• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
কবরস্থানের বুক চিরে রেললাইন স্থাপন

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

কবরস্থানের বুক চিরে রেললাইন স্থাপন

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৫ জানুয়ারি ২০২১

‘এখানে কবরস্থান, প্রস্রাব করা নিষেধ’ এরকম একটি সাইনবোর্ড দুটি বাঁশের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। চট্টগ্রাম-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথের আখাউড়া পৌর শহরের চন্দনসার মৌজার বাগানবাড়ির এলাকার রেললাইনের পাশে এই সাইনবোর্ডটি রয়েছে। তবে বাস্তবে এখানে নেই কোনো কবরস্থানের চিহ্ন। শুধু সাইনবোর্ড ঝুলে রয়েছে। প্রায় চার বছর আগে শত বছরের পুরনো কবরস্থানের বুক চিড়ে চলে গেছে আখাউড়া-লাকসাম ডবল রেললাইন। কিন্তু কবরস্থানের বিকল্প ব্যবস্থা না করায় পৌর শহরের আটটি গ্রামের মানুষ লাশ দাফন নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। প্রায় দুই বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোনো কূলকিনারা করতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, আখাউড়া পৌরশহরের চন্দনসার মৌজার বাগানবাড়ির কবরস্থানটি প্রায় শত বছর ধরে চন্দনসার, শোভার পুকুরপাড়, শান্তিনগর, বড়বাজার, সাহাপাড়া, লালবাজার ও মুন্সিবাড়ির লোকজনের লাশ দাফন করে আসছিল। বাগানবাড়ির কবরস্থানটি চট্টগ্রাম-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রামের রেললাইনের পাশে হওয়ায় ২০১৭ সালে আখাউড়া-লাকসাম ডবল রেললাইনের প্রকল্পের অধীনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে ওই কবরস্থানে কোনো লাশ দাফন করতে দেয়া হয়নি। বর্তমানে কবরস্থানের কোনো চিহ্ন নেই।

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ২০১৭-এর দ্বিতীয় অধ্যায়ে অধিগ্রহণের ১৩ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান এবং শ্মশান হিসেবে ব্যবহূত কোনো ভূমি অধিগ্রহণ করা যাইবে না। তবে জনস্বার্থে একান্ত অপরিহার্য হলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রত্যাশিত ব্যক্তি বা সংস্থার অর্থে স্থানান্তর ও পুনর্নির্মাণ/বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করে কেবল ওই সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা যাইবে।’ এ আইনের প্রেক্ষাপটে বিকল্প কবরস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০১৭ সালে প্রকল্প পরিচালক বরাবরে আবেদন করা হয়। তারপর থেকে বার বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দারস্থ হয়েও কোনো সুরাহা না হওয়ায় পুনরায় গত ২৫ আগস্ট একইভাবে প্রকল্প পরিচালক বরাবরে আরেকটি আবেদন করা হয়।

চন্দসার কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আখাউড়া পৌরসভার ৭নং ওর্য়াড কাউন্সিলর আতিকুর রহমান বলেন, রেললাইনের পাশে অবস্থিত কবরস্থানে আট গ্রামের কোনো লোক মারা গেলে- এখানে কবর দেয়া হতো। এই কবরস্থানটিতে ব্রিটিশ আমল হতে লাশ দাফন করে আসছিল। আখাউড়া-লাকসাম ডবল রেললাইনের প্রকল্পে কবরস্থানটি পড়ার কারণে এখানকার মানুষজন বিপাকে পড়ছে। যখন কবরস্থানটি ভাঙা হয় তখন আমরা বাধা দিয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছিল ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। কিন্তু এখনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে কোনো লোক মারা গেলে ট্রাকে করে ৪ কিমি দূরে খড়মপুর মাজারের কবরস্থানে লাশ দাফন করতে হচ্ছে।

আখাউড়া-লাকসাম ডবল রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক রমজান আলী বলেন, ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওখানে আটকে রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads