• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
শাহরাস্তিতে ভাসুরের ছুরিকাঘাতে আহত প্রবাসীর স্ত্রী নিহত, আটক ৩

নিহত কোহিনুর ও ঘাতক জহির (ডানে)

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

শাহরাস্তিতে ভাসুরের ছুরিকাঘাতে আহত প্রবাসীর স্ত্রী নিহত, আটক ৩

  • মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০১৯

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ভাসুরের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত প্রবাসীর স্ত্রী কোহিনুর আজ সোমবার ভোর ৪টায় চিকিৎসারত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় শাহরাস্তি থানা পুলিশ ৩জনকে আটক করেছে।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত ২টায় উপজেলার পৌর ১১নং ওয়ার্ডের ভাটনীখোলা বেপারী বাড়িতে সিঁদ কেটে ঘরে প্রবেশ করে সৌদি প্রবাসী আরিফের স্ত্রী কোহিনুরকে একই বাড়ীর আবদুল খালেকের ছেলে জহিরুল ইসলাম ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে মারত্মক আহত করে। আহত কোহিনুরকে প্রথমে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ও স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি ঘটলে শুক্রবার সকাল ১০টার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। চিকিৎসারত অবস্থায় সোমবার ভোর ৪টায় কোহিনুর সেখানে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন নিহত কোহিনুরের দেবর শরীফ। ঘাতক জহির ও নিহত কোহিনুরের স্বামী আরিফ সম্পর্কে চাচাতো-জেঠাতো ভাই।

এ ঘটনায় নিহত কোহিনুরের দেবর আহসান উল্যাহ বাদী হয়ে ১৯ এপ্রিল রাতে ঘাতক জহিরসহ ৫জনকে আসামী করে শাহরাস্তি থানায় মামলায় দায়ের করে। যার মামলা নং ১৮/১৯। মামলায় ওই দিন রাতেই পুলিশ ঘাতক জহিরের বাবা আবদুল খালেক, মা আমিরুন নেছা, ভাই নুর হোসেনকে আটক করে। এজহারভূক্ত আসামী ঘাতক জহির ও তার ভাই আবুল হোসেন পলাতক রয়েছে।

জানা যায়, ওই বাড়ির আবদুল খালেকের পুত্র জহিরুল ইসলাম ও সালামত উল্লার পুত্র আরিফুল ইসলাম পরস্পর চাচাত ভাই। আরিফ সৌদী প্রবাসী। তার স্ত্রী কোহিনুর বেগম। সম্পর্কে জহির কোহিনুরের ভাসুর। তাদের মধ্যে পূর্ব থেকে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। পারিবারিক শত্রুতার জের ধরেই জহির তার চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী কোহিনুরের ঘরের সিঁদ কেটে তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে আহত করে মারত্মক আহত করে। এ কোহিনুরের চিৎকারে তার মেয়ে মুক্তা এগিয়ে আসলে মুক্তাকেও কুপিয়ে আহত করে ঘাতক পালিয়ে যায়।

নিহত কোহিনুরের মেয়ে মুক্তা বলে, মায়ের চিৎকার শুনে আমি ঘুম থেকে জেগে দেখি জহির জেঠার হাতে বড় একটি ছুরি। ওই ছুরি দিয়ে মাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করছে। আমি দৌঁড়ে যাওয়ার সাথে সাথে আমাকেও তিনি ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। এতে আমিও গুরুতর আহত হই।

নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, জহির বরাবরই বখাটে। তার স্ত্রী লাকি আক্তার তাকে ধারদেনা করে দু’বার বিদেশে পাঠিয়েছিল। একবারও সে প্রবাসে থাকতে পারেনি। শেষ বার বিদেশ দেশে চলে আসলে জহিরের স্ত্রী লাকী তাকে তালাক দেয়।

তালাকের ১ বছর পর তালাককৃত লাকিকে আরিফের স্ত্রী কোহিনুর তার নিজ ভাই সালে আহম্মদের সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জহির কোহিনুরের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বসত ঘরের পিছন দিয়ে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে এঘটনাটি ঘটায়।

কোহিনুরের দেবর হাবীব বলেন, জহিরের স্ত্রী লাকির সাথে তালাক হওয়ার পর সে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যায়। মাঝেমধ্যে সে এলাকায় আসতো এবং ভাবীর সাথে খারাপ আচরনসহ হুমকি-ধামকি দিতো। ঘটনার রাতে ভাতিজা তারেক ও ভাতিজি মুক্তার ডাক চিৎকারে আমরা ঘুম থেকে উঠে আসি। এ সময় ঘাতক জহির পালিয়ে যায়। ঘরে ঢুকে ভাবীকে রক্তাক্ত অবস্থায় খাটে পড়ে থাকতে দেখি।

জহির আরো জানায়, মা ও মেয়েকে করে ঘরের আলমারিতে থাকা ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা একটি মোবাইলে নিয়ে যায় সে।

শাহরাস্তি থানার ওসি মো. শাহআলম (এলএলবি) জানান, আজ ভোরে কোহিনুর নিহত হয়েছে বলে নিহতের দেবর আমাকে মোবাইলে জানিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ওই রাতেই আমরা ৩জনকে আটক করেছি। ঘাতক জহির ও তার ভাই আবুল হোসেনকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads