• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
স্বস্তির আবহে বাংলাদেশ

তাইজুলের আরো একটি উইকেট। অভিনন্দন সতীর্থদের

ছবি : ক্রিকইনফো

ক্রিকেট

স্বস্তির আবহে বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৪ নভেম্বর ২০১৮

দিনের শুরুটা বেশ ভালো। মাঝের সময়টাতে বেড়েছে শঙ্কা। শেষটা আবার প্রত্যাশিত রঙিন। পড়ন্ত বিকেলে স্পিন ভেলকিতেই শেষ পর্যন্ত ৩০৪ রানে গুটিয়ে দেওয়া গেছে জিম্বাবুয়েকে। ফলোঅনে পড়া সফরকারীরা রীতিমতো অস্বস্তিতে। অন্যদিকে ২১৮ রানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তির আবহ। সামনে উঁকি দিচ্ছে দারুণ জয়ের সম্ভাবনা।

দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝি সময়েই হাঁসফাঁস শুরু জিম্বাবুয়ের। ১৩১ রানে নেই ৫ উইকেট। তবে সেখান থেকেই দারুণ প্রতিরোধ ষষ্ঠ উইকেটে টেইলর ও মুরের। ১৩৯ রানের জুটি কাঁপনই ধরিয়ে দিয়েছিল মাহমুদউল্লাহদের। কিন্তু আরিফুল হকের ছোঁয়ায় বদলে যায় চিত্র। ফেরালেন মুরকে। পেলেন টেস্টে প্রথম উইকেট। এরপর মিরাজের বলে টেইলরের দারুণ ক্যাচ চিতার ক্ষিপ্রতায় তালুবন্দি তাইজুলের। কার্যত তখনই শেষ জিম্বাবুয়ের ইনিংস (২৯০ রান)। বাকি দুই উইকেটে জিম্বাবুয়ে যেতে পেরেছে ৩০৪ রানে। তাও শেষের দিকে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ক্যাচ ফসকেছে দুইবার। ইনজুরির কারণে ব্যাটিং করতে পারেননি জিম্বাবুয়ের চাতারা। ৯ উইকেট যাওয়ার পরই অফিসিয়ালি অল আউট। ১৮ রানের জন্য ফলোঅন এড়াতে ব্যর্থ মাসাকাদজারা। টানা তিন ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে লাইমলাইটে তাইজুল ইসলাম। শেষ বিকেলের সাফল্যে পাদপ্রদীপের আলোয় তিন উইকেট নেওয়া আরেক স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ৭ উইকেটে ৫২২ রান, ডিক্লে.। দ্বিতীয় দিনের ১ উইকেটে ২৫ রান নিয়ে গতকাল খেলতে নামা জিম্বাবুয়ে অস্বস্তিতে ছিল শুরু থেকেই। ব্রায়ান চারি ও নাইটওয়াচম্যান ডোনাল্ড তিরিপানো প্রথম ১০ ওভার কাটিয়ে দেন উইকেট না হারিয়ে। ১৯ রানে সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে পয়েন্টে ব্রায়ান চারির ক্যাচ ছাড়েন তাইজুল। শেষ পর্যন্ত দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন তাইজুলই। তবে চারি নন, ফেরান তিনি তিরিপানোকে (৮)। লাঞ্চের একটু আগে চারিকে থামান মিরাজ। বাংলাদেশের দারুণ এক রিভিউয়ে চারি ফেরেন ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রানে।

শন উইলিয়ামসের সঙ্গে জমেনি টেইলরের রসায়ন। লাঞ্চের পর তাইজুলের স্পিন ভেল্কি। বলের লাইন বুঝতে না পেরে বোল্ড শন উইলিয়ামস (১১) ও সিকান্দার রাজা (০)। ১৩১ রানে নেই তখন ৫ উইকেট। চাপে জিম্বাবুয়ে, উজ্জীবিত টাইগার শিবির। কিন্তু এর পর থেকেই ব্রেন্ডন টেইলর ও পিটার মুর জুটি বাংলাদেশ শিবিরে বাড়াতে থাকে হতাশা। বদলি ফিল্ডার নাজমুল ইসলাম অপু ৭৫ রানে জীবন দেন মুরকে। তাইজুলের বলে টেইলরকে ৯৪ রানে একই সঙ্গে ক্যাচ ও স্টাম্পিং করার সুযোগ হাতছাড়া করেন মুশফিক। তার খেসারত দিতে হয়েছে রানে। সব বোলার যখন ব্যর্থ, তখন আনা হয় আরিফুল হককে। প্রথম ওভারেই ভেতরে ঢোকা দারুণ ডেলিভারিতে তিনি এলবিডব্লিউ করে দেন মুরকে। টেস্টে নিজের আগের সেরা ৭৯ ছাড়িয়ে মুর সাজঘরে ফেরেন ৮৩ রানে।

তবে ঠিকই সেঞ্চুরি করেন টেইলর। ২৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি, দেশের বাইরে প্রথম। টেস্টে বাংলাদেশ তার প্রিয় প্রতিপক্ষ নিঃসন্দেহে। কারণ পাঁচ সেঞ্চুরির চারটিই এই দেশের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত টেইলরকে বিদায় করেন মিরাজ। সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। আর তা অবিশ্বাস্যভাবে লাফিয়ে লুফে নেন তাইজুল। ১৯৪ বলে ১১০ রানে ফেরেন টেইলর। যার মধ্যে ছিল ১০টি চারের মার। জিম্বাবুয়ের দলীয় রান তখন ২৯০। বাকি পথটা মসৃণ হয়নি চাকাভা (১০), মাভুটা (০) ও জারভিসের (৯*)।

টানা তিন ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করে তাইজুল ভাগ বসিয়েছেন এনামুল হক জুনিয়র ও সাকিব আল হাসানের রেকর্ডে। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলে নতুন কীর্তিই গড়বেন তিনি। মিরাজ পান তিন উইকেট। আরিফুল একটি। হতাশা বাড়িয়েছেন দুই পেসার মোস্তাফিজ ও খালেদ উইকেটশূন্য থেকে।

মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে সুবিধাজনক স্থানে বাংলাদেশ। তবে ব্রেন্ডন টেইলর মনে করছেন, ‘এখনো ম্যাচ শেষ হয়ে যায়নি। তবে ন্যূনতম ড্র করতে হলেও ঘটাতে হবে মিরাকল।’ বাংলাদেশের অবস্থান প্রসঙ্গে তাইজুলের অভিব্যক্তি, ‘আমার কাছে মনে হয় আমরা এখন ভালো অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি। আমরা যাই করি না কেন (ফলোঅন করানো কিংবা এড়িয়ে যাওয়া) ভালো করলে ইতিবাচক ফল আসবে।’

জিম্বাবুয়ে অল আউটের সঙ্গে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ায় একটি বিষয় ছিল ধন্দে পড়ার মতো। আর সেটা হলো, বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করাবে, নাকি নিজেরাই ব্যাটিং করবে? যত দূর জানা গেছে, আজ সকালে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads