• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

উজান থেকে নেমে আসা পানিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে বগুড়ার চরাঞ্চলের নিচু এলাকা। গাইবান্ধায় তিস্তা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্রের চর ও নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। তিস্তা তীরবর্তী সুন্দরগঞ্জে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। পদ্মা ও পাগলায় পানি বেড়ে চাঁপইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়েছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গতকাল সোমবার বিকাল ৫টা নাগাদ সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী পাঁচটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মা নদীর। অপরদিকে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনার দাকোপে বিস্তীর্ণ এলাকায় ঢাকি নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

বাপাউবো জানায়, বিগত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর ফুলছরি পয়েন্টে পানির উচ্চতা ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ১৯ দশমিক ৮২ মিটার স্পর্শ করেছে। গত রোববার এই নদীর পানি বিপদসীমার ২ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও তা বেড়ে ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর সারিয়াকান্দি পয়েন্টে বিগত ২৪ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা স্থিতিশীল থাকলেও তা বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বর্তমানে ১৬ দশমিক ৭০ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে আর বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে এই নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে। নতুন করে বিপদসীমা ছাড়ানো এই পয়েন্টে গতকাল সোমবার পানির উচ্চতা ১৯ দশমিক ৫ মিটার।

এদিকে আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ী পয়েন্টে গতকাল সোমবার ১০ সেন্টিমিটার পানির উচ্চতা বেড়ে তা বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর ধলেশ্বরী নদীর এলাসিন পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার পানির উচ্চতা বেড়ে তা বিপদসীমা থেকে ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯৪টি পয়েন্টের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪টি পয়েন্টে আর কমেছে ৪৭টি পয়েন্টে।

বাপাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণে কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, মেঘনা নদীর উচ্চ অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানির উচ্চতা কমতে শুরু করেছে যা আগামী বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মার পানির উচ্চতা বেড়েই চলেছে তা মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ভারতের আসাম, হিমালয়, ত্রিপুরা ও সিকিমে গত এক সপ্তাহের ভারী বর্ষণের কারণেই এই নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আশার কথা হলো, গত শনি ও রোববার সেখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়নি। যে কারণে আগামী দুই-তিন দিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলেও পরবর্তী দিনগুলোয় উন্নতির দিকে যাবে বলে মনে করছি।

তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের তিন জেলার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতির দিকে গেছে। নতুন করে সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ঢাকি নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত ঢাকি নদীর ভাঙনে প্রায় ৪০০ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে পানখালী ইউনিয়নের খোনা গ্রামবাসীর। যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে ওই এলাকার বাঁধ। ফলে দিনরাত ভাঙন আতঙ্কে চলছে তাদের বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-২-এর প্রকৌশলী পলাশ ব্যানার্জি মুঠোফোনে বাংলাদেশের খবরকে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য প্রকল্পের মাধ্যমে ২৯ লাখ টাকা বরাদ্দে ৫৬০ মিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads