• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
গফরগাঁওয়ে আমন ধানের বীজে মিশ্রন

মিশ্র বীজের ধানের শীষ দেখাচ্ছেন কৃষক

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

বীজ ডিলারদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

গফরগাঁওয়ে আমন ধানের বীজে মিশ্রন

  • ময়মনসিংহ ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২১ নভেম্বর ২০১৮

চলতি  অগ্রাহায়ন মাসের প্রথম থেকেই আমন মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। এর পুর্বে ধানের থোর বের হলে কৃষকরা দেখতে পায়  একই জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের শীষ বের হচ্ছে। কিছু ধান পেকে মাটিতে পড়তে শুরু করে  আর অধিকাংশ ধানের শীষ কাচা থাকায় ধান মাড়াই করতে পারেনি কৃষকরা। এতে চরম বিপাকে পড়েন উপজেলার হাজার হাজার কৃষক। মারাত্মক লোকসান হয় তাদের। মিশ্রনের ফলে উৎপাদন হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। উপজেলার সর্বত্রই আমন ধানের মিশ্রন ও ভেজালের খবর পাওয়া গেছে। 

চরআলগী ইউনিয়নের মিড়া পাড়া এলঅকার ইদ্রিস আলী সরকার, খোকন সরকার, বলদী গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, মুঞ্জুরুল হক, খায়রুল ইসলাম বাঘবের কাজির হাটি গ্রামে মমতাজ অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএডিসির ডিলারদের নিকট হতে ক্রয় করা আমন বীজ ভেজাল মিশ্রন থাকবে তা আমরা কল্পনাও করিনি।  ডিলারদের  কারসাজিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা’। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার এ প্রতিবেধককে বলেন, ‘এ ধরনের কোন অভিযোগ আমি পাইনি।  যদি মিশ্রন হয়েও থাকে তাহলে উৎপাদনে কোনো ঘাটতি হবে না। এ উপজেলায় আমন ফসলের লক্ষ্য মাত্রা ধার্যকরা হয়েছে ২২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমি। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ৯০ হাজার মেট্টিক টন ধান। চলতি আমন মৌসুমমে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এবং যথা সময়ে বৃষ্টির হওয়ায় উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে’। তবে ক্ষতিগ্রস্থ  কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘বীজে ভেজাল বা মিশ্রন না হলে বাম্পার ফলন হতো’।

এদিকে বোরো মৌসুমের শুরুতে বীজ নিয়ে চলছে সীমাহীন অনিয়ম। বিএডিসি ইতিমধ্যে ৩৩ জন ডিলারদের মধ্যে ৩৫০ মেট্টিকটন বীজ বরাদ্ধ দিয়েছে। ৩৩ জনের প্রায় ১৫ জনের ডিলারের কোনো বীজ ব্যবস্থা বা দোকান নেই। তারা বরাদ্ধকৃত বীজ খুচরা দোকানদার বা অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। অনেক ডিলারদের কাছে বীজ পাওয়া যায় না, অথচ অবৈধভাবে অবাদে বিভিন্ন বাজারের দোকান গুলোতে বিএডিসি’র বীজ বিক্রি হচ্ছে। কোনো নিয়ম নীতি ও মনিটরিং নেই। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী বাজার হতে ধান ক্রয় করে বিএডিসি’র সীল মোহর লাগিয়ে প্যাকেটজাত করে বীজ বিক্রি করে কৃষকদের প্রতারিত করছে। এসব বীজে রয়েছে ভেজাল ও মিশ্রন। নিবন্ধিত ডিলার ছাড়া অবাধে ভেজাল ও মিশ্রন বীজ বিক্রির বিষয়ে রফিকুল ইসলাম লিটন ও আব্দুর রহমান নামে দু’জন ডিলার উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা অভিযোগে জানিয়েছেন, গফরগাঁও মধ্য বাজারের জসিম উদ্দিন নতুন বাজারের বাবুল, বুধিয়া মার্কেটের আব্দুল আওয়ালসহ উপজেলার সর্বত্র অবাধে বিএডিসি’র মোড়গে ভেজাল বীজ বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা মনিটরিং সেল এ ব্যাপারে নিরব।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, মশাখালী ইউনিয়নের মোমেনা নামে একজন ডিলার গত বছর অবৈধভাবে বীজ বিক্রি করে ট্রাকসহ ধরা পরেন। কোনো বিচার হয়নি। একই ইউনিয়নের শহিদুল্লাহ রিপনের কোনো দোকান নেই। এছাড়া লংগাইর ইউনিয়নের হাবিবুর, চাঁন মিয়া, চরআলগী ইউনিয়নের শামছুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, যশরা ইউনিয়নের হাফিজ উদ্দিন, পাঁচবাগ ইউনিয়নের তৈয়ব আলী, উস্থি ইউনিয়নের লিটন, সজিবসহ অন্তত ১৫ জন নিবন্ধিত ডিলালের কোনো বীজ ব্যবসা বা দোকান নেই। তারা মৌসুম আসলে বরাদ্ধকৃত বীজ  কৃষকদের কাছে বিক্রি না করে অতিরিক্ত দামে খুচরা ও ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে থাকে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads