০ টাকা


তৈয়ব আলী সরকার নীলফামারী, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীতে মরিচ, পেঁয়াজ, আদা হলুদ ও সবজির দামের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগীর দামও। গত এক মাসে ব্রয়লারের কেজিতে দাম বেড়েছে ১২০ টাকা।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকালে জেলা শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, গত এক মাসে ব্রয়লার প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল ১২০ টাকা। এখন কেজিতে ১২০ টাকা বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ২৪০—২৫০ টাকা। একইভাবে পাইকারী বাজারে সোনালী মুরগী কেজিতে ২৪০ টাকা এখন তা ১১০ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৪০—৩৫০ টাকা।
এদিকে, লেয়ার মুরগী গত এক মাস আগে পাইকারীতে ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। অপরদিকে, একইভাবে এক কেজি কাটা ব্রয়লার মাংসের দাম ছিল ২৪০ টাকা বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে ক্রেতারা ৬০ টাকা ঠকছে। একইভাবে ডিম ও সবজির দামও হুঁ হুঁ করে বেড়েই চলছে।
জেলা শহরের কিচেন মার্কেটে জেলা সদরের লক্ষিচাপ ইউনিয়নের দুর্বাছড়ি গ্রামের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম (৫৫) ব্রয়লারের গোস্ত কিনতে এসে জানান, ‘আইজ সবেবরত গোস্ত নিবার আসি দেখো দাম বেশী, ঘুরাঘুরি করি ব্রয়লার পা নিবার চাওছো, তা আধা কেজি দাম চায়ছে ৯০ টাকা। আর মোটটে আছে ৫০ টাকা। এই বাদে পা না নিয়া ঘুরি যাওছো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গোটাল মুরগিতো দূরের কথা পাও কিনির পাইশা নাই। গরীব হওয়া কপালের দোষ।’
একই উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের অটোচালক তাইজুল ইসলাম (৩৫) মুরগী কিনতে এসে জানান, অল্প আয়ের মানুষের অবস্থা ভাল না। বাজারের যে অবস্থা ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগীর দাম গত এক মাসের চেয়ে প্রতিকেজিতে বেড়েছে ১২০—১৩০ টাকা। একমাস আগে ১২০ টাকায় এককেজি ব্রয়লার পাওয়া যেত আর এখন বয়লারে কেজি ২৫০ টাকা আর কাটা ব্রয়লারের গোস্তর কেজি ৩০০ টাকা। আমাদের মতো লোকের গোস্ত দেখি থাকির নাকবে। রোজা মাস যে কি হবে তা বলা যায় না।
একই বাজারে জাহিদ (৪৫) নামের এক ব্যক্তি জানান, ‘আজ সবেবরাত মা অসুস্থ তাই মায়ের গরুর মাংস চলেনা, এ জন্য আধা কেজি লেয়ারের মাংস ২২০ টাকা নিলাম। কি বলবেন ভাই মুরগির পায়ের কেজি ১৬০ টাকা এবং ডানা পাখনার কেজি ১৪০ টাকা। বেঁচে থাকার উপায় নেই।’
জেলা শহরের ভাই ভাই পোল্টি্র ফার্মের আড়তদার জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘মুরগির খাবারসহ বাচ্চার দাম বেশী। খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সরবারহ কমেছে। আজকে সবেবরাত তাই চাহিদার চেয়ে সরবারহ কম থাকায় প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ১২০—১৩০ টাকা। তিনি বলেন, মুরগীর প্রধান খাদ্য সামুক ঝিনুক, লবন ও ভূট্টার দাম বেড়ে যাওয়া খামারীরা মুরগি পোষা বন্ধ করছে। একারণে বাজার গরম। এতে আমাদের বিক্রিও কমেছে।’
ওই মার্কেটের কাটা মাংসের দোকানদার মোখলেছার (৪৮) রহমান জানান, ‘মুরগি কেজি প্রতি ১২০—১৩০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় কাটা মাংসের দামও কেজি প্রতি ৯০—১০০ টাকা বেড়েছে। এ জন্য ক্রেতার সংখ্যাও কমেছে। এক মাস আগে ১০০ থেকে ১৫০ কেজি মাংস বিক্রি হতো এখন সেখানে ১০০ কেজি মাংস বিক্রি হয় না। জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ খাওয়া কমে দিয়েছে।’
দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে নীলফামারী বড় বাজারের আড়তদার মশিউর রহমান জানান, এক মাস আগে এককেজি ফিডের (খাদ্য) দাম ছিল ৫৫ টাকা আর এখন তা কিনতে হচ্ছে ৭৫ টাকা। খামারীসহ দোকানদারা খাদ্যের দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছে। তাই চাহিদার চেয়ে সরবারহ কম থাকায় বাজারে লেয়ার, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগীর কেজিতে দাম বেড়েছে ১২০—১৩০ টাকা।
এ ব্যাপারে, জেলা কৃষি বিপনন কর্মকর্তা এটিএম এরশাদ আলম খান জানান, কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরী করছেন। জিনিশ পত্রের দাম যাতে সাধারন মানুষের নাগালের বাহিরে না যায়, সেদিকে আমরা সর্বক্ষনিক নজর রাখছি। ইতোমধ্যে জেলার ডোমার ডিমলায় বাজার মনিটরিং করে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১