• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
শত্রুর শত্রুকে নিয়ে ইমরানের সরকার গঠন

পাকিস্তানের নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

ছবি : সংগৃহীত

এশিয়া

শত্রুর শত্রুকে নিয়ে ইমরানের সরকার গঠন

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০১৮

পাকিস্তানের নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেছেন ৩২৯ সংসদ সদস্য। গতকাল সোমবার দেশটির নিম্ন কক্ষের ১৫তম সংসদ অধিবেশনের প্রথম কার্যদিবসে তারা শপথ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানের প্রভাবশালী ইংরেজি পত্রিকা ডনের বিশ্লেষণে শপথ গ্রহণের প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী জোটের শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। দুর্বল সরকার ও শক্তিশালী বিরোধী দলের মধ্যকার এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুবিধা কারা গ্রহণ করবে তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে দেশটির বুদ্ধিজীবী মহল।

৩৪২ সদস্যের নিম্নকক্ষে ৩২৯ জন নিয়ে শপথ গ্রহণ করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। বিদায়ী স্পিকার আয়াস সাদিক সংসদ সদস্যদের শপথ পাঠ করান। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শপথের পর নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান বিরোধী দলের নেতারা।

ডন তার বিশ্লেষণে বলছে, ক্ষমতাধর দুই বিরোধী দলের বিপরীতে রীতিমত দুর্বল সরকার গঠন করল ইমরান খান। পিএনএল-এন ও পিপিপি একে অন্যের প্রতিযোগী হলেও ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচনের এক সপ্তাহের মধ্যে ২ আগস্ট ‘মহাজোট’ গঠন করে দল দুটি। পার্লামেন্টের ভেতরে এবং বাইরে ভোট কারচুপির অভিযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা এ জোট করে। দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা এই দু’দলের ডাকে জোটে আসে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর জোট এমএমএ, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, পাখতুনখাওয়া মিল্লি আওয়ামী পার্টি, ন্যাশনাল পার্টি বেলুচিস্তান ও কওমি ওয়াতান পার্টি। যদিও জোট বাঁধলেও ইমরানের পিটিআইয়ের সঙ্গে কতটা পেরে উঠবে সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিলই। সেক্ষেত্রে মহাজোট ধর্মভিত্তিক কোনো উগ্রপন্থি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজশ করবে কি না তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করছে দেশীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারের গদি নড়ে ওঠার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

ডন বলছে, জোট গড়লেও বড় দল দুটি একে অন্যের প্রতিপক্ষ; যে সমীকরণকে কাজে লাগিয়ে ভোটের রাজনীতিতে এগিয়ে গেছেন ইমরান খান। ‘মহাজোটে’ প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সেই বিষয়টি আবারো সামনে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছেই, যা নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য আশীর্বাদ হয়েই দাঁড়াবে। বিশেষত, যেখানে বড় কোনো দলকে না পেয়ে ইমরানকেও প্রতিপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে জোট বাঁধতে হয়েছে। এর মধ্যে পিটিআইয়ের বিরোধিতাকারী করাচিভিত্তিক এমকিউএম। এ ছাড়া পিএমএল-কিউ দলের সদস্যদের যাদের ইমরান এর আগে ‘খুনি’ এবং ‘পাঞ্জাবের সবচেয়ে বড় ডাকাত’ বলে আখ্যায়িত করেছিল তারাও থাকছে পিটিআইর জোটে। যদিও এ দলগুলোর গ্রহণযোগ্যতা সাধারণ পাকিস্তানিদের কাছে বেশ কম। সেক্ষেত্রে ইমরানের পেছনে থাকা সামরিক শক্তি কতদিন তার সঙ্গে থাকবে! বিশেষত, ক্ষমতা গ্রহণের পর সেনাবাহিনীর মুঠোর মধ্য থেকে যদি ইমরান বেরিয়ে আসতে চান তাহলে তিনি কতক্ষণ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন সেটা প্রশ্ন করাও অবান্তর।

চারপাশের এত বৈরী অবস্থার মধ্যে ইমরান কীভাবে সরকার পরিচালনা করবেন এটাই এখন দেখার বিষয়।

 

বিশ্লেষণে আরিফা সুলতানা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads