• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

কৃষি অর্থনীতি

বোরো সংগ্রহের সরকারি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি

সময় বেড়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত

  • নাজমুল হুসাইন
  • প্রকাশিত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

এ বছর বোরা ধানের দাম না পেয়ে দিশাহারা ছিল কৃষক, এরপরও পূরণ হয়নি সরকারের ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা। শুধু ধানই নয়, সিদ্ধ চাল সংগ্রহেরও ঘাটতি রয়ে গেছে। আর এর মধ্যেই সংগ্রহের নির্ধারিত সময়ও পেরিয়ে গেছে। অবশেষে নতুন করে আরো ১৫ দিন (১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।

এ বছর বোরো মৌসুমে প্রান্তিক কৃষকের কাছে চার লাখ টন ধান সংগ্রহের কথা ছিল। আর এ জন্য সময় নির্ধারিত ছিল ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ে ধান সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ৭১ হাজার টন। অন্যদিকে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চালের সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এ পর্যন্ত সংগ্রহের পরিমাণ ৯ লাখ ৪৯ হাজার টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে এখনো ২৯ হাজার টন ধান ও ৫১ হাজার টন চাল সংগ্রহ করতে হবে সরকারকে।

এ বিষয়ে অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগের পরিচালক জুলফিকার রহমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অল্প কিছু ধান-চাল সংগ্রহ বাকি রয়ে গেছে। এ কারণে সময় বাড়িয়ে সংগ্রহ কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। তিনি জানান, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত ধান সংগ্রহ চলবে। এছাড়া গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে চাল সংগ্রহ বন্ধ করা হলেও তা আগামী ৮ তারিখ থেকে আবার চালু করা হবে। চলবে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত।

এ বছর বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলন হওয়ার পরে সারা দেশে কমে যায় ধানের দাম। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিঘাপ্রতি ধানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয় কৃষকদের। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য এবং ধানের মূল্যবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সরকার ১০ থেকে ১৫ লাখ টন চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। তবে কোনো কার্যক্রমই পুরোপুরি সফলতার মুখ দেখেনি। বাংলাদেশ থেকে এখনো চাল রপ্তানির সম্ভব হয়নি। ফলে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহের দিকেই এগোনোর কথা বলা হলেও বাস্তবে সে কার্যক্রমও ব্যর্থ হলো।

তবে এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, আমাদের ধারণক্ষমতার কিছুটা সংকটের কারণে ধান-চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে ধীরগতিতে এগোতে হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম চলবে। এ বিষয়ে প্রত্যেক এলাকার কর্মকর্তাদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

এ বছর ২৬ টাকা কেজি দরে কৃষকদের থেকে বোরো ধান কিনছে সরকার। তবে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে কৃষকরা নির্দিষ্ট দামে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারেনি। স্থানীয় প্রভাবশালীরাই সরকারের কাছে এই ধান বিক্রি করেছে। যে কারণে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক কৃষি অধিপ্তরের এক অনুষ্ঠানে ধান কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এদিকে ৩৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের চাল কেনার কথা থাকলেও মিলাররা চুক্তি অনুযায়ী চাল সংগ্রহ করতে পারেনি বলে দাবি খাদ্য অধিদপ্তরের। তবে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে চাল দিতে না পারলেও তাদের বিরুদ্ধে অধিদপ্তর থেকে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার তথ্য নেই।

এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ৩ এপ্রিলের দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১৯ লাখ ৮৩ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এর মধ্যে চাল ১৬ লাখ ২৯ হাজার টন ও ৩ লাখ ৫৪ হাজার টন গম রয়েছে, যা স্বাভাবিক মজুতের তুলনায় বেশি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads