• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
পাহাড়ে মা ও শিশুমৃত্যুর হার বাড়ছেই

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক মা। সঙ্গে নবজাতক

ছবি : সংগৃহীত

সারা দেশ

পাহাড়ে মা ও শিশুমৃত্যুর হার বাড়ছেই

  • রাঙামাটি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের নানা উদ্যোগের পরও পাহাড়ের ওঝা ও ধাত্রীদের অপচিকিৎসার কারণে রাঙামাটিতে গর্ভবতী মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছেই। গত এক বছরে রাঙামাটিতে ৫৫ নবজাতক ও ১০ জন গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু হয়েছে। পাহাড়ের কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামীণ সমাজে এখনো অনভিজ্ঞ ধাত্রীদের কারণে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে বলে জানান এলাকাবাসী।

রাঙামাটি সদরের দুর্গম গ্রাম কেল্লামুড়া। নৌ-পথে শহর থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেকের দূরত্ব ওই গ্রামের। গ্রামে পৌঁছে ঘণ্টাখানেক পাহাড়ি পথ বেয়ে পৌঁছতে হয় লুম্বিনী পাড়ায়। ওই পাড়ায় দুই হাজার পরিবারের বসবাস। শহরের আধুনিক কোনো সুযোগ-সুবিধা এখানে নেই বললেই চলে। গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা ও নবজাতক শিশুর চিকিৎসা বলতে পরিবারের কর্তাব্যক্তিদের প্রাচীন ধ্যান-ধারণা, আর প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি ওঝা দিয়ে প্রসব ঘটানো। গ্রামের প্রত্যেক পরিবার এ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত। তবে এতে প্রতিবছর গর্ভবতী মা ও নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে বলে জানান স্থানীয়রা।

বালুখালী ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার বিপ্লব ত্রিপুরা জানান, চিকিৎসক সঙ্কট, আর্থিক অসচ্ছলতা ও কুসংস্কারের কারণে পাহাড়ের গ্রামীণ এলাকায় গর্ভবতী মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে গর্ভবতী মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনি তারা অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার বলেন, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ রয়েছেন একজন। তাছাড়া গাইনি বিভাগের চিকিৎসকের পদটিও দীর্ঘদিন ধরে খালি। আর নবজাতকের মৃত্যু অথবা মাতৃমৃত্যু আসলে মূলত প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেকের গর্ভপাত করা হচ্ছে তা অদক্ষতার মাধ্যমে গর্ভপাত করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা অদক্ষতার মাধ্যমে গর্ভপাত করান, তারা জানেন না যে শিশু সন্তান স্বাভাবিক জন্ম হবে না অস্বাভাবিক জন্ম হবে। এ ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ অজ্ঞ। যে কারণে তারা বাড়িতে গর্ভবতী মাকে রেখে দেন এবং সেখানে গর্ভপাত করান। আর এমন সময় গর্ভবতী মায়েদের আমাদের হাসপাতালে পাঠানো হয় তখন আর কিছুই করার থাকে না। তখন হয়তো মাকে বাঁচাতে পারলেও নবজাতককে বাঁচানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই গর্ভবতী মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত রাখতে হলে হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ অথবা গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে যদি গর্ভপাত করানো হয়, তাহলে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, দুর্গম এলাকার সাধারণ মানুষদের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে

পাহাড়ে মা-শিশুর মৃত্যুর হার বাড়ছেই আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা গেলে পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকায় মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমে আসবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads