• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপি

ছবি : সংগৃহীত

বাজেট

জিডিপির ৭ শতাংশ ছাড়াবে উন্নয়ন ব্যয়

২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ জুন ২০১৯

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশেই সীমাবদ্ধ সরকারের উন্নয়ন ব্যয়। প্রচলিত ধারা ভেঙে এবার উন্নয়নে জিডিপির ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা আগামী অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। প্রত্যাশিত জিডিপির তুলনায় এডিপির আকার দাঁড়াবে ৭ শতাংশ।

পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ প্রাধান্য ও স্থানীয় সরকার বিভাগে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে সম্প্রতি ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। এতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ও বিদেশি উৎস থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অবশ্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যয়ের ১২ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা যোগ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এডিপির আকার দাঁড়ায় ২ লাখ ১৫ হাজার ১১৪ কোটি টাকায়।

চলতি অর্থবছরের শুরুতে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার এডিপি প্রণয়ন করা হয়েছিল। এ হিসাবে নতুন বছরের এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ছে ৪২ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে এডিপির আকার বাড়ছে ২৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অবশ্য এবারের সংশোধিত বাজেটে এডিপি নামিয়ে আনা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকায়। সংশোধিত বাজেটের চেয়ে নতুন এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ছে ৪৮ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে বৃদ্ধির হার দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২৯ ভাগে।

অর্থমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় বাজেট উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এডিপিতে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সমতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং গুণগত ব্যয়ের বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ ছাড়ের প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর থেকে প্রকল্প পরিচালকরা প্রকল্পের চতুর্থ কিস্তির অর্থও বছরের শুরুতে হাতে পাচ্ছেন। আগে অর্থছাড়ের জন্য প্রকল্প পরিচালকদের এক থেকে দুই মাস অপেক্ষা করতে হতো। নতুন ব্যবস্থায় উন্নয়ন প্রকল্পের গতি ত্বরান্বিত হবে।

নতুন এডিপিতে বরাদ্দসহ অনুমোদিত ১ হাজার ৫৬৪ প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগ খাতের ১ হাজার ৩৫৮টি ও কারিগরি সহায়তা খাতের ১১৬ প্রকল্প রয়েছে। জাপান ঋণ মওকুফ সহায়তা তহবিলের  (জেডিসিএফ) একটি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে ৮৯ প্রকল্প থাকছে এডিপিতে।

আগামী অর্থবছরের এডিপিতে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় অগ্রাধিকার পাওয়া বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ ২৬ হাজার ১৭ কোটি টাকা। অগ্রাধিকারে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। এছাড়া শিক্ষা ও ধর্ম খাতে প্রায় ২১ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতে ১৭ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ১৫ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ১৩ হাজার ৫৫ কোটি, কৃষি খাতে ৭ হাজার ৬১৬ কোটি, পানিসম্পদে ৫ হাজার ৬৫৩ কোটি ও জনপ্রশাসন খাতে  ৫ হাজার ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে আগামী অর্থবছরের এডিপিতে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগে। বিদ্যুৎ বিভাগে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৬ হাজার ১৪ কোটি টাকা। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ পেয়েছে ২৫ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা। এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১৫ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা,  রেলপথ মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ৯ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৯ হাজার ২৭০ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ৮ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা, সেতু বিভাগ ৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা পাচ্ছে এডিপি বাস্তবায়নে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads