• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

ফুটবল

রাত পোহালেই ব্রাজিল আর্জেন্টিনা মহারণ

  • তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ১০ জুলাই ২০২১

বিশ্ব ফুটবলে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচই হলো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচকে ঘিরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ফুটবল অনুরাগীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এবার কোপা আমেরিকা কাপের ফাইনালে উঠেছে আবার এই দুই দল। দক্ষিণ আমেরিকার প্রধান ও জনপ্রিয়  ফুটবল আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটির জন্য দর্শকদের অপেক্ষার পালা ফুরিয়ে আসছে। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল রোববার ভোর ৬টায় মাঠে গড়াবে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সেরা দুই তারকা লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা আর নেইমার জুনিয়রের ব্রাজিল। মাত্র ৯০ মিনিটের ফুটবল যুদ্ধশেষে রচিত হবে কতই না ইতিহাস। এর আগে, সেমিফাইনালে ব্রাজিল ১-০ গোলে পেরুকে এবং আর্জেন্টিনা টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে কলাম্বিয়াকে পরাজিত করে।

কোপা আমেরিকার ঠিক পাশাপাশি সময়ে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। সেখানে আবার ইংল্যান্ড ও ইতালি ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। ইংল্যান্ড ও ইতালি দল দুটিও বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই দল। তাই বলে এই ম্যাচকে ঘিরে বিশ্ব কিন্তু দুই মেরুতে ভাগ হয়নি। এটা এ কারণে যে, ‘ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা’ ম্যাচের মহত্ত্ব ইংল্যান্ড ও ইতালিও স্বীকার করবে।

কোপা আমেরিকায় এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ১৫ বার শিরোপা জিতেছে উরুগুয়ে। ১৪ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। বর্তমান শিরোপাধারী ব্রাজিল ট্রফি জিতেছে ৯ বার। প্যারাগুয়ে, চিলি ও পেরু ২ বার করে এবং কলাম্বিয়া ও বলিভিয়া ১ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার এই টুর্নামেন্টে অঞ্চলটির ভেনিজুয়েলা ও ইকুয়েডর এখনো শিরোপা জিততে পারেনি। দক্ষিণ আমেরিকার আসর হলেও বিশ্বের অন্যসব মহাদেশ থেকেও এতে অংশ নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কোস্টারিকা, হাইতি, হন্ডুরাস, জ্যামাইকা, জাপান, মেক্সিকো, পানামা, কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

ব্রাজিল অনেক আগে থেকেই বিশ্ব ফুটবলের পরাক্রমশালী দল বলে বিবেচিত। জাদুকর পেলের চিত্তাকর্ষক নৈপুণ্য বিশ্বে ব্রাজিলের ওই শ্রেষ্ঠত্ব নির্মাণ করে। ব্রাজিল মোট পাঁচবার বিশ্বকাপ জয় করে, যেখানে পেলেই প্রতিনিধিত্ব করে তিনবার। ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ জয়ী তারকা পেলে। পেলের রাজত্ব যখন শেষ পর্যায়ে, তখন দিয়েগো ম্যারাডোনা নামের আরেক ফুটবল সম্রাটের আবির্ভাব ঘটে। বর্তমান সময়ের ফুটবল আকর্ষণ আবার তাকে ঘিরে সৃষ্টি হয়। অসাধারণ দক্ষতা দিয়ে ম্যারাডোনা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের হূদয়ে জায়গা করে নেন। ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার দুটি বিশ্বকাপ জয়ী দলের গর্বিত সদস্য। বিশেষ করে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে তিনি যে ফুটবলশৈলী প্রদর্শন করেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী ক্রীড়ামোদীরা স্মরণে রাখবে। ম্যারাডোনার সাথে আর্জেন্টিনাও হয়ে উঠে বিশ্ব ফুটবলপিপাসুদের ভালোবাসার ঠিকানা। আর এর ফলে ব্রাজিলের শ্রেষ্ঠত্বে দারুণভাবে ভাগ বসায় আর্জেন্টিনা। এবার সেই দুই দলের ফুটবল যুদ্ধে মুখোমুখি।

বর্তমানে বিশ্বের সেরা তিন ফুটবলারের দুই জন হলেন মেসি ও নেইমার। অপরজন পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। মেসি হলেন আর্জেন্টাইন ফুটবলের প্রাণভোমরা। আবার নেইমার ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের পরশপাথর। এবার কোপা আমেরিকা ফুটবলে তাদের শৈল্পিক নৈপুণ্যেই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছে। ‘নিজে গোল করা ও অপরকে দিয়ে গোল করানো’তে মেসি ও নেইমার অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন এবারের আসরে। দল হিসেবেও আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল খুবই শক্তিশালী। মেসি ও নেইমার ছাড়াও দুই দলেই বেশ কয়েকজন করে গুণী খেলোয়াড় রয়েছেন। সবমিলিয়ে ফাইনাল খেলা হবে দারুণ আকর্ষণীয় ও রুদ্ধশ্বাস।

এবার কোপা আমেরিকা নিয়ে সমর্থকদের উৎকণ্ঠা আকাশচুম্বী। লিওনেল মেসি কি অধরা শিরোপা ছুঁতে পারবেন, নাকি আবারও আক্ষেপ নিয়ে ফাইনালের মঞ্চ ছাড়বেন? রোমাঞ্চের পারদ বেড়েছে ফাইনালকে ঘিরে। ঘটনাবহুল কোপায় আলোচনা রেফারিং ইস্যুতে। এই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে কারা থাকছেন, সে নিয়েও আছে কৌতূহল। কোপা আমেরিকার আয়োজক সংস্থা কনমেবল জানিয়েছে, মেসি-নেইমারদের ফাইনাল ম্যাচের বাঁশি বাজাবেন উরুগুয়ের ৩৯ বছর বয়সী এস্তেবান ওস্তোজিচ। পাশাপাশি লাইন্সম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কার্লোস বারেইরো এবং মার্টিন সোপি। আর ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট (প্রযুক্তি) রেফারি হিসেবে থাকবেন আন্দ্রেস কুনহা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads