• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
পেঁয়াজ-চামড়ায় ছিল অস্বস্তি

ছবি : সংগৃহীত

বিশ্লেষণ

পেঁয়াজ-চামড়ায় ছিল অস্বস্তি

  • মো. রেজাউর রহিম
  • প্রকাশিত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

বছরের শুরুতে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং মন্ত্রিসভায় আনা হয় নতুনদের। ফলে বাদ পড়েন বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতা। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্ব পান রংপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ী টিপু মুনশি। তবে বছরটি তার ও তার মন্ত্রণালয়ের জন্য ছিল সংকটময়।

দেশের তৈরি পোশাক খাতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এ রাজনীতিককে মন্ত্রী হওয়ার পরপরই মোকাবেলা করতে হয় গার্মেন্ট খাতের শ্রমিকদের আন্দোলন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে এক প্রকার অস্বস্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার যাত্রা। বছরের মাঝামাঝি সময়ে পানির দামে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি, এমনকি দাম না পেয়ে ব্যবসায়ীরা নদীতে চামড়া ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। সর্বশেষ পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় মন্ত্রীর এবং মন্ত্রণালয়ের ইমেজ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক ও মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির পদত্যাগের দাবিও ওঠে বিভিন্ন মহলে। ফলে ২০১৯ বছরটি বেশ অস্বস্তির মধ্যে কাটে বাণিজ্যমন্ত্রীর।

কোরবানির চামড়া নিয়ে নাস্তানাবুদ

পেঁয়াজকাণ্ডে অসহায় মন্ত্রী

গত সেপ্টেম্বরে ভারত সরকার পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি করলে দেশে পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধিতে অসহায় হয়ে পড়েন বাণিজ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ঘাটতি পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে দেশে প্রতিবেশী ভারত থেকে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তবে এ বছর ভারতের মহারাষ্ট্র ও অন্য এলাকায় বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অজুহাতে দেশটি গত সেপ্টেম্বরে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস-এমইপি) নির্ধারণ করে। পরে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর দেশের বাজারে হুহু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। দফায় দফায় দাম বাড়তে বাড়তে রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারে একপর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫০-২৬০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। একপর্যায়ে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে মিসর, তুরস্ক থেকে কার্গো বিমানের মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করে সরকার। এ ছাড়া মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে টিসিবির মাধ্যমে সারা দেশে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম বাড়ানো হলেও পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পরে দেশজুড়ে বাজারে বাজারে অভিযান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসসহ কোনো কার্যক্রমই  পেঁয়াজের মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে পারেনি। আর শেষ ভরসা হিসেবে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার অপেক্ষায় থাকেন দেশের দিশেহারা ভোক্তারা। অবশেষে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার পর ডিসেম্বরের শেষার্ধে কিছুটা স্বস্তি ফেরে পেঁয়াজের বাজারে। এদিকে, পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা মুনাফা করার অভিযোগ ওঠে। এছাড়া অভিযোগ ওঠে নিজে ব্যবসায়ী হওয়ায় পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি বাণিজ্যমন্ত্রী। অবশ্য বাজার নিয়ন্ত্রণে তার কোনো গাফিলতি ছিল না বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে যুক্তি দেখান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে বলেন, যেসব মন্ত্রী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ, তাদের বাদ দেওয়ার সমম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত উল্লেখ করেন তিনি শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদে রদবদলের ইঙ্গিতও দেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads