'দেশের একটি লোকও গৃহহীন থাকবে না' প্রধানমন্ত্রীর এই স্লোগানকে সফল করার লক্ষ্য চাঁদপুর জেলায় চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৬ হাজার ৯৩৯টি পরিবারকে মাথা গোজার ঠাঁই করে দেয়া হয়েছে। আশ্রয় পাওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে অধিকাংশ পরিবারই মেঘনার ভাঙনের শিকার এবং চরাঞ্চলের দরিদ্র পরিবার।
জেলার ৮ উপজেলায় অসহায়, দুঃস্থ, ভূমিহীন ও নদী ভাঙনে ছিন্নমূল এমন পরিবারগুলোকে আশ্রয় দেয়ার জন্য এখনো ৩২৩টি ঘর নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৯৭২টি পরিবার, গুচ্ছগ্রামের মাধ্যমে ১ হাজার ৬০৫টি পরিবার, আদর্শ গ্রামের মাধ্যমে ৪৫টি পরিবার এবং জমি আছে ঘর নাই এই প্রকল্পের আওতায় ২হাজার ৩শ’ ১৭টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের মেঘনাপাড়, লক্ষ্মীপুর আশ্রয়ন প্রকল্প ও ইব্রাহীমপুর ইউনিয়ন ও জেলার হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, কচুয়া উপজেলা ঘুরে দেখাগেছে সরকার আশ্রয়গ্রহনকারী পরিবারগুলোর নাগরিক সুযোগ সুবিধার লক্ষ্যে প্রতিটি গৃহে বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপন করে দিয়েছে। তাছাড়া তাদের জন্য পৃথক কমিউনিটি সেন্টার, কমিউনিটি বিদ্যালয়, আভ্যন্তর সংযোগ সড়ক, পানি ও জলের ব্যবস্তা, পুকুর খনন ও পয়নিস্কাশনের সু-ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
এছাড়া তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, গবাদিপশু পালন, কুটির শিল্প তৈরি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অনেক পরিবার সদস্যরা হাঁস-মুরগি, গবাদি পশু পালন, কুটির শিল্প তৈরী, জাল বুনন, নৌকা তৈরী, ক্ষুদ্র ব্যবসা ইত্যাদি করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। চাঁদপুর জেলায় আরো ৩২৬টি পরিবারকে আশ্রয় দেয়ার কার্যক্রম প্রায় সমাপ্তির পথে।
জমি আছে ঘর নাই এমন সুবিধাভোগী লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের অনিল সূত্রধর বলেন, আমার ঘর আগে ভাঙাছিল। ঝড় তুফান আসলে অন্যের ঘরে গিয়ে আশ্রয়ন নিতে হতো। এখন ঘরটি পেয়ে স্ত্রী ও ৩ কন্যা সন্তানকে নিয়ে সুখেই আছি।
আরেক সুবিধাভোগী সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের সাখুগ্রামের ভুঁইয়া বাড়ীর ইসমাইল ভুঁইয়া বলেন, আমার ঘরে বৃষ্টি আসলে পানি পড়তো। রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতাম। এখন বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে কাজ করতে পারি না।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, চাঁদপুর জেলার প্রত্যেকটি গৃহহীন পরিবারকে মাথা গোজার ঠাঁই দেয়ার লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আমাদের প্রত্যেক কর্মকর্তা সর্বদা তৎপর। এই পর্যন্ত আমরা প্রায় ৭ হাজার পরিবারকে ঘর তৈরী করে দিতে সক্ষম হয়েছি। কিছু ঘর তৈরীর কাজ চলছে। সরকারের এই চলমান প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।