• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
লালফিতায় বন্দি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেতু

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ১৫ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণ কাজ

ছবি - বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

লালফিতায় বন্দি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেতু

  • রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কাজ শুরুর পর পেরিয়ে গেল ১৫টি বছর। মাত্র দুটি স্প্যান ঠায় দাঁড়িয়ে। পালিত হয়েছে অবরোধ-মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি। তবুও কোথায় যেন আটকে আছে সবকিছু। সেতুটির ভাগ্যের সিঁকে ছিঁড়ছে না কিছুতেই। কতিপয় প্রভাবশালীর ক্ষমতার লালফিতায় বন্দি হয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেতুটি। আর অপেক্ষার প্রহর গুনছে রাজধানীর উপকণ্ঠে রূপগঞ্জের লাখো মানুষ।

এ সেতু নির্মাণ হলে এলাকার মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যেত।  উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সেতুবন্ধ তৈরি হতো। কমত ঢাকার যানজট। একটি মাত্র সেতুর জন্য রূপগঞ্জসহ আশপাশের লাখো মানুষকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে রাজধানীতে যেতে হয়। অথচ এ সেতুটি হলে মাত্র ২০ মিনিটে এলাকার বাসিন্দারা ঢাকায় যেতে পারত। স্বাধীনতার পর থেকে সেতুটির কথা এলাকাবাসী শুনে এলেও গত ৪৭ বছরে এটির বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য দু’দফায় দরপত্র আহ্বানও হয়েছে। রাজধানীর সঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগের জন্য স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রামপুরা-কায়েতপাড়া সড়ক ও বালু নদে সেতু নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ’৭৫-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। ঢাকার সঙ্গে সহজে যোগাযোগের জন্য বালু নদের রূপগঞ্জ অংশের চনপাড়া, ইউসুফগঞ্জ ও ভোলানাথপুরে তিনটি সেতু হলেও এটার ভাগ্যে শুধু বঞ্চনা।  নারায়ণগঞ্জ সওজ সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত রামপুরা-কায়েতপাড়া সড়কের বালু নদে সেতুর অনুমোদন হয় ২০০১ সালে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৩ সালে। এক বছরের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব পান তৎকালীন ঠিকাদার জাহিদ হোসেন। ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে বরাদ্দ মেলে মাত্র ৫০ লাখ টাকা। এরপর আর কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ফলে দুটি স্প্যান নির্মাণের পর সেতুর নির্মাণকাজ থমকে যায়। সূত্রটি জানায়, নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সেতুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে এখন অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন। নতুন করে সাড়ে সাত কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা অনিশ্চিত।

রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, এটা আমাদের অধীনে নয়। সড়ক ও জনপথ বলতে পারবে। নারায়ণগঞ্জ সওজ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী (বিটিকান্তী) শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত নই। তবে বিষয়টি আমি দেখব।

স্থানীয়রা জানান, সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমি হুকুম দখল হয়নি। জমি মালিকদের দুটি নোটিসও দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত সেতুর দু’পাশের জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় এর বিরোধিতা করেন। খামারপাড়া এলাকার অশীতিপর বৃদ্ধ আউয়াল আলী বলেন, ‘একাত্তর সালের পর বাসাবো মাঠে এক জনসভায় শেখ মুজিব রামপুরা-কায়েতপাড়া রাস্তা আর বালু নদে বিরিজ (সেতু) কইরা দিব কইছিল। কত সরকার আইল-গেল, আমাগো স্বপ্ন পূরণ অইল না।’ বাগবাড়ী এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহম্মেদ রঞ্জু বলেন, ‘জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় সচেষ্ট। সেক্ষেত্রে নেত্রী এ সেতু নির্মাণ করবেন, এটা আমাদের আশা।’

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads