নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বিবি খাদিজা হলের তিন শিক্ষার্থীকে গাঁজা সেবনকালে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার রাতে ওই আবাসিক হল থেকে আটক করা পর অভিযোগপত্র নিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, বিবি খাদিজা হলে সিঁড়ি রুমে গাঁজা সেবন করছিলেন ওই তিন শিক্ষার্থী। হলের অন্য শিক্ষার্থীর মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলে যায়। পরে মাদক সেবন করা অবস্থায় তাদের হাতেনাতে ধরা হয়। এরপর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিপার্টমেন্টের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের নাফিসা নোভেরা নাফসি, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদা দিপ্তী এবং বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের উম্মে রোকসানা ইতি।
অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে নাফসী ও দীপ্তি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মডেল ইউনাইটেড নেশন-এর গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন এবং ইতি ওই সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলে অবস্থানরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, হলের মধ্যে গাঁজা সেবন প্রায় সময়ই চলে আমরা অভিযোগ করলেও হল প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। গত রাতে যখন হলের সিঁড়িতে বসে মাদক সেবন করছিল তখন আমরা হাতেনাতে ধরে স্যারদের কল দিই। আমরা মাদকমুক্ত হল চাই।
হল সূত্রে জানা যায়, হলের ছাদে মাদক সেবনের অভিযোগ পেয়ে ছাদে যাওয়ার গেট বন্ধ করে দেয় হল প্রশাসন। এখনো সেটি বন্ধ আছে। ছাদ বন্ধ থাকার কারণে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা রোদে কাপড় শুকাতে পারেনা। এসব নিয়ে হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অনেকদিনের।
এদিকে অভিযুক্তদের মধ্যে নাফিসা নোভেরা নাফসি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাদক সেবনের বিষয়টি অস্বীকার করে গতরাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তবে সেই স্ট্যাটাসে ধূমপানের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন। সেখানে তিনি মানসিক চাপ কমানোর জন্য সিগারেট খান বলেও জানান।
এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আতিকুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর সেখানে প্রক্টরিয়াল বডি ও সহকারী প্রভোস্ট পাঠানো হয়েছে এবং আমাদের কাছে অভিযোগপত্র এসেছে। আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া আব্দুস সালাম হলে নিয়মিতই শিক্ষার্থীরা গাঁজা সেবন করে থাকে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোতে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রক্টর নেওয়াজ মুহাম্মদ বাহাদুর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে মাদকদ্রব্য সেবনের ব্যাপারে আমরা তথ্য পেয়েছি। আমাদের প্রত্যেক হলে কয়েকজন করে সহকারী প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা নিয়মিত রিপোর্ট জমা দিলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।