• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
রবিউলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

রাজনীতি

বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি সাবেক ও বর্তমান দুই সংসদ সদস্যের 

রবিউলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

  • লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৮ এপ্রিল ২০২২

'পুলিশের নির্যাতনে মারা যাওয়া' যুবক রবিউল ইসলাম খানের বাড়িতে এখনো চলছে শোকের মাতম। সারাক্ষণ প্রলাপ বকছেন মা সাফিয়া বেগম। নির্বাক বাবা দুলাল খান। আর ৭মাসের কন্যা সন্তানের মা রবিউলের স্ত্রী মনিরা আখতার স্বামী নেই এটা মেনেই নিতে পারছেন না। প্রতিবেশীরা জানায়, রাতে ও দিনে থেমে থেমে রবিউলের বাড়ি থেকে স্বজনদের ডুকরে কাঁদার আওয়াজ ভেসে আসে।

গত শনিবার দুপুরে রবিউলের হুহের মাগফেরাত কামনা করে পবিরাবের আয়োজনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে  লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু পুলিশের নির্যাতনে রবিউলের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন। 

রোববার বিকেলে সদর উপজেলার কাজীর চওড়া গ্রামে  নিহত রবিউলের বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নিয়ে তিনি এই দাবি জানান। 

এ সময় বিএনপি নেতা বলেন, ‘পুলিশের নির্যাতনে রবিউল ইসলাম খানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ যেন বাঘের কাছে ছাগল আদি দেওয়ার মতো একটি ঘটনা। কারণ, যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার সঠিক তদন্ত কি তারাই করতে পারে বা পারবে? সে জন্য দোষীর উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।’

লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব আরও বলেন, এই সরকার বিনা ভোটের সরকার। এই সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ কোনো স্তরেই কোনো ধরনের জবাবদিহি নেই। সে জন্য এমন জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। 

এর আগেরদিন শনিবার বিকালে নিহত রবিউল ইসলামের শোকাহত পরিবারকে সান্তনা দিতে এসে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এ মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেন। 

এ সময় জিএম কাদের বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুলিশ তদন্ত করলে নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ আছে। সহকর্মী বা বন্ধু হিসেবে তদন্তে প্রভাব পড়তেই পারে। তাই নিরপেক্ষ তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন। তবেই সঠিক তথ্য উঠে আসবে এবং প্রকৃত অপরাধিকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে।

জাপা চেয়ারম্যান স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করে বলেন, এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা আমাকে ব্যথিত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ জনগণের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান করা। অথচ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছেন প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে এটা করা ঠিক হচ্ছে না।  

এদিকে গত রোববার বিকালে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষে  সাধারন সম্পাদক জহুরুল হক টিটু নিহত রবিউল ইসলামের ৭ মাসের শিশু সন্তানের জন্য ফলমূল ও ঈদের পোশাক প্রদান করেন। এ সময় অন্যান্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিনগত রাতে বৈশাখী মেলায় জুয়া খেলা সন্দেহে রবিউল ইসলামকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পরে সদর হাসপাতালে রবিউলের মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারের দাবি পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের লাথিতে গোপনাঙ্গে আঘাত পান তিনি। এ ঘটনায় বিচার দাবিতে টানা দুই দিন মহাসড়কের অবরোধ করে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads