থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে থাকা ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচের কাছে প্রায় দশদিন খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছাতে পেরেছে উদ্ধারকারীরা। এখন তাদের নিরাপদে বের করার উপায় খুঁজছেন তারা।
থাইল্যান্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গুহায় আটকে থাকা ১২ কিশোর ফুটবলার ও তার কোচকে বের করে আনার ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নিতে চাননা তারা। আটকে থাকা মানুষগুলো প্রায় দশ দিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো খাবার ও ওষুধ পেয়েছেন।
সাতজন ডুবুরী যাদের মধ্যে একজন ডাক্তার ও একজন নার্সও ছিলেন, তারা গুহার মধ্যে গিয়ে আটকে থাকা দলটির সাথে দেখা করেছেন। থাইল্যান্ডের উত্তরে ওই গুহার মধ্যে প্রায় নয়দিন ধরে আটকে থাকার পর মঙ্গলবার তাদের সন্ধান পায় উদ্ধার কর্মীরা।
একটি ফুটবল সেশন শেষে কোচের সঙ্গে গুহার মধ্যে গিয়েছিলো ওই ১২ কিশোর। কিন্তু এরপরই প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে তাদের বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। যে গুহায় তারা আটকা পড়েছে সেটি থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম গুহাগুলোর একটি।
উদ্ধারকর্মীরা তাদের খুঁজে পাওয়ার পর ভিডিও প্রকাশ করে থাই নৌবাহিনী এবং সেখানে দেখা যায় তারা সবাই জীবিত আছেন ও কথা বলছেন। এরপর তাদের কাছে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো সহজে হজম যোগ্য ও উচ্চ শক্তির খাবার আর ভিটামিন পৌঁছানো হয়।
চিয়াং রাই প্রদেশের গভর্নর নারংসাক ওসোত্তানাকর্ন বলেছেন তারা কোন তাড়াহুড়ো করতে চান না।
ওদিকে আরো বৃষ্টির কারণে সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ার কারণে গুহায় বাতাস ঢোকার পথগুলো হুমকির মুখে আছে।
প্রথম গুহায় আটকে পড়া দলটির বেশিরভাগই সাঁতার জানেনা যা পুরো উদ্ধার প্রক্রিয়াকে আরো জটিলতায় ফেলেছে। এর আগে থাই সামরিক বাহিনী বলেছে যে এদের প্রথমে সাঁতার শেখাতে হবে বা অপেক্ষা করতে হবে অন্তত চার মাস। নতুন করে বন্যার পানির কারণে যেন ঝুঁকি তৈরি না হয় সেজন্য পানি পাম্প করে বের করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর প্রদেশের গভর্নর গুহার মধ্যেই যেখানে ছেলেরা আটকে আছে সেখানে একটি অবকাঠামো তৈরির অনুরোধ জানিয়েছেন।
গুহার ভেতরের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে আটক ছেলেদের বের করে নিয়া আসা একটি ভয়াবহ বিপজ্জনক কাজ। থাম লুয়াং নামের ওই গুহাটি বর্ষায় নিয়মিতই বন্যার পানির সয়লাব হয়ে যায় যেটি চলে সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন গুহার মধ্যে বিপজ্জনক করিডোর, শূন্য মাত্রার দৃশ্যমান পানির কারণে অদক্ষ ডুবুরীদের নেওয়াও ঝুঁকির বিষয় হবে। উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত থাকা ডুবুরী বেন রেমিনেন্টস বিবিসিকে বলেছেন থাই নৌবাহিনীর দুজন চিকিৎসক স্ব:প্রণোদিত হয়েই আটকে থাকা ছেলেদের সঙ্গে পানি কমে না আসা পর্যন্ত অবস্থান করতে চেয়েছেন। আর অন্য আরেকটি টিম পাহাড়ের অন্যদিক থেকে গুহার ভিন্ন পথ খোঁজার কাজ করছেন।