• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
লজ্জায় শেষ বাংলাদেশ

সংগৃহীত ছবি

খেলা

লজ্জায় শেষ বাংলাদেশ

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ এপ্রিল ২০২১

‘০%-১০০%’-এই হলো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাগতিকদের সাফল্যের আনুপাতিক হার। মানে বাংলাদেশ দল এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যত ম্যাচ খেলেছে, তার সবগুলোতেই স্বাগতিকদের হাছে হেরেছে। যাই হোক ‘বৃষ্টি বন্ধ না হলেই হয়তো ভালো হতো’-বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশের চাওয়া কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল এমনই। তাহলে অন্তত হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় তো ডুবতে হতো না! বৃষ্টি থেমেছে, ম্যাচ হয়েছে এবং সেটি মাত্র ১০ ওভারের। ব্যর্থতার চূড়ান্ত গভীরে ডুবে যাওয়া বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এই ১০টি ওভারও টিকতে পারলেন না। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অতীতের দায় শোধ করবে কী, উল্টো আরো বড় যন্ত্রণার শিল বিঁধলো বুকে।

অকল্যান্ডের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ৬৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে ১০ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ৪ উইকেটে করা ১৪১ রানের জবাবে লিটন দাসরা ৯.৩ ওভারে অলআউট হয়েছে মাত্র ৭৬ রানে। এতে আগেই সিরিজ হারানো বাংলাদেশ আরেকবার ডুবল হোয়াইটওয়াশের লজ্জায়। এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ।   

চোটের কারণে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন না। তাই ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ চলে আসে লিটন দাসের কাছে। যদিও নেতৃত্বের এমন ‘শুরু’ হয়তো চাননি তিনি, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। নিউজিল্যান্ডে ব্যাটিং ব্যর্থতা অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর আরো বাজেভাবে চেপে ধরেছে তাকে। এবার মুখোমুখি প্রথম বলেই আউট হয়েছেন লিটন।

১৪২ রানের কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই এলোমেলো বাংলাদেশ। টিম সাউদির করা প্রথম ওভারেই ২ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রমোশন পেয়ে ওপেনিংয়ে নামা সৌম্য সরকার আউট হয়েছেন ১০ রান করে। ৪ বলে ২ বান্ডারিতে সাজানো তার ইনিংসটি শেষ হয় বোলার সাউদির দুর্দান্ত রিটার্ন ক্যাচে।

 

সৌম্যর বিদায়ের পর ক্রিজে এসেই আউট লিটন। অর্থোডক্স প্যাডেল শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে সাউদির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। তাতে গোল্ডেন ডাকে শেষ হয় অধিনায়ক লিটনের ইনিংস। ২ বলে ২ উইকেট পেয়ে সাউদি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছেন।

খানিক পর ওপেনার নাঈম শেখও ধরেছেন প্যাভিলিয়নের পথ। ১৩ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ১৯ রান করে তিনি বিদায় নিয়েছেন টড অ্যাস্টলের বলে মার্ক চ্যাপম্যানের হাতে ধরা পড়ে। কঠিন লক্ষ্যে চাপে পড়া বাংলাদেশ আরো বিপদে পড়ে ২ বল পর ওই অ্যাস্টলের বলে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে। এই লেগ স্পিনারের দ্বিতীয় শিকার

নাজমুল হোসেন শান্ত। বোল্ড হয়ে ফেরার আগে তিনি করেন ৬ বলে ৮ রান।

সিরিজ আগেই হাতছাড়া হয়েছে। বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল শেষ ম্যাচটি জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। সেই লক্ষ্যটা ভীষণ কঠিন হয়ে পড়ে। বৃষ্টির কারণে কুড়ি ওভারের ম্যাচ ১০ ওভারে নেমে আসার পর ব্যাটিংয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে নিউজিল্যান্ডে। অকল্যান্ডে ১০ ওভারে স্বাগতিকরা ৪ উইকেটে করে ১৪১।

মাত্র ১০ ওভারের ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবেই নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা প্রত্যেকটি বল সীমানা ছাড়া করতে চাইবেন। তারা সেটি করেছেনও। আর তাদের সেই চেষ্টায় বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ‘প্রচেষ্টা’ অব্যাহত! অকল্যান্ডেও ক্যাচ মিসের মহড়া চলেছে বাংলাদেশের। অন্যদিকে চার-ছক্কায় বৃষ্টিতে ভাসিয়েছেন কিউই ব্যাটসম্যানরা।

দুই হাতের ফাঁক গলে বল বেরিয়ে গেছে রুবেল হোসেনের কাছ থেকে। বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হিসেবে পরিচিত মোসাদ্দেক হোসেনও নাম তুলেছেন ক্যাচ মিসের তালিকায়। আর সৌম্য সরকার দৌড়ে এসেও কেন বল তালুতে নিতে পারলেন না, সেটি সত্যিই যন্ত্রণাদায়ক।

কয়েক দফা বেঁচে গিয়ে ওপেনার ফিন অ্যালেন মাত্র ২৯ বলে করেছেন ৭১ রান। বিধ্বংসী ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১০ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায়। শেষ ওভারে তিনি আউট হন তাসকিন আহমেদের বলে।

বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসে নতুন জীবন পেয়ে আরো ভয়ংকর হয়ে উঠেছিলেন কিউই ব্যাটসম্যানরা। এমনিতেই শুরু থেকে তাণ্ডব চালিয়েছেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ফিল অ্যালেন। অনেক চেষ্টার পর বিধ্বংসী গাপটিলকে ফেরাতে পেরেছে সফরকারীরা। মেহেদী হাসানের বলে আফিফ হোসেনের হাতে ধরা পড়ার আগে ১৯ বলে ৪৪ রান করেছেন তিনি। ঝোড়ো ইনিংসটি কিউই ওপেনার সাজান ১ চার ও ৫ ছক্কায়।

ওয়ান ডাউনে নামা গ্লেন ফিলিপস অবশ্য বেশি দূর যেতে পারেননি। শাপমোচন করেছেন সৌম্য। এই ব্যাটসম্যানের ক্যাচটি তালুবন্দি করেছেন তিনি। শরিফুল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে ফিলিপস করেছেন ৬ বলে ২ ছক্কায় ১৪ রান। আর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রান আউট হয়েছেন ড্যারিল মিচেল (৬ বলে ১১)।

১০ ওভারের ম্যাচে বোলাররা তেমন কিছুই করতে পারেননি। সবাই রান খরচ করেছেন। তবে তাদের মধ্যে একটু মিতব্যয়ী ছিলেন শরিফুল, ২ ওভারে ২১ রান দিয়ে তার শিকার ১ উইকেট। সবচেয়ে বেশি খরচ মেহেদী হাসানের, ২ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ১ উইকেট। আর তাসকিন ২৪ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট। সপ্তম অধিনায়ক হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লিটন দাস। প্রথমবার টস করতে নেমেই জিতেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। টস জিতলেও ম্যাচে লজ্জার হার। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আরেকবার হোয়াইটওয়াশের লজ্জা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads