• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
বাণিজ্যিক চাষাবাদে বড় হচ্ছে ফুলের বাজার

বাণিজ্যিক চাষাবাদে বড় হচ্ছে ফুলের বাজার

ছবি : বাংলাদেশের খবর

কৃষি অর্থনীতি

বাণিজ্যিক চাষাবাদে বড় হচ্ছে ফুলের বাজার

  • এস এম মুকুল
  • প্রকাশিত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ফুল হচ্ছে উচ্চ মূল্যমানএকটি কৃষিপণ্য। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও মননশীলতার প্রতীক এই ফুলকে ঘিরে জেগে উঠছে কৃষি অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা। উপহার, সংবর্ধনা, বিয়ে, গায়ে হলুদ, পূজা-পার্বণ এমনকি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আনুষ্ঠানিকতায় ফুলের ব্যবহার এখন জনপ্রিয় হচ্ছে। আধুনিক সমাজে ফুলের বহুমুখী ব্যবহারের কারণে শুধু শৌখিনতায় নয়- ফুল এখন বিরাট অর্থকরী ফসল।  বাংলাদেশে মানুষের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফুলের চাহিদাও বাড়ছে। উৎসবপ্রিয় বাঙালির জীবনে বিভিন্ন ধরনের উৎসব সারা বছর লেগেই থাকে। এসব উৎসবের আনুষ্ঠানিকতায় ফুলের গুরুত্ব বেড়েছে। ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, পহেলা বৈশাখে দেশব্যাপী ব্যাপক আয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠান যেন ফুল ছাড়া চলেই না। আধুনিকমনস্ক মানুষের রুচির পরিবর্তনে এখন ঘরেও মানুষ তাজা ফুল রাখতে পছন্দ করে।

 

অর্থনীতিতে অবদান বাড়ছে

সময়ের চাহিদার আলোকে দেশের অর্থনীতিতেও ফুলের অবদান ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশে ফুলের বাণিজ্যিক প্রসার  খুব বেশি দিনের নয়। নব্বইয়ের দশকের আগে দেশের ফুলের চাহিদার প্রায় পুরোটাই ছিল আমদানিনির্ভর। বর্তমানে দেশে উৎপাদিত ফুল দিয়েই চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ মেটানো হচ্ছে। মাত্র দুই দশকের পথচলায় ফুল বাণিজ্য অভানীয় সাফল্য দেখিয়েছে। জানা গেছে, ১৯৮২-৮৩ অর্থ বছর থেকে দেশে ফুল অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এরপর থেকে বাড়ছে ফুলের বাণিজ্য। বাড়ছে কর্মসংস্থান। দেশের গণ্ডি বিদেশেও রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশের ফুল। আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। দেখা দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা।

 

দেশের বাজার ১২শ কোটি টাকার

কৃষিভিত্তিক পণ্য হিসেবে ফুলের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সারা পৃথিবীতে ফুলের বাজার প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে  দেশে সার্বিকভাবে ফুলের বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। একসময় শুধু যশোরে ফুলের চাষ হতো। জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ২০টি জেলায় কমবেশি ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে। গত চার দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদিত হচ্ছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয় যশোর ও ঝিনাইদহ  জেলায়। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, সাভার, গাজীপুর, সাভার, ময়মনসিংহ, রংপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার,  মেহেরপুর, রাঙামাটি, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, মানিকগঞ্জ ও নাটোর। তবে বাণিজ্যিকভাবে বেশি চাষ হয় গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস ও জারবেরা ফুল। ফুল ব্যবসায়ীদের হিসাবে দেখা গেছে, ফুল চাষ, পরিবহন ও বিক্রি মিলিয়ে ফুল ব্যবসার সঙ্গে প্রায় ২০ লাখ মানুষ জড়িত। জানা গেছে, বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু হয় আশির দশকে। ১৯৯১ সালে সরকার ফুলকে রফতানিযোগ্য পণ্যের তালিকাভুক্ত করে। বিভিন্ন জেলায় কমবেশি ২০ হাজারের খুচরা ফুল ব্যবসায়ী রয়েছেন। আর ঢাকায় আছে ৫০০শর অধিক ফুল বিক্রেতা।

 

কেন্দ্রীয় বিপণন কেন্দ্র ঢাকায়

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অধিকাংশ ফুলই ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিক্রি হয়। ঢাকার শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ে রয়েছে পাইকারি ফুলের বাজার। খুচরা বিক্রেতারা এসব জায়গা থেকে ফুল কিনে শহরে ছড়িয়ে পড়েন। ফুলের ব্যাপক চাহিদা ও বিরাট সুযোগ থাকার পরেও ফুল বিক্রির জন্য ঢাকায় কোনো কেন্দ্রীয় বাজার  নেই। যদিও কেন্দ্রীয়ভাবে ফুলবাজার নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন ফুল বিক্রেতারা। আশার খবর হলো, এরই প্রেক্ষিতে রাজধানীর গাবতলীতে প্রায় দেড় একর জমির ওপর দুইতলা ভবন নির্মাণের মধ্য দিয়ে ফুলচাষিদের জন্য স্থায়ী বাজার তৈরি হচ্ছে। ভবনটি হবে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে অবকাঠামো, সংরক্ষণ ও পরিবহন সুবিধার মাধ্যমে ফুল বিপণনে সহায়তা প্রদান প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। ২০২২ সালের জুন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

বিদেশি ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে

বাংলাদেশে ফুলের সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে। বিশ্ববাজারে অনেক জাতের ফুল আছে। কিন্তু দেশে ফুলের বেশি একটা জাত নেই। দেশে প্রতিনিয়ত ফুলের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশ থেকে ফুল এনে চাহিদা মেটাতে হয়। এই অবস্থা কাটাতে দেশে বিদেশি ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ানো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফুলচাষিরা বিদেশি ফুলচাষে অধিক লাভ পাওয়ায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ধারণা করা হচ্ছে এই উদ্যোগ পুরোমাত্রায় বাস্তবায়িত হলে সারা বছর বিদেশি প্রজাতির বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করে দেশের চাহিদা মেটানোর রফতানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির মতে, রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকার মতো ফুল চাষে দেশের কৃষকরা অনেক আগে থেকেই সিদ্ধহস্ত। এখন তাদের জমিতে ফুটছে জাবেরা, গ্লাডিওলাসের মতো আমদানি-বিকল্প ফুল। এমনকি অর্কিডও আবাদ হচ্ছে দেশে। তাই এখন আর মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে ফুল আমদানি করতে হচ্ছে না। কৃষকদের মাধ্যমে বিদেশি ফুল চাষ প্রসারে এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষ বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মেটাল অ্যাগ্রো লিমিটেড। জাপান থেকে সরাসরি বীজ এনে তা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে তারা। পঞ্চগড়সহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় দীর্ঘদিন ধরে শীত মৌসুম চলে। এই শীতকে কাজে লাগিয়ে বছরের বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলে শীতকালীন ফুল চাষ করা সম্ভব। বিশেষ করে শীতপ্রধান দেশ থেকে উন্নত প্রজাতির ফুলের বীজ এনে দেশে তা প্রসার ঘটালে উত্তরাঞ্চলে ফুল চাষে বিপ্লব ঘটাতে পারে।

সংরক্ষণাগার হচ্ছে যশোরে

দেশে ফুল চাষের জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত অঞ্চল যশোর। গোলাপ, রজনীগন্ধা, জারবেরাসহ ১১ প্রজাতির ফুল সারা বছর চাষ হয় এখানে। কিন্তু বিশেষ বিশেষ দিবস ঘিরে ভালো ব্যবসা করলেও বছরের অন্যান্য সময় ফুল সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাব ও ন্যায্য দাম না পেয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চাষিদের। এ অবস্থায় ফুলচাষিদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে ফুলের বিশেষায়িত বাজার ও সংরক্ষণাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। জানা গেছে, কৃষি উন্নয়ন অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় ফুলের বাজারটি নির্মাণ করা হবে।  সেখানে আধুনিক মোড়কীকরণের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা হবে ফুলের বাজারজাত প্রক্রিয়ায়। এর ফলে শ্রমের ন্যায্যমূল্যও পাবেন চাষিরা। গদখালীর বিশেষায়িত ফুলের বাজার ছাড়াও যশোরের গ্রামাঞ্চলে আরো ১২টি আধুনিক বাজার ও ১২টি কালেকশন সেন্টার নির্মাণ হবে এলজিইডির কৃষি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়। এসব বাজার ও সেন্টারে চাষিদের উৎপাদিত সবজি ও ফুল আনা-নেওয়ার সুবিধার্থে নির্মাণ করা হচ্ছে ১০০ কিলোমিটার রাস্তা। ২০১৯ সালের মধ্যেই সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে কৃষকদের নিরাপদ ফুল ও সবজি উৎপাদনে সহযোগিতা করা হবে।

 

ফুলের রাজধানী গদখালী

যশোর থেকে বেনাপোলের দিকে যেতে ছোট জনপদ গদখালী। ঝিকরগাছা উপজেলা সদর থেকে পশ্চিমে অবস্থিত এই জনপদটির মাঠের যেদিকে চোখ যায় শুধু ফুল আর ফুল। এখানকার প্রায় ৪০টি গ্রামে উৎপাদিত হয় রজনীগন্ধা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস ও জারবেরাসহ বিভিন্ন ফুল। অন্যান্য অর্থকরী ফসলের পাশাপাশি ফুল চাষ করেও যে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া যায় তা করে দেখিয়েছেন গদখালীর মানুষ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গদখালীতে ফুলের চাষ শুরু হয় ফুলচাষি শের আলীর হাত ধরে। ১৯৮৩ সালে তিনি ভারত থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের বীজ এনে গদখালীতে চাষ শুরু করে। পরে তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে গ্রামের অন্য কৃষকরা শুরু করেন তাদের ফুল চাষের বিপ্লব। শের আলী এরপর সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে অনেক ফুলের বীজ সংগ্রহ করে চাষ করেন। এখন ঝিকরগাছার দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে কমপক্ষে সাত হাজার মানুষ। এখানে বিঘাপ্রতি মৌসুমে কৃষকরা আয় করেন প্রায় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। ১৯৮৩ সালে যশোরে গদখালীতে মাত্র ৩০ শতক জমিতে রজনীগন্ধা ফুল চাষের মাধ্যমে দেশে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ ও বিপণন শুরু করেন কৃষক শের আলী সরদার। এখন সেখানে মাঠের পর মাঠজুড়ে দেখা যায় নানা রঙের, বর্ণের ও জাতের ফুল। বর্তমানে গদখালীর ৭৫টি গ্রামের পাঁচ হাজার চাষিসহ পাঁচ লাখ মানুষ ফুল উৎপাদন ও বিপণনে জড়িত। এখানকার উৎপাদিত ফুলের ৪০ শতাংশ ঢাকার খামারবাড়ি পাইকারি বাজারে এবং ৬০ শতাংশ সারা দেশে সরবরাহ হয়। সারা দেশে চাহিদার ৭০ শতাংশ ফুল এ অঞ্চলে উৎপাদন হয়। তবে যশোর ছাড়াও বর্তমানে ঢাকার সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা প্রভৃতি অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ করা হচ্ছে।

সময় পরিক্রমায় পথ দেখানো সেই গদখালীকে এখন ফুলের রাজধানী বলা হয়। ফুল চাষে শের আলী সরদারের ব্যাপক অবদানের জন্য তাকে স্থানীয়ভাবে ফুল চাষের জনকও বলা হয়। সারা দেশে যে ফুল উৎপন্ন হয় তার অন্তত ৭০ ভাগ হয় এই গদখালীতেই। আশির দশকে যে গদখালীতে এক বিঘা জমিতে ফুলের চাষ হয়েছিল, সেখানে এখন প্রায় ১৮শ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ হচ্ছে। তবে ঝিকরগাছার গদখালী এলাকা ছাড়া পার্শ্ববর্তী শার্শা উপজেলায়ও ফুল চাষ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ফুলচাষিরা বলছেন, বর্তমানে ওই এলাকায় প্রায় ৪ হাজার বিঘা জমিতে ফুলের চাষ হচ্ছে। এসব জমি থেকে ভরা মৌসুমে প্রতিদিন অন্তত ২ লাখ রজনীগন্ধার স্টিক, ৪ লাখ গাঁদা ফুল, ৩০ হাজার গোলাপ, ৫০ হাজার গ্লাডিওলাস ফুলের স্টিক উৎপন্ন হয়। অন্যান্য জাতের ফুল উৎপন্ন হয় প্রায় ৩০ হাজার।

 

রফতানি বাজারে সম্ভাবনার হাতছানি

বাংলাদেশ থেকে ফুল এখন রফতানি হচ্ছে।  পরিমাণে কম হলেও সবজির সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে কিছু ফুল আমাদের  দেশের রফতানিকারকরা পাঠিয়ে থাকেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়া ও জাপানে বাণিজ্যিকভাবে ফুল রফতানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ফুলের বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুল বাংলাদেশের রফতানি তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। জানা যায়, ১৯৯১-৯২ বছর থেকে ফুল রফতানির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাংলাদেশের কাঁচা ফুল মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, ব্রিটেন, পাকিস্তান, ভারত, ইতালি, কানাডা, চীন, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ফ্রান্সে রফতানি করা হচ্ছে। বিশ্বে ১৬ হাজার কোটি ডলারের বিশাল ফুলের বাজারে আরো বড় আকারের রফতানি প্রবেশের সুযোগ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্যে। তবে উদ্যোক্তাদের অভিমত, কাঁচা ফুল রফতানি করে ৫০০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।

 

দরকার সরকারের সুনজর

ফুল চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগোনোর জন্য এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশে উৎপাদিত ফুল বিদেশে রফতানির জন্য প্যাকেজিং ব্যবস্থার উন্নয়ন, হিমাগার স্থাপন, ফুলের নতুন নতুন জাত উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।  সেই সঙ্গে সম্ভাবনাময় ফুলশিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এর সঙ্গে জড়িত কৃষক ও উদ্যোক্তাদের স্বল্প হারে ঋণ সুবিধা প্রদান, আধুনিক প্রযুক্তি প্রাপ্তি ও ব্যবহারের প্রশিক্ষণ, উন্নত ও নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ করা, ওয়্যারহাউজ ও  কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ এবং সর্বোপরি অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। ফুলচাষিদের অভিযোগ- প্রশিক্ষণের অভাব, মানসম্মত বীজের স্বল্পতা, উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার অভাব প্রভৃতি কারণে ফুলশিল্পে আশানুরূপ উন্নতি করা যাচ্ছে না। দেখা গেছে, পরিবহন ব্যবস্থার অভাবের কারণে অনেক সময় ফুল পচে বড় ধরনের ক্ষতি সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যার সমাধান করা গেলে ফুলের উৎপাদন ও রফতানি বাড়ানো সম্ভব হবে। ফুল রফতানিকারকদের মতে, এ পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়েছে। ফুল দু-একদিন তাজা থাকে, তারপর নষ্ট হয়ে যায়। এ অসুবিধা দূর করার জন্য ফ্রিজার ভ্যানের প্রয়োজন। তাহলেই এ খাতে রফতানি বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

 

লেখক : কলাম লেখক ও উন্নয়ন গবেষক

writetomukul36@gmail.com

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads