• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে কষ্টের বিদায় বাংলাদেশের

সংগৃহীত ছবি

ফুটবল

রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে কষ্টের বিদায় বাংলাদেশের

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ অক্টোবর ২০২১

বাংলাদেশকে ফাইনালে যাওয়া থেকে বঞ্চিত করলেন বিতর্কিত উজবেক রেফারি। বাংলাদেশের গোলরক্ষক জিকোকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে লালকার্ড দেখিয়ে নেপালের পক্ষাবলম্বনের প্রথম বড় প্রমাণ রাখেন রেফারি। এরপর বক্সের মধ্যে নেপালের একজন খেলোয়াড় বল হেড করতে গিয়ে শরীরের ব্যালেন্স ধরে রাখতে না পেরে মাটিতে পড়ে যান, সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির নির্দেশ দেন ওই রেফারি। এটা ছিল রেফারির নেপালের পক্ষাবলম্বনের দ্বিতীয় বড় প্রমাণ। এ ছাড়া প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময় যেখানে ছিল ৫ মিনিট, সেখানে রেফারি খেলিয়েছেন ৭ মিনিট। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে আরো কয়েক বার বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারি। সবমিলে রেফারির দায়িত্বহীনতা এবং পক্ষাবলম্বনের কারণে বাংলাদেশ বিদায় নিল সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসর থেকে।

মালদ্বীপের মালেতে বুধবারের গুরুত্বপূর্ণ লিগপর্বের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। ম্যাচটি ড্র হওয়ায় বাংলাদেশের পয়েন্ট হলো ৫।

ম্যাচের ৮৬ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ দল। ৮৭ মিনিটে উজবেকিস্তানের রেফারির পেনাল্টির এক বাঁশিই বাংলাদেশের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভেঙে দিল। রেফারির পেনাল্টির বাঁশি, পাশাপাশি ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষকে হলুদ কার্ড। পেনাল্টি থেকে নেপালের অঞ্জন বিষ্টা গোল করলে স্কোরলাইন ১-১ হয়। বাংলাদেশের ১৬ বছর পর সাফ ফাইনাল খেলার স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়। শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে মালে স্টেডিয়াম পরিণত হলো বাংলাদেশের ট্র্যাজেডি হিসেবে। গ্যালারিতে থাকা বাংলাদেশের সমর্থকরাও নিথর দাঁড়িয়ে রইলেন। প্রেসবক্সে থাকা বাংলাদেশি সাংবাদিকরাও নিশ্চুপ।

ম্যাচের ৭৮ মিনিট পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। বাংলাদেশ ফাইনালের পথেই হাঁটছিল। ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর বক্সের বাইরের বল ক্লিয়ার করতে এগিয়ে যান। ক্লিয়ার করতে গিয়ে তার হাতে বল লাগলে রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখান। ম্যাচের বাকি সময় বাংলাদেশ দশজন নিয়ে খেলে। বলটি জিকো হাতে ইচ্ছাকৃতভাবে লাগাননি। নেপালের এক খেলোয়াড়ের শটে তা জিকোর হাতে লেগে যায়। এটা কোনোভাবেই লাল কার্ড দেখানো বিষয় ছিল না। বড়জোর তাকে হলুদ কার্ড দেখাতে পারতেন রেফারি। কিন্তু তিনি যখন কোনো দলকে অন্যায়ভাবে সমর্থন করবেন, তখন তো আর কিছু বলার থাকে না।

জিকো লাল কার্ড দেখায় কোচ অস্কার দ্রুত কয়েকটি পরিবর্তন করেন। বিপলুকে বদলে সিনিয়র গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে নামান। ফরোয়ার্ড সুমন রেজার পরিবর্তে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদকে নামান। রানা নামার পরপরই একটি ফ্লাইং সেভ করেন। অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষক পেনাল্টি শটের সময় সঠিক দিক ঝাঁপ দিলেও সেভ করতে পারেননি। দশজন নিয়ে আর জেতা হয়নি বাংলাদেশের। ফলে চার ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে নেপাল সাফের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে আর বাংলাদেশ চার পয়েন্ট নিয়ে আবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল। ২০০৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশ আর কখনো ফাইনাল খেলতে পারেনি। গতবার নিজেদের মাঠে এই নেপালের কাছে হেরেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল।

এর আগে কোচ অস্কার ব্রুজন বাংলাদেশ ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে। ফলও মিলেছে মিনেট দশেকের মধ্যে। ম্যাচ শুরুর দশ মিনিট পরেই গর্জে উঠল মালে স্টেডিয়াম। বাঁ প্রান্ত থেকে রাকিব বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। নেপালের ডিফেন্ডার তাকে বাঁধা দিলে পড়ে যান। উজবেকিস্তানের রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজান। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি-কিক থেকে বক্সে জটলার মধ্যে হেড করেন সুমন রেজা। সুমনকে দুই ম্যাচ পর আবারন একাদশে সুযোগ দেন কোচ। সেই সুযোগের পূর্ণ ব্যবহার করেন সুমন। উত্তর বারিধারার হয়ে সদ্য সমাপ্ত লিগে সুমন ছিলেন দেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ সুমনের গোলেই ড্রেসিংরুমে ফেরে।

দ্বিতীয়ার্ধে নেপাল ম্যাচে ফেরার সব চেষ্টাই করেছে। গোলরক্ষক জিকো নেপালের ফরোয়ার্ডদের একের পর এক আক্রমণ প্রতিহিত করেছেন। ৫৫ মিনিটে বক্সের মধ্যে নেপালের ফরোয়ার্ড নবযুগ শ্রেষ্ঠার হেড সেভ করেন জিকো। আরো বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত সেভ করেন। ৭৮ মিনিটে তাকে লাল কার্ড দেখানোর ফলে বাংলাদেশ দশজনের দলে পরিণত হয়। রেফারির এই সিদ্ধান্তই বাংলাদেশের ফাইনালে ওঠার পথ বন্ধ করে দেয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads