• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ঈদযাত্রায় সড়কে প্রাণ গেছে ২২৪ জনের

সংগৃহীত ছবি

দুর্ঘটনা

ঈদযাত্রায় সড়কে প্রাণ গেছে ২২৪ জনের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ আগস্ট ২০১৯

এবারের ঈদ যাত্রায় সড়কে ২০৩ টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ২২৪ নিহত ও আহত হয়েছেন ৮৬৬ জন।

এছাড়া এবারে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ২৪৪টি দুর্ঘটনায় ২৫৩ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৯৮ জন।

আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। 

গত ৬ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ১২ দিনে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।  যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা ৪১টি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, ১১টি অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্ঘটনার সংবাদ পর্যবেক্ষণ করে ঈদযাত্রা প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবছর ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৭টি মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৩ শতাংশ।  অন্যদিকে পথচারীকে গাড়ী চাপা দেওয়ার কারণে  ৫২ দশমিক ২১ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। আর এই দুইটি ঘটনা  এড়ানো সম্ভব হলে সড়ক দুর্ঘটনা প্রায় ৮৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে ৬.৪০ শতাংশ। এছাড়া মৃত্যু ৬.২৫ শতাংশ ও  আহত ১.৫০ শতাংশ কমেছে।

গত ঈদের চেয়ে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো হলও এবারের ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য, যানজটের ভোগান্তি, রেলপথে সিডিউল বিপর্যয়, টিকিট কালোবাজারি, ফেরি পারাপারে ভোগান্তিসহ নানা কারণে যাত্রী হয়রানি বেড়েছে বলেও মনে করে সংগঠনটি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ঈদযাত্রার ১২ দিনে ৩৭ জন চালক, ৩ জন শ্রমিক, ৭০ জন নারী, ২২ জন শিশু, ৪২ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৩ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ৩ জন রাজনৈতিক নেতা, ৯শ যাত্রী ও পথচারী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।একই সময়ে রেলপথে ট্রেনে কাটা পড়ে ১১ টি, ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ১টি, ট্রেন যানবাহন সংঘর্ষে ১টি, ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যায় ১টি ঘটনায় মোট ১৩ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন।একই সময়ে নৌ পথে ২৪ টি ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ৫৯ জন নিখোঁজ ও ২৭ জন আহত হয়েছন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৬ সালে ঈদুল আজহায় ১৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২শ ৪৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৫৫ জন আহত হয়। ২০১৭ সালে ২১৪টি দুর্ঘটনায় ২শ ৫৪ জন নিহত ও ৬শ ৯৬ জন আহত হন। আর ২০১৮ সালে ২৩৯টি দুর্ঘটনায় ২৫৯ জন নিহত ও ৯৬০ জন আহত হন। এবার আগের বছরের তুলনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা দুটোই কমেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকার পরেও শুধু পরিকল্পনার অভাবে সড়কে অসংখ্য মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। পরিবহন খাতে চালক ও সহকারী, শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের পরও ঈদযাত্রায় ভাড়ানৈরাজ্য প্রতিবছর লক্ষ করা যায়। কর্মঘণ্টা ও বেতন নির্ধারিত না থাকায় ভাড়া নৈরাজ্যে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। পরিবহনশ্রমিকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা যতক্ষণ পর্যন্ত নির্ধারিত না হবে, তত দিন যাত্রীদের ভোগান্তি হবে এবং প্রতিবেদনও প্রকাশ করতে হবে। কর্মঘণ্টা ও বেতন ঠিক না থাকার কারণে ঈদের সময় বেশি আয় ও মুনাফার আশায় চালকেরা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। পাশাপাশি মালিকেরাও তাগাদা দিতে থাকেন। এর ফলে চালকেরা মাথায় টেনশন নিয়ে গাড়ি চালান।

সমিতির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭ জন চালক, ৩ জন শ্রমিক, ৭০ জন নারী, ২২টি শিশু, ৪২ জন শিক্ষার্থী, ৩ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ৩ জন রাজনৈতিক নেতা এবং ৯০০ যাত্রী ও পথচারী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সংঘটিত দুর্ঘটনার ২১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৫২ দশমিক ২১ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়া, ১৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এবং ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনায় পড়েছে।

এতে আরো দেখা গেছে, এসেছে, ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ বাস, ২৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-লরি-কাভার্ড ভ্যান, ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ মাইক্রোবাস, ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ অটোরিকশা, ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-ইজিবাইক এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads