• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

বাঁকখালী নদীর পানিতেই বিশাল বাড়ি তৈরি করেছেন এক প্রভাবশালী

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

বাঁকখালী নদী

প্রতিরাতেই দখল হচ্ছে

  • মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • প্রকাশিত ৩১ মার্চ ২০১৮

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী প্রতিরাতেই দখল হচ্ছে। এক সময়ের খরস্রোতা এই নদীর দু’পারে পলি জমেছে। সেসব জমিতে গড়ে উঠছে প্রভাবশালীদের অট্টালিকা, চিংড়ি ঘের ও অন্যান্য স্থাপনা। নির্মিত বাড়ির দেয়ালে এখনো জোয়ারের পানি আসে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে কালেভদ্রে উচ্ছেদ অভিযান চলে। বাস্তবে তার কার্যকারিতা নেই।

ভূমি অফিসের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে নামে-বেনামে খতিয়ান সৃষ্টি করে অথবা আদালতে মামলা করে দখলদাররা নিজেদের অবস্থান আরো পাকাপোক্ত করেছে।  

কক্সবাজার শহরের নতুন বাহারছড়া এলাকার কলিম উল্লাহ বলেন, শনিবার বিকালে শহরের বাঁকখালী নদীর পারে হাঁটতে গিয়েছিলাম বহুদিন পর। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পারে কোথায় সামান্যতম জায়গা খালি নেই-সব দখল হয়ে গেছে।  কোথাও চিংড়ি ঘের, কোথাও বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঘেরা, আবার কোথায়ও ভবন নির্মাণাধীন।  কারো কারো সঙ্গে আলাপে জানা যায়- বাঁকখালী নদীর পারে তৈরি হওয়া এসব বাড়িঘরের জায়গাগুলো খতিয়ানভুক্ত জমি। অথবা সরকারের কাছে বন্দোবস্তর জন্য আবেদন করা হয়েছে। আবার কিছু আছে রাজনৈতিক আশ্রয়ে এসে বাড়িঘর করেছে। 

নূরপাড়া এলাকার আবদুল আজিজ বলেন, আমাদের জীবনে সবটুকু সময় কেটেছে এই নদীর পারে।  কয়েক বছর আগেও এই নদীতে আমরা সাঁতার কেটেছি, সেই নদীতে এখন দেখছি সব মানুষজনের বাসাবাড়ি।  আর সব কাজ চলে রাতের বেলায়, এমনকি প্রতিরাতেই দখল হচ্ছে বাঁকখালী।  দিনের বেলায় মানুষজন বা প্রশাসনের ভয়ে কাজ করতে না পারলেও রাতের বেলায় প্রচুর শ্রমিক দিয়ে বিশাল বাড়িঘর করছে অনেকে।   

সাতকানিয়া এলাকার বাসিন্দা হাজী সিরাজ এখন কক্সবাজারে থাকেন।  বাঁকখালীতে তার পাকা বাড়ির দেয়ালে এখনো জোয়ারের পানি আসে।  একই সঙ্গে তার পাশেই চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার ব্যবসায়ী জাকের পাইলিং করে বাড়ি নির্মাণ করছেন।  

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব বলেন, বাঁকখালী নদীর পার কোনোভাবেই ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি হতে পারে না।  আমি যোগদান করার আগে বাঁকখালী নদী দখলকারীর তালিকায় ছিল ৯০ জনের মতো, কিন্তু বর্তমানে সেটা তিনগুণ হবে।  আর আমাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের সহযোগিতায় নিয়মিত অভিযান চালানো হয়।  

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, কোনো সরকারি জমি সেটা নদী হোক বা অন্যকিছু, কোনো ব্যক্তি বিশেষ তা দখল করে রাখতে পারবে না।  আমি সে বিষয়ে খুব সতর্ক আছি, বিশেষ করে নদী উদ্ধারের ব্যাপারে আমার সর্বোচ্চ গুরুত্ব থাকবে।  আমি খুব দ্রুত বাঁকখালী নদীর বিষয়টি জেনে সেখানে কারা কীভাবে আছে দেখে কঠোর ব্যবস্থা নেব। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads